Risingbd:
2025-11-02@06:24:35 GMT

পরিবারের দাবি ‘এটি হত্যা’

Published: 1st, September 2025 GMT

পরিবারের দাবি ‘এটি হত্যা’

খুলনায় সিনিয়র সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বজনরা। তাদের দাবি, এটি হত্যাকাণ্ড। নানা কারণে তিনি চাপে থাকলেও আত্মহত্যার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। 

বুলুর ছোট ভাই আনিছুজ্জামান দুলু বলেন, ‘‘ভাইয়ের মৃত্যু আসলে অস্বাভাবিক। হঠাৎ এভাবে আত্মহত্যা করতে পারেন না। মানসিক চাপে থাকলেও আত্মহত্যার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে হবে। আমরা এই ঘটনার ন্যায়বিচার চাই।’’  

আরো পড়ুন:

সাঁথিয়ায় পুত্রবধূর বঁটির কোপে প্রাণ গেল শ্বশুরের

রাজশাহীতে ফাঁকা বাড়িতে বৃদ্ধাকে গলাকেটে হত্যা

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর)  বিকালে খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। পরে বিকাল ৩টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় খুলনা প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক এনামুল হক বলেন, ‘বুলুর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করার দাবি জানাচ্ছি। তার মৃত্যু নিয়ে আমাদেরও প্রশ্ন আছে।’’ 

রবিবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে খুলনার রূপসা নদীর ওপর নির্মিত খান জাহান আলী সেতুর ২ নম্বর সেতুর পিলারের বেসমেন্ট থেকে সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বুলু সংবাদ প্রতিদিনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ও খুলনা প্রেস ক্লাব এবং খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) সদস্য ছিলেন। 

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর বিকালে মরদেহ খুলনা প্রেস ক্লাবে আনা হয়। সেখানে খুলনা প্রেস ক্লাব, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন, খুলনা প্রেস ক্লাব মাল্টিপারপাস কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে মরহুমের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে  নগরের গোয়ালখালী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিন ভাইয়ের মধ্যে বুলু বড় ছিলেন। মেজো ভাই সড়ক দুর্ঘটনায় কয়েক বছর আগে মারা যান। ছোট ভাই আনিছুজ্জামান দুলু ঢাকায় ব্যবসা করেন। নগরের শিববাড়ি মোড় সংলগ্ন ইব্রাহিম মিয়া রোডে তাদের পৈতৃক বাড়ি থাকলেও সেটি চার বছর আগে বিক্রি করা হয়। এরপর বুলু সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। প্রায় চার মাস আগে তার স্ত্রী নিখোঁজ হন। ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাগমারা এলাকায় নতুন বাসায় ওঠার কথা ছিল তার।

জানাজায় উপস্থিত বুলুর শ্যালক মাহবুব জামান বলেন, ‘‘আমার বোন গত ১১ মে থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এ নিয়ে সোনাডাঙ্গা থানায় জিডি করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বোনের সন্ধান পাইনি। এ অবস্থায় ভগ্নিপতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। আসলে তিনি আত্মহত্যা করেছেন, নাকি হত্যা করা হয়েছে; তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ আছে। বিষয়টি তদন্ত করে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দাবি জানাচ্ছি আমরা।’’ 

সাংবাদিক বুলুর ভাই আনিছুজ্জামান দুলু বলেন, ‘‘ভাই ট্রেনের ধাক্কায় গত মাসে আহত হয়ে কিছু দিন হাসপাতালে ছিলেন। তখন আমি তাকে ঢাকায় আসতে বলেছিলাম। আসার কথা বললেও আর আসেনি। তেমন কোনো বিষয় আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতেন না। গত শনিবার রাতে শেষবার কথা হয়েছে। আমার কাছে এটা হত্যা মনে হচ্ছে।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘তার চাকরিটা মনে হয় ঠিকমতো ছিল না। স্ত্রী নিখোঁজ হওয়ার পর মন খারাপ থাকতো। তবে কারও সঙ্গে শত্রুতা বা অন্য কোনো বিষয়ে আমাদের জানা নেই। শুনেছি সেতুর ওপর কারো সঙ্গে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। এরপর তাকে ঝাঁপ দিতে দেখেছেন সেখানকার লোকজন।’’ 

বুলুর শ্যালকের স্ত্রী নুরনাহার পারভীন বলেন, ‘‘গত শুক্রবার (২৯ আগস্ট) ভাড়া করা নতুন বাসায় মালপত্র তুলেছিলেন তিনি। দুপুরে আমাদের বাসায় খেয়েছেন। এরপর যশোরে আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। শনিবার বিকালেও আমাদের বাসায় এসে খাওয়া-দাওয়া করে যান। রবিবার সকালে নাশতা করে বেরিয়ে যান। এ সময় এক বোতল পানি ও একটা ক্যাপ চেয়ে নেন। দুপুরে ফোন করলে সেটি বন্ধ পাই। রাতে মৃত্যুর খবর শুনি।’’ 

নুরনাহার পারভীন বলেন, ‘‘আমার ননদ (বুলুর স্ত্রী) নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে অশান্তিতে ছিলেন। কান্নাকাটি করতেন, খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো করতেন না। এজন্য আমরা তাকে আমাদের কাছে থাকতে বলেছিলাম। তবে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে বিশ্বাস করি না। ঘটনার তদন্ত করা দরকার।’’ 

কেএমপি সদর থানার নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মহিদুল হক বলেন, ‘‘রবিবার (৩১ আগস্ট) রাতে খবর পেয়ে সেতুর ২ নম্বর পিলারের বেসমেন্টের ওপর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরতহালে দেখা গেছে মুখ থেঁতলানো, দুই হাত ও বাঁ পা ভাঙা। পরে মরদেহটি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। সেখানের সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর রহস্য জানা যাবে।’’  
 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য মরদ হ আম দ র মরদ হ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। অভিনয় গুণে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে দোলা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে যশ-খ্যাতি যেমন পেয়েছেন, তেমনি আয় করেছেন মোটা অঙ্কের অর্থও। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দেবেন এই তারকা।  

অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক নায়িকার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান। তাদের মধ্যে অন্যতম জুহি চাওলা। ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’, ‘রামজানে’, ‘ডর’, ‘ইয়েস বস’, ‘ডুপ্লিকেট’সহ আরো কিছু জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই জুটি। একসঙ্গে অভিনয় ছাড়াও, এই দুই তারকা বাস্তব জীবনে খুবই ভালো বন্ধু। কেবল তাই নয়, ব্যবসায়ীক অংশীদারও তারা। 

আরো পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?

বন্ধু শাহরুখের জন্মদিন উপলক্ষে হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন জুহি। এ আলাপচারিতায় স্মৃতিচারণ তো করেছেনই, পাশাপাশি শাহরুখের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।  

শাহরুখের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “আমি যখন প্রথম ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হই, তখন সহপ্রযোজক বিবেক ভাসওয়ানি আমাকে বলেছিলেন, ‘আমার নায়ক দেখতে আমির খানের মতো।’ আমি শাহরুখকে দেখে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম। দেখি, শাহরুখের চুল চোখের ওপরে নেমে এসেছে। আর সে একেবারেই আমার কল্পনার সেই ‘চকলেট বয়’ নয়! যখন কাজ শুরু করি, তখন বুঝতে পারি, সে একদম নতুন অভিনেতাদের মতো নয়, সে পরিশ্রমী, দিনে তিন শিফটে কাজ করছে।” 

একটি ঘটনা বর্ণনা করে জুহি চাওলা বলেন, “আমার মনে আছে, ‘ইয়েস বস’ সিনেমার শুটিংয়ের সময়, কোনো দৃশ্য ঠিকমতো লেখা না থাকলে পরিচালক আজিজজি (আজিজ মির্জা) বলতেন, ‘শাহরুখ আসুক, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ রোমান্স আর মজার মিশেলে থাকা দৃশ্যগুলো আমাদের সবচেয়ে ভালো ছিল। সেই সূত্রেই আমরা অনেকগুলো সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছি।” 

শাহরুখের পাশে অবস্থান করলে সাবধান থাকার কথার কথা বলেছেন জুহি। হাসতে হাসতে এ অভিনেত্রী বলেন, “শাহরুখের আশেপাশে থাকলে সাবধানে থাকবেন। কারণ সে কথা দিয়ে আপনাকে যেকোনো কিছু করাতে রাজি করিয়ে ফেলতে পারে। ওর কথাবলার ভঙ্গি এমন যে, আপনি ‘না’ বলতেই পারবে না। আমি ‘ডুপ্লিকেট’ সিনেমা করতে চাইছিলাম না, কারণ সেখানে আমার তেমন কিছু করার ছিল না। আমরা তখন আরেকটি সিনেমার শুটিং করছিলাম, আর শাহরুখ আমাকে সিঁড়িতে বসিয়ে দুই ঘণ্টা বোঝায় এবং আমি সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধ হই। সে আপনাকে যেকোনো কিছু করতে রাজি করাতে পারে, তাই সাবধানে থাকবেন।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “অফস্ক্রিনে আমাদের সম্পর্কেও উত্থান-পতন রয়েছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কোনো না কোনোভাবে আমাদের যুক্ত রেখেছেন, এমনকি আইপিএলের মাধ্যমেও। আমাদের বন্ধন কোনো পরিকল্পনার ফল নয়, এটা একেবারেই ভাগ্যের ব্যাপার।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) সহ-মালিক জুহি ও তার স্বামী জয় মেহতা। এই দলের পেছনে জুহি বিনিয়োগ করেছেন ৬২৯ কোটি রুপি। বর্তমানে এই দলটির মূল্য আছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি রুপি। শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘রেড চিলিস গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠা করেন জুহি। 

১৯৬৫ সালে ২ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শাহরুখ খান। তার শৈশবের প্রথম পাঁচ বছর কেটেছে ম্যাঙ্গালুরুতে। শাহরুখের দাদা ইফতিখার আহমেদ স্থানীয় পোর্টের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। যার কারণে সেখানে বসবাস করেন তারা। শাহরুখের বাবার নাম তাজ মোহাম্মদ খান, মা লতিফ ফাতিমা। 

দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন শাহরুখ খান। তারপর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াতে গণযোগাযোগ বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। কিন্তু অভিনয় জীবন শুরু করার কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি। তবে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরুর দিকে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-তে ভর্তি হন এই শিল্পী। 

১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ। 

একই বছর ‘চমৎকার’, ‘দিল আসনা হে’ ও ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় অভিনয় করেন শাহরুখ। তার পরের বছর ‘ডর’ ও ‘বাজিগর’ সিনেমায় অভিনয় করে নিজের জাত চেনান শাহরুখ। তার অভিনয়ের জাদুতে মুগ্ধ হন কোটি ভক্ত; পৌঁছে যান সাফল্যের চূড়ায়। তার অভিনয়ের খ্যাতি আরো বাড়তে থাকে যশরাজ ফিল্মসের সিনেমায় ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করে। একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করেন শাহরুখ। যদিও তার এই সফলতার জার্নির গল্প মোটেও সহজ ছিল। আর সে গল্প সবারই জানা। 

অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন শাহরুখ খান। তার মধ্যে মোট পনেরোবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। এর মধ্যে আটবার সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। হিন্দি সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ সালে তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন মোট পাঁচবার। তবে শাহরুখ খানের ৩৩ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে অধরা ছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। চলতি বছর ‘জওয়ান’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ