বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা দুইদিনের হরতাল শুরু হয়েছে। 

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে হরতাল সফল করতে জেলার প্রধান সড়কগুলোতে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা। তারা গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেন। দূরপাল্লার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রুটেও সব ধরনের পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল চলবে।

আরো পড়ুন:

বাগেরহাটে বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতালের ডাক

বাগেরহাট থেকে ১৬ রুটে বাস চলাচল বন্ধ, ডিসি অফিসের সামনে বিক্ষোভ

বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম.

এ সালাম বলেন, “বাগেরহাটবাসীর ন্যায্য অধিকার হরণ করেছে নির্বাচন কমিশন। দীর্ঘদিন ধরে এ জেলায় চারটি সংসদীয় আসন ছিল। হঠাৎ করে আসন কমিয়ে তিনটি করা হয়েছে। আমরা এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাজপথে আছি। আজ থেকে দুই দিন হরতাল কর্মসূচি পালন করব। এরপরও দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে।”

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, “জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশ মাঠে রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।” 

গতকাল মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কের দশানী ট্রাফিক মোড় থেকে মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান দিপু, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম, নায়েবে আমীর আব্দুল ওয়াদুদ, সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ ইউনুস, বিএনপি নেতা সৈয়দ নাসির উদ্দিন মালেক প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ‘‘বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে নির্বাচন কমিশন জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করেছে। এতে জেলাবাসী বঞ্চিত হবে।’’ তারা এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আসন পুনর্বহালের দাবি জানান। একইসঙ্গে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর)  ও বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) জেলায় সর্বাত্মক হরতাল পালনের ঘোষণা দেন।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয় নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকে চার আসন বহালের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে হরতাল কর্মসূচি পালিত হয়। 

গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন সীমানা পরিবর্তন করে বাগেরহাটের তিনটি আসন বহাল রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। গেজেট অনুযায়ী, বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)। 

১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাট জেলায় চারটি সংসদীয় আসন ছিল। তখনকার সীমানা ছিল, বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)। 

ঢাকা/শহিদুল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হরত ল স প ট ম বর ব গ রহ ট র হরত ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু

ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা আগে যে কাজ করতেন, তাদেরকে সে কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগের ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান।

ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলে আমীর খসরু বলেন, “জোর করে আরেকটি দলের অথবা দুটি দলের বা তিনটি দলের মতামত বাকি দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল, তারাও একটি রাজনৈতিক দল। এখানে ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে তাদের দাবি আমাদের ওপর চাপাতে চাচ্ছে, জনগণের ওপর চাপাতে চাচ্ছে। অথচ, ঐকমত্য কমিশন করার উদ্দেশ্য ছিল, ঐকমত্য যতটুকু হবে, সেটা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ঐকমত্য হয়েছে, সই হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে এখন নতুন নতুন দাবি নিয়ে আসছে। তাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে এটা হবে, সেটা হবে...। আবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ঐকমত্যের কিছু লোকজন। তাদেরও আবার মতামত আছে। রাজনীতিবিদদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদেরটা চাপাতে চাচ্ছে। আবার ঐকমত্য কমিশনেরও একটা নিজস্ব মতামত আছে। ঐকমত্য কমিশনের মতামতের জন্য তো তাদেরকে সেখানে রাখা হয়নি। এখন তাদেরও মতামত আছে এবং ওটা আমাদেরকে মানতে হবে।”

দেশের মানুষকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, যাদের দাবি রাজনীতিবিদদের ওপর চাপাতে চান, জনগণের ওপর চাপাতে চান; তাদের প্রতি আমার অনুরোধ- আপনারা যে যেই কাজ করতেন আগে, ওই জায়গায় ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দেন। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা স্ব স্ব কাজে ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দয়া করে তাদের ওপরেই ছেড়ে দেন। আপনাদেরকে এই দায়িত্ব কেউ দেয় নাই।”

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে তাদের সিদ্ধান্ত দেবে। যেসব দল তাদের দাবি-দাওয়া চায়, তাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে তো। জনগণের মতামত নিতে হবে তো। জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে তো। মতামত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।”

নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে, অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, “ব্যবসায়ীরা আমাকে প্রতিনিয়ত বলছেন, ফেব্রুয়ারি নয়; পারলে এখনই নির্বাচন করে আমাদেরকে একটু মুক্ত করেন। আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমরা কোনো বিনিয়োগ করতে পারছি না। বিদেশিরা কোনো বিনিয়োগ করছে না। সুতরাং, এই নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায় তাদের স্বার্থের জন্য, এখানে ব্যবসায়ীদেরকে সোচ্চার হতে হবে। দ্রুতই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।”

রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম এর আয়োজন করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান।

ঢাকা/কেয়া/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
  • সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের
  • সংস্কার ইস্যুতে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপি অবস্থান পরিবর্তন করে
  • বিএনপি-জামায়াত দেশকে অন্য এক সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী