শেষ পর্যন্ত নাটকীয়তা দিয়েই যেন লিভারপুল জিততে অভ্যস্ত। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে মোহাম্মদ সালাহর নিখুঁত পেনাল্টি আবারও দলকে রক্ষা করল। রোববার রাতে বার্নলির মাঠ টার্ফ মুরে কঠিন লড়াই শেষে ১-০ গোলের জয় তুলে নিয়ে মৌসুমে টানা চতুর্থ ম্যাচে পূর্ণ তিন পয়েন্ট পেল আর্নে স্লটের শিষ্যরা।

এর আগে তাদের তিনটি জয়ই এসেছিল ৮৩ মিনিটের পরের গোল থেকে। এবারও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে সমর্থকদের। প্রায় প্রাপ্য এক পয়েন্ট হাতছাড়া করল লড়াকু বার্নলি।

আরো পড়ুন:

৭৫০ কোটিতে লিভারপুল ছেড়ে আল-হিলালে নুনেজ

ট্রেন্ট আলেকজান্ডারকে ফ্রি পাচ্ছে না রিয়াল! 

নতুন মৌসুমে প্রথমবারের মতো পয়েন্ট হারানোর শঙ্কায় ছিল লিভারপুল। এমন ম্যাচে হয়তো দরকার ছিল তাদের রেকর্ড সাইনিং আলেকজান্ডার ইসাকের উপস্থিতি। নিউক্যাসল থেকে ১২৫ মিলিয়ন পাউন্ডে আসা সুইডিশ ফরোয়ার্ডকে দেখা যায়নি স্কোয়াডে, প্রস্তুতির অভাব আর ক্লাবের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে। তবে স্লট জানিয়েছেন, চ্যাম্পিয়নস লিগে অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে তাকে পাওয়া যাবে।

বার্নলির কৌশল ছিল একেবারেই স্পষ্ট, দেয়াল তুলে রক্ষণ সামলানো। ৫-৪-১ ফরমেশনে শুরু থেকেই প্রতিপক্ষকে আটকে রাখার চেষ্টা। এমনকি লেসলি উগোচুকুর লাল কার্ড দেখেও তারা ভেঙে পড়েনি। কিন্তু ৯৫ মিনিটে জেরেমি ফ্রিমপংয়ের ক্রসে হ্যানিবাল মেজব্রির হাতে বল লাগলে রেফারি পেনাল্টি দেন।

সালাহ আগের দুটি পেনাল্টি মিস করেছিলেন। তবে এবার শান্তভাবে জালে পাঠান বল। এর সঙ্গে তিনি প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে ১৮৮ গোল করে অ্যান্ডি কোলকে পেছনে ফেলে উঠলেন চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে। একই সঙ্গে লিভারপুলের হয়ে সর্বোচ্চ লিগ পেনাল্টি গোলের মালিকও হলেন। ৩৫ গোল নিয়ে ছাড়িয়ে গেলেন কিংবদন্তি বিলি লিডেলকে।

পুরো ম্যাচে লিভারপুলের দাপট ছিল চোখে পড়ার মতো। ২৭টি শট থেকে মাত্র চারটি লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল তারা। কিন্তু তবুও বার্নলির রক্ষণ ভাঙতে গিয়ে ঘাম ঝরেছে। প্রথমার্ধে ইব্রাহিমা কোনাতে কাছ থেকে হেড মিস করেন, হুগো একিতিকে গোলমুখে শট নিতে ব্যর্থ হন। অ্যান্ডি রবার্টসনের দূরপাল্লার শটই ছিল বিরতির আগে একমাত্র অন টার্গেট প্রচেষ্টা।

দ্বিতীয়ার্ধে আরও চাপে পড়ে বার্নলি। আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন, কনর ব্রাডলি নামলে দোমিনিক সোবোস্লাই আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। তিনিই বার্নলি গোলরক্ষক মার্টিন দুব্রাভকাকে প্রথম কঠিন সেভে বাধ্য করেন।

রায়ান গ্র্যাভেনবার্চ ও ফ্লোরিয়ান ভির্টজ সুযোগ নষ্ট করেন। পরে রবার্টসন ও ফেদেরিকো কিয়েসাও হেডারে ব্যর্থ হন। ফ্রিমপংও কাছ থেকে গোল মিস করেন। তবে শেষমেশ তিনিই এনে দিলেন ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।

অবশেষে সালাহর নির্ভুল শটে টানা চতুর্থ জয় নিশ্চিত হলো লিভারপুলের। বার্নলির কঠিন প্রতিরোধ ভেঙে লিভারপুল প্রিমিয়ার লিগে একমাত্র শতভাগ রেকর্ড ধরে রাখল। শীর্ষে তাদের পয়েন্ট ব্যবধানও বাড়ল। আর্সেনালের থেকে তিন পয়েন্ট এগিয়ে গেল স্লটের দল।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

আরো পড়ুন:

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়

এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।

তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।

পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।

এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।

আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।

এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ