বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতৃত্বকে কুক্ষিগত না করে সারাদেশের যোগ্য তরুণদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক সোলায়মান খান সাগর।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ট্যাগ করে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে এ মন্তব্য করেছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

এআই এর সঠিক ব্যবহার গবেষণাকে সমৃদ্ধ করবে: জবি উপাচার্য

অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ নিয়ে বিতর্ক কাম্য নয়: জবি শিক্ষক সমিতি

পোস্টে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শুধু একটি ছাত্রসংগঠন নয়, এটি একটি আবেগের নাম। কৈশোরের কত শত লালায়িত স্বপ্নের বুনন, যৌবনের সকল স্বাদ আহ্লাদকে ম্লান করে দেওয়া যায় এই সংগঠনটির আবেগে মত্ত হয়ে। প্রাপ্তবয়স্ক একটি ছেলে তার বৃদ্ধ পিতাকে একটু বিশ্রাম দেওয়ার পরিবর্তে তার দুশ্চিন্তা, উদ্বিন্নতা বাড়িয়ে দেয় সেই ছাত্রদলের কর্মী ছেলেটি। নিজের সম্ভাবনাময়ী ক্যারিয়ারকে বিসর্জন দিয়ে একটি ছেলে ছাত্রদলের আদর্শকে আঁকড়ে ধরে।”

তিনি আরো বলেন, “ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে সারাদেশে লক্ষাধিক নেতাকর্মী সক্রিয়ভাবে দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করেছেন। এমন একটি সংগঠন সারাদেশে যার এত বিস্তৃতি রয়েছে, প্লিজ এমন একটি সংগঠনকে কুক্ষিগত করবেন না। সংগঠনের নেতৃত্বকে কুক্ষিগত করার অর্থই সংগঠনকেও কুক্ষিগত করা। নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলি যার মধ্যে রয়েছে, যার ডেডিকেশন রয়েছে অনেক বেশি, যার যেকোনো পরিস্থিতি সামলানোর মত বুদ্ধিমত্তা রয়েছে, সাধারণ যাকে ধারণ করে- এগুলোই হোক নেতৃত্ব বাছাইয়ের মাপকাঠি। যোগ্যতাকে প্রাতিষ্ঠানিক মাপকাঠিতে দেখবেন না, যোগ্যতার মাপকাঠি হোক কেবল এবং কেবল যোগ্যতা।”

বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি সমালোচনা রয়েছে—ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রায়ই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রিক। এ নিয়ে তিনি পোস্টে বলেন, “হ্যাঁ, নির্দিষ্ট কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মূল নেতৃত্ব আনা হোক, আমি সেটির পক্ষেও না।যোগ্যতার বিচারে যিনি এগিয়ে থাকবেন, তিনি যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের শিক্ষার্থী হতে পারেন। আমার অবশ্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান রয়েছে। তার মানে অন্য কেউ ইতিহাসের অংশ হতে পারবেন না, এটি একটি উচ্চমার্গীয় বৈষম্য।”

“আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি, সারাদেশের অন্যান্য যেসকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ রয়েছে, নেতৃত্বের এই বিকাশের ক্ষেত্রে তাদের যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করারই সুযোগ নেই, তখন বর্তমান প্রজন্মের অসংখ্য তরুণ মেধাবী নেতৃত্বের অধিকারী অনেক শিক্ষার্থীরই ছাত্র রাজনীতি বিমুখতা বাড়াবে। একজন তরুণ শিক্ষার্থী যখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে, তার মধ্যে এই রাজনীতি বিমুখতা তৈরি হবে। মোদ্দাকথা, ছেলেটি তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করার আগে থেকেই যখন যে এই তত্ত্বটা বুঝে যাবে যে, দলের জন্য যাই করুক বা নিজেকে যতই যোগ্য করে তুলুক ছাত্রদলের শীর্ষপদে কখনোই আসীন হতে পারবে না, তখন এই ছাত্র রাজনীতিতে সেই শিক্ষার্থীটি নিরুৎসাহিত হবে। সুতরাং এভাবে ছাত্রদল একটি বড় অংশকে হারাবে হয়তো তারা ভিন্ন সংগঠনের প্রতিও আনুগত্য হবে,” -যুক্ত করেন সাগর।

শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলীয় হাইকমান্ডের উদ্দেশে আকুল আবেদন জানিয়ে সাগর বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিকেন্দ্রীকরণ করে একটি শক্তিশালী ছাত্রদল গড়ার লক্ষ্যে দলের হাইকমান্ডের কাছে আমাদের আকুল আবেদন। আপনারা দয়া করে ছাত্রদলকে আরো বেশি সুসংগঠিত করুন, আরো বেশি শক্তিশালী করুন। বর্তমান ছাত্রসমাজের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে এমন বুদ্ধিদীপ্ত সংগঠককে খুঁজে বের করুন। নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গন্ডিতে ছাত্রদলের ভবিষ্যত ঠেলে দিবেন না।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র ক ক ষ গত র র জন ত য গ যত স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ