স্যান মামেস থেকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর দূরত্ব খুব বেশি নয়। বিমানে গেলে সময় লাগে এক ঘণ্টার মতো আর গাড়িতে গেলে সময়টা চার ঘণ্টার কিছু বেশি। এই দুই স্বল্প দূরত্বের মাঠে আজ রাতে চোখ সবার। চ্যাম্পিয়নস লিগে নতুন মৌসুমে প্রথম রাতে আজ আলাদা দুটি ম্যাচে মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ ও আর্সেনাল। রিয়াল স্বাগতিক হয়ে খেলবে মার্শেইয়ের বিপক্ষে আর আর্সেনাল আতিথ্য নেবে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের মাঠে। মাঠের দূরত্ব স্বল্প হলেও দুই দলের অর্জনে ফারাকটা আসমান আর জমিন। সেটা এতটাই বেশি যে আর্সেনাল–সমর্থকেরা হয়তো বিব্রতই বোধ করবেন!

রিয়াল যে চ্যাম্পিয়নস লিগের ‘রাজা’, সেটা নতুন কিছু নয়। এমনকি এ খেতাব আরও অনেক বছর তাদের কাছ থেকে কেউ নিতে পারবে না, তা–ও নিশ্চিত। রিয়ালের ১৫ শিরোপা জয়ের পর দ্বিতীয় এসি মিলানের শিরোপাসংখ্যা যখন ৭, তখন রিয়ালের রাজার খেতাব নিয়ে অন্যদের ভাবনাটা আদার বেপারির জাহাজের খবর নেওয়ার মতোই।

চ্যাম্পিয়নস লিগে বিষয়টা আসলে এমন যে রসিকতা করে বলতে পারেন, এই টুর্নামেন্ট সাধারণত রিয়ালই জেতে, মাঝেমধ্যে ক্লান্ত হয়ে গেলে অন্যরা জেতে! এসি মিলানের পর ৬ শিরোপা নিয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয় লিভারপুল আর বায়ার্ন মিউনিখ। বায়ার্নের শেষ দুই শিরোপার মাঝখানে ৭ বছরের খরা ছিল। আর লিভারপুলের জন্য খরাটা ছিল ১৪ বছরের। বিপরীতে রিয়াল গত ১১ বছরে টানা ৩টিসহ শিরোপা জিতেছে ৬টি। ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে পরাশক্তিগুলোর শক্তির যে ১৯-২০ পার্থক্য, সেটা মোটেই এই পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হয় না। রিয়ালের সামনে অন্যরা নিতান্ত ‘পুঁচকেই’ বলা যায়। কিন্তু এর পেছনে কারণ কী?

আরও পড়ুননাটকীয়তা ও রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের অপেক্ষা৯ ঘণ্টা আগে

রিয়াল প্রায়ই ‘গ্যালাকটিকোস’ বা তারকাপুঞ্জ দিয়ে দল সাজায়। সময়ের অন্যতম সেরাদের এনে প্রায়ই ‘তারার হাট’ বসায় ক্লাবটি। কিন্তু এটাই যে রিয়ালের সাফল্যের একমাত্র কারণ, সেটা বোধহয় ক্লাবটির প্রতিদ্বন্দ্বীরাও বলবে না। ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত যেমনটা হয়েছিল। সে সময় লুইস ফিগো, ডেভিড বেকহাম, জিনেদিন জিদান, রোনালদো নাজারিও, মাইকেল ওয়েন, রবিনিওর মতো তারকাদের পদচারণে রিয়াল পরিণত হয়েছিল চাঁদের হাটে, কিন্তু সাফল্য তেমন ছিল না। সেই তারার হাট নিয়ে একবার লা লিগা ও একবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছিল রিয়াল।

রিয়ালে দ্বিতীয় ‘গ্যালাটিকোস-যুগ’ ধরা হয় ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালকে। শুরুর দিকে এই গ্যালাকটিকোসও ছিল ব্যর্থ। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ঘিরে আবর্তিত হওয়া এই গ্যালাকটিকোসের প্রথম দিকের অংশে ছিলেন কাকা, দি মারিয়া, মেসুত ওজিলরা। কাকা ও ওজিলের ভাগ্যে অবশ্য একটি লা লিগা শিরোপা ছাড়া কিছুই জোটেনি। দি মারিয়া একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ও একটি লা লিগা জিতেছেন। আর রিয়াল যখন ধারাবাহিক সাফল্য পেতে শুরু করে, তখন অবশ্য সেটিকে সে অর্থে গ্যালাকটিকোস বলা যায় না। ফলে রিয়ালের তারকাদের ওপর সব কৃতিত্ব চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ বোধহয় নেই।

রিয়ালের দুই তুরুপের তাস এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়ুস.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ য ম প য়নস ল গ আর স ন ল

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ