‘উদয়ের সঙ্গে ব্রেকআপের পর অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম’
Published: 17th, September 2025 GMT
বলিউডের বরেণ্য অভিনেত্রী তনুজার দুই কন্যা। তারা হলেন—কাজল মুখার্জি ও তানিশা মুখার্জি। বলিউডে পা রেখে দারুণ খ্যাতি কুড়িয়েছেন কাজল। পাশাপাশি সংসারীও হয়েছেন। তবে ৪৭ বছর বয়সি তানিশা মুখার্জি এখনো অবিবাহিত।
তানিশার জীবনে একাধিক প্রেম এসেছে। অভিনেতা উদয় চোপড়া, আরমান কোহলির সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন এই অভিনেত্রী। বিশেষ করে উদয় চোপড়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে অধিকবার খবরের শিরোনাম হন। পিঙ্কভিলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রেম-বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুলেছেন তানিশা।
আরো পড়ুন:
‘রিয়েলিটি শোয়ের জন্য পুরুষের সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমাতে পারব না’
প্রেমিকের সঙ্গে বাগদান সারলেন হুমা কুরেশি!
আরমান কোহলির সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর মন খারাপ হয়েছিল কি না? এই প্রশ্নের উত্তরে তানিশা মুখার্জি বলেন, “এটা এতটা হৃদয়ভাঙা ব্যাপার ছিল না। অনেকে বিষয়টিকে হৃদয়বিদারক ঘটনা মনে করলেও, আমার জন্য এটি অতটা গভীর ছিল না।”
উদয় চোপড়ারর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর গভীরভাবে আহত হন তানিশা। তা স্মরণ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমি অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম, যখন উদয়ের সঙ্গে ব্রেকআপ হয়েছিল। কারণ আমরা বন্ধু ছিলাম। আমরা একে অপরকে অনেক বছর ধরে চিনতাম এবং খুব কাছের ছিলাম।”
অভিজ্ঞতার আলোকে তানিশা মুখার্জি বলেন, “আমি এমন একজন মানুষ যে, সবসময় জীবনের উজ্জ্বল দিকটা দেখতে ভালোবাসি। আমি বিশ্বাস করি, যা কিছু ঘটে, তা ভালোর জন্যই ঘটে।”
হৃদয়ভাঙা জীবনেরই একটা অংশ এবং তা থেকে বেরিয়ে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে হয়। এ তথ্য স্মরণ করে তানিশা বলেন, “প্রেমে পড়ার অনুভূতি উপভোগ করুন এবং সেই অভিজ্ঞতাগুলোকে গুরুত্ব দিই।”
গত বছরের শুরুতে হিন্দুস্তান টাইমসকে সাক্ষাৎকার দেন তানিশা। এ আলাপচারিতায় বিয়ের পরিকল্পনা বিষয়ে জানতে চাইলে, তানিশা মুখার্জি বলেছিলেন, “আমি মনে করি, বিয়ে চমৎকার একটি ইনস্টিটিউশন, যেসব মানুষ এটি বুঝেন, সঠিক মানুষ খুঁজে পান, তাদের জন্য এটি সুন্দর। আমি সবসময়ই বিয়ে করতে চাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি এবং সৃষ্টিকর্তা তা বারবার ফিরিয়ে দিয়েছেন। প্রত্যেক মানুষই বিশেষ এমন একজনকে খুঁজেন, যার সঙ্গে বৃদ্ধ হওয়া যায়।”
বিয়ে না করে ডিম্বাণু সংরক্ষণ করেছেন তানিশা। কারণ ব্যাখ্যা করে অন্য এক সাক্ষাৎকারে তানিশা বলেছিলেন, “আমি আপাতত সন্তান চাই না। এ কথাই বার বার মাথায় ঘুরছিল। চিকিৎসকের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনাও করি। অবশেষে ৩৯ বছর বয়সে নিজের ডিম্বাণু সংরক্ষণ করেছি। বিষয়টি নিয়ে আমি দারুণ খুশি।”
জীবন উপভোগ করতে চান তানিশা। তা উল্লেখ করে এই অভিনেত্রী বলেছিলেন, “মেয়েরা শুধু বংশবৃদ্ধির জন্য নয়। জীবন সামনে এগিয়ে নিতে মেয়েদের একজন পুরুষ লাগবে তা কিন্তু একেবারেই নয়। দত্তক নিয়েও মা হওয়া যায়। আমার মনে হয়, এই উপায়ে মা হলে সমাজেরই উপকার।”
বিভিন্ন রিয়েলিটি শোয়ে কাজ করে বিশেষ পরিচিতি পেয়েছেন তানিশা মুখার্জি। বলিউড সিনেমায় কাজ করলেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। বিজ্ঞাপন ও বিভিন্ন ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন তানিশা। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘বীর মুরারবাজি’। মারাঠি ভাষার এ সিনেমা চলতি বছরের শুরুতে মুক্তি পায়।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক
ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।
চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।
স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।
সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।
সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।