Prothomalo:
2025-09-18@02:43:28 GMT

আপেল নামের মেয়েটি

Published: 17th, September 2025 GMT

আপেল বিয়ে করেনি। তার বয়স প্রায় চল্লিশ, সে এখনো বিয়ে করেনি। বিয়ে না হওয়ার কারণ তার চামড়ার কালো রং নয় (তার রঙের অনেক মেয়ের বিয়ে হয়েছে) অথবা তার নামটিও নয়। বিয়ের ক্ষেত্রে নাম বিষয়টি সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ। যাহোক, মরূদ্যানে মাঝেমধ্যে ফলের নামেও মেয়েদের নাম রাখা হয়। আপেলের বান্ধবী কলা গত বছর বিয়ে করেছে।

ভাগ্য? দুর্ঘটনা? নাকি সেটা আপেলের একগুঁয়েমি ছিল, যার জন্য সে ছাদে বিয়ের পতাকা ওড়াতে দিতে রাজি হচ্ছিল না আর এই অনিচ্ছাকে ক্রমাগত ধরে রেখেছিল? যদিও মেয়েদের প্রথম ঋতু শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির ছাদে বিয়ের পতাকা ওড়ানো মরূদ্যানের রীতি, কিন্তু আপেল সেটি করতে দিতে রাজি হয়নি। সে মিনতি করেছে, কেঁদেছে, মুখ লুকিয়ে তার বাবাকে বলেছে, ‘বাবা, দয়া করে এটা করবেন না। আমি চাই না।’ তার মা ভেবেছিল আপেল হয়তো লজ্জা পাচ্ছে যে উপত্যকার সবাই, বুড়ো ও যুবক, সবাই তার নারী হয়ে ওঠার খবরটি জেনে যাবে। তাই সে স্বামীর দিকে মাথা ঝাঁকিয়ে ইঙ্গিত করেছিল; স্বামী ইশারা বুঝতে পেরেছিল ও আপেলকে নিজের মতো একা ছেড়ে দিয়েছিল।

এক মাস পরে যখন বিষয়টি প্রায় বিস্মৃত হয়েছে, তার বাবা একটি মাটিভর্তি পাত্রে একটি লাল পতাকা লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু আপেল তার কাছে ছুটে গেছে, দুই চোখ থেকে অশ্রু ঝরাতে ঝরাতে বলেছে, ‘বাবা, আমি এটা চাই না।’ বাবা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। স্পষ্ট বিভ্রান্তি নিয়ে তিনি আপেলকে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘তুমি বলতে চাইছ তুমি বিয়ে করতে চাও না?’

আপেল যখন তার বাবার প্রশ্নের জবাব দিয়েছে, বাবা বুঝতে পারেননি সে কী বলতে চাইছে, যদিও তিনি আপেলকে বলতে শুনেছেন, ‘আমি বিয়ে করতে চাই, কিন্তু পতাকা চাই না।’ কথাগুলো বলার সময় আপেলের কান্না আরও বেড়ে গিয়েছিল।

তার বাবা হাততালি দিয়ে বললেন, ‘খোদা ছাড়া অন্য কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই।’ কিন্তু আপেল কেন এমন করছে? পতাকা ওড়ানো ছাড়া বিয়ে হওয়া কীভাবে সম্ভব হবে? আপেলের দাদি, তার মা, সব খালা-ফুফি আর এই মরূদ্যানে জন্ম নেওয়া প্রত্যেক নারীর বিয়ে হয়েছে পতাকা ওড়ানোর মাধ্যমে। তাদের কাউকে পতাকা ওড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বোঝানো হয়নি, কিন্তু তারা নিজেদের মুখের মতোই ভালো করে জানত যে পতাকাই সম্ভবত বিয়ে হওয়ার একমাত্র উপায়। প্রকৃতপক্ষে, এই মরূদ্যানই একমাত্র জায়গা, যা তাদের মেয়েদের বিয়ের জন্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কোনো ঘটকের ওপর নির্ভর করেনি। সেই হিন্দের ওপর তো নয়ই, যে যতগুলো মিলন ঘটিয়েছিল, তার চেয়ে বেশি বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে, আর যে ঘটক বিয়ের সময় প্রত্যেক কনে সম্পর্কে এমনভাবে গুণগান গায়, যেন তারা সর্বগুণসম্পন্নার প্রতীক; যে ঘটক বিয়ের প্রত্যেক পাত্রকে তার সময়ের উজ্জ্বল চাঁদ, একজন অশ্বারোহী হিসেবে বর্ণনা করে। মেয়েটিকে বর্ণনা করা হয় এক মোহনীয় কালো চামড়ার নিষ্পাপ পাত্রী হিসেবে, আর পাত্রের গুণ হিসেবে বলা হয় সে দশটি উটের মালিক। মরূদ্যানের পরিবারগুলো সহজেই ঘটকের এসব কথার সঙ্গে একমত হয়, আর ঘটক হিন্দ জোরালোভাবে কসম কেটে নিশ্চিত করে এসবই সত্য। বিয়ের রাতে বাইরে থেকে চিৎকার শোনা যায়। তা ছাড়া অনেক অপরিচিত মানুষ এই মরূদ্যানে আসে। তারা তাদের কাফেলা থামিয়ে দেয়, তাদের উটগুলোকে কয়েক ঘণ্টার জন্য পানি খেতে ছেড়ে দেয়। অবশ্যই, এত অল্প সময়ের মধ্যে কারও মাথায় বিয়ের চিন্তা আসে না, কিন্তু উপত্যকার ছাদগুলোর ওপরে উড়তে থাকা পতাকাগুলো পুরুষদের হৃদয়কে সুড়সুড়ি দেয়, বিয়ে করতে তাদের এই মরূদ্যানে ফিরে আসতে প্রলুব্ধ করে।

হানান আল-শাইখ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন

পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান,  অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়। 

তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”

নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ