Prothomalo:
2025-11-02@11:11:02 GMT

আপেল নামের মেয়েটি

Published: 17th, September 2025 GMT

আপেল বিয়ে করেনি। তার বয়স প্রায় চল্লিশ, সে এখনো বিয়ে করেনি। বিয়ে না হওয়ার কারণ তার চামড়ার কালো রং নয় (তার রঙের অনেক মেয়ের বিয়ে হয়েছে) অথবা তার নামটিও নয়। বিয়ের ক্ষেত্রে নাম বিষয়টি সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ। যাহোক, মরূদ্যানে মাঝেমধ্যে ফলের নামেও মেয়েদের নাম রাখা হয়। আপেলের বান্ধবী কলা গত বছর বিয়ে করেছে।

ভাগ্য? দুর্ঘটনা? নাকি সেটা আপেলের একগুঁয়েমি ছিল, যার জন্য সে ছাদে বিয়ের পতাকা ওড়াতে দিতে রাজি হচ্ছিল না আর এই অনিচ্ছাকে ক্রমাগত ধরে রেখেছিল? যদিও মেয়েদের প্রথম ঋতু শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির ছাদে বিয়ের পতাকা ওড়ানো মরূদ্যানের রীতি, কিন্তু আপেল সেটি করতে দিতে রাজি হয়নি। সে মিনতি করেছে, কেঁদেছে, মুখ লুকিয়ে তার বাবাকে বলেছে, ‘বাবা, দয়া করে এটা করবেন না। আমি চাই না।’ তার মা ভেবেছিল আপেল হয়তো লজ্জা পাচ্ছে যে উপত্যকার সবাই, বুড়ো ও যুবক, সবাই তার নারী হয়ে ওঠার খবরটি জেনে যাবে। তাই সে স্বামীর দিকে মাথা ঝাঁকিয়ে ইঙ্গিত করেছিল; স্বামী ইশারা বুঝতে পেরেছিল ও আপেলকে নিজের মতো একা ছেড়ে দিয়েছিল।

এক মাস পরে যখন বিষয়টি প্রায় বিস্মৃত হয়েছে, তার বাবা একটি মাটিভর্তি পাত্রে একটি লাল পতাকা লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু আপেল তার কাছে ছুটে গেছে, দুই চোখ থেকে অশ্রু ঝরাতে ঝরাতে বলেছে, ‘বাবা, আমি এটা চাই না।’ বাবা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। স্পষ্ট বিভ্রান্তি নিয়ে তিনি আপেলকে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘তুমি বলতে চাইছ তুমি বিয়ে করতে চাও না?’

আপেল যখন তার বাবার প্রশ্নের জবাব দিয়েছে, বাবা বুঝতে পারেননি সে কী বলতে চাইছে, যদিও তিনি আপেলকে বলতে শুনেছেন, ‘আমি বিয়ে করতে চাই, কিন্তু পতাকা চাই না।’ কথাগুলো বলার সময় আপেলের কান্না আরও বেড়ে গিয়েছিল।

তার বাবা হাততালি দিয়ে বললেন, ‘খোদা ছাড়া অন্য কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই।’ কিন্তু আপেল কেন এমন করছে? পতাকা ওড়ানো ছাড়া বিয়ে হওয়া কীভাবে সম্ভব হবে? আপেলের দাদি, তার মা, সব খালা-ফুফি আর এই মরূদ্যানে জন্ম নেওয়া প্রত্যেক নারীর বিয়ে হয়েছে পতাকা ওড়ানোর মাধ্যমে। তাদের কাউকে পতাকা ওড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বোঝানো হয়নি, কিন্তু তারা নিজেদের মুখের মতোই ভালো করে জানত যে পতাকাই সম্ভবত বিয়ে হওয়ার একমাত্র উপায়। প্রকৃতপক্ষে, এই মরূদ্যানই একমাত্র জায়গা, যা তাদের মেয়েদের বিয়ের জন্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কোনো ঘটকের ওপর নির্ভর করেনি। সেই হিন্দের ওপর তো নয়ই, যে যতগুলো মিলন ঘটিয়েছিল, তার চেয়ে বেশি বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে, আর যে ঘটক বিয়ের সময় প্রত্যেক কনে সম্পর্কে এমনভাবে গুণগান গায়, যেন তারা সর্বগুণসম্পন্নার প্রতীক; যে ঘটক বিয়ের প্রত্যেক পাত্রকে তার সময়ের উজ্জ্বল চাঁদ, একজন অশ্বারোহী হিসেবে বর্ণনা করে। মেয়েটিকে বর্ণনা করা হয় এক মোহনীয় কালো চামড়ার নিষ্পাপ পাত্রী হিসেবে, আর পাত্রের গুণ হিসেবে বলা হয় সে দশটি উটের মালিক। মরূদ্যানের পরিবারগুলো সহজেই ঘটকের এসব কথার সঙ্গে একমত হয়, আর ঘটক হিন্দ জোরালোভাবে কসম কেটে নিশ্চিত করে এসবই সত্য। বিয়ের রাতে বাইরে থেকে চিৎকার শোনা যায়। তা ছাড়া অনেক অপরিচিত মানুষ এই মরূদ্যানে আসে। তারা তাদের কাফেলা থামিয়ে দেয়, তাদের উটগুলোকে কয়েক ঘণ্টার জন্য পানি খেতে ছেড়ে দেয়। অবশ্যই, এত অল্প সময়ের মধ্যে কারও মাথায় বিয়ের চিন্তা আসে না, কিন্তু উপত্যকার ছাদগুলোর ওপরে উড়তে থাকা পতাকাগুলো পুরুষদের হৃদয়কে সুড়সুড়ি দেয়, বিয়ে করতে তাদের এই মরূদ্যানে ফিরে আসতে প্রলুব্ধ করে।

হানান আল-শাইখ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

আন্দোলনে রাজধানীতে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ যানজট, ডিএমপির দুঃখপ্রকাশ

বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকার সড়কগুলো অবরোধ করে যে আন্দোলন হচ্ছে, তাতে যানজট বাড়ছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে পুলিশ।

রবিবার (২ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানায় ডিএমপি।

আরো পড়ুন:

খেতুরে এবার ব্যাপক দর্শনার্থী সমাগম, দীর্ঘ যানজট

যানজটে আটকা পড়লেন সড়ক উপদেষ্টা 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এমপিও ভুক্তির দাবিতে ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সমূহের স্বীকৃতি ও এমপিও ভুক্তকরণ, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ এমপিও ভুক্তকরণের দাবিতে প্রেস ক্লাবের সামনে বেশ কয়েকটি সংগঠন অবস্থান করছে। এছাড়া চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট ও ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নন-ক্যাডারে নিয়োগ প্রদানের জন্য সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চলছে। যার ফলে যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না।”

“শত বাধা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তথাপি অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে যানজট বৃদ্ধির ফলে যে জনভোগান্তি তৈরি হয়েছে সেজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ আন্তরিকভাবে দুঃখিত।”

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ