রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা ইস্যুকে কেন্দ্র করে সহ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনের মতো পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ আছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আহ্বানে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ প্রায় সব দপ্তরের তালা খোলা হয়েছে।

কর্মবিরতির বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমীরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কর্মবিরতি চলছে। সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ আছে। এ বিষয়ে আজ আমাদের সভা শুরু হয়েছে। সেখানে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’

সরেজমিন দেখা যায়, আজ সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন, একাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন দপ্তরের তালা খোলা। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করছেন। যথাসময়ে বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা কম। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ আছে। ক্যাম্পাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ও সামনে দুর্গাপূজার ছুটি থাকায় অনেকেই বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রশাসনের আহ্বানে তাঁরা গতকাল কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন। আজ তাঁদের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজে ফিরেছেন। সব দপ্তরের দাপ্তরিক কাজ চলমান আছে।
গত বৃহস্পতিবার ১০ শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। একপর্যায়ে গত শনিবার জুবেরী ভবনে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনার পর রোববার জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও কর্মকর্তারা পোষ্য কোটা পুনর্বহাল এবং শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীদের শাস্তির দাবিতে এক দিনের কর্মবিরতি পালন করেন। পরদিন সোমবার থেকে তাঁরা অনির্দিষ্টকালের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রোববার বিকেলে জরুরি সিন্ডিকেট সভা হয়। সভায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়।

কর্মবিরতি শেষে কাজে ফিরেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রদ্ধা

টাঙ্গাইলে নানা আয়োজনে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষ এলাকায় তাঁর মাজার প্রাঙ্গণ সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া-মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এই নেতাকে স্মরণ করা হয়।

দিনের কর্মসূচি শুরু হয় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আনোয়ারুল আজীম আকন্দ শ্রদ্ধা জানান। পরে ভাসানীর পরিবারের সদস্য, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভার আয়োজন করে জেলা বিএনপি। দলটির জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। এ ছাড়া বক্তব্য দেন ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, জেলা সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালসহ আরও অনেকে।

নির্বাচন ভন্ডুল করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এতে কোনো লাভ হবে না। দেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে আছে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে, তা বিএনপিরই সরকার হবে। তিনি দাবি করেন, মাওলানা ভাসানীর আদর্শ অনুসরণ করা মানেই শহীদ জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরণ করা।

জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, জামায়াত গণতন্ত্রের পক্ষের কোনো শক্তি নয়। জুলাই বিপ্লবের ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে এই দল। তাঁর দাবি, বিএনপির সঙ্গে থেকে জামায়াত ১৫-২০টি আসন পেয়েছে। অথচ বিএনপির সঙ্গে না থাকলে তিনটি আসনও পায় না। এবার নির্বাচনে জামায়াতের একটি আসনও জুটবে না।

ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশে যারা খুন করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিচার হতে হবে। ফ্যাসিবাদী কায়দায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বিচারে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। তার বিচার চলছে। আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে এই বিচারপ্রক্রিয়া হয়েছে। বিচারের মধ্য দিয়ে যে রায় আসবে, এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।’

আওয়ামী লীগ গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন গন অধিকার পরিষদের নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যাঁরা হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন। তাঁদের নির্দেশে ককটেল নিক্ষেপ ও জ্বালাও–পোড়াও থেকে বিরত থাকার জন্য দলটির সাধারণ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তাঁর দাবি, ১৯৭৫ সালের পর আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসতে ২১ বছর সময় লেগেছে। এরপর ৪১ বছরেও আর রাজনীতিতে দাঁড়াতে পারবে না তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ