রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট চালু হলে বাংলাদেশের মোট বিদ্যুতের চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ হবে বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক সামা বিলবাও। তিনি বলেন, এ বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু হবে।

আজ শুক্রবার সকালে মস্কোর ভিডিএনএইচ পার্কের হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রথম আলোর এক প্রশ্নের জবাবে ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক এ কথা বলেন।

সামা বিলবাও বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বিদ্যুৎ-ঘাটতি বা এ-সংক্রান্ত সমস্যায় থাকা দেশগুলোকে বাংলাদেশের পদক্ষেপ অনুসরণের পরামর্শ দেন তিনি। এ সময় তিনি বাংলাদেশের জীবনমান, আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং শিল্প ও বাণিজ্যে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন।

রাশিয়ার পরমাণু শক্তি ব্যবহারের ৮০ বছর পূর্তিতে মস্কোতে গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ‘ওয়ার্ল্ড অ্যাটমিক উইক’ বা বিশ্ব পারমাণবিক সপ্তাহ। দ্বিতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক। পারমাণবিক প্রযুক্তির নানা দিক নিয়ে আজও একাধিক অধিবেশনে আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর র শ

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমি এতিম হয়ে গেলাম রে’

“আমি এতিম হয়ে গেলাম রে, আমার বাবা আর নেই, আমি এখন কী করবো ফুফু”- এভাবেই হাহাকার করছিলেন পাপিয়া আক্তার। বাবা হারানোর শোকে কণ্ঠ যেন পাথর ভেদ করা আর্তনাদ। পাশে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছেন স্বজনরা। সবাই জানে, এই কান্নার আর কোনো সান্ত্বনা নেই।

পাপিয়া মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়া এলাকায় হলি চাইল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া চালক পারভেজ খানের (৪৫) মেয়ে। তিনদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন পারভেজ খান। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আরো পড়ুন:

স্কুল পরিচালকের বিরুদ্ধে ৮ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ 

শ্রেণিকক্ষে টিকটক বানানোয় ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) গভীর রাতে ফলসাটিয়া বাজারের পাশে থেমে থাকা স্কুল বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বাসে ওই সময় ঘুমিয়ে ছিলেন চালক পারভেজ খান। আগুনে বাসটি মুহূর্তেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তিনদিন ধরে ৭০ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে বাঁচার লড়াই চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু জীবন তাকে আর সময় দেয়নি।

নিহত পারভেজ খান সদর উপজেলার বারাইভিকড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তার ঘরে রয়েছে স্ত্রী, এক স্কুলপড়ুয়া ছেলে এবং ছোট মেয়ে পাপিয়া আক্তার। 

স্ত্রী চোখে মুখে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “স্বামীকে হারিয়ে আমরা পথে বসে গেলাম। এখন সন্তানদের কীভাবে মানুষ করবো? কে চালাবে সংসার?”

স্থানীয়রা জানান, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যাকাণ্ড। যারা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পারভেজের পরিবার যেন রাষ্ট্রীয় সাহায্য পায়, সন্তানদের পড়াশোনা ও সংসারের ব্যয় চালাতে যেন সরকার ও প্রশাসন এগিয়ে আসে।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, “গত বৃহস্পতিবার স্কুলবাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। এতে দগ্ধ হন বাসটির ভেতর ঘুমিয়ে থাকা চালক পারভেজ। পুলিশ উদ্ধার করে তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাকে। স্কুলবাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ