দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন। নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে চাকসু ভবন। এরই মধ্যে সংস্কারের জন্য ৩৫ লাখ টাকার বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় এ বাজেটটি পাশ হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) চবির প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল আহাদ রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় চাকসু ভবন সংস্কারে ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ৬৭৭ টাকার একটি বাজেট পাশ হয়েছে। এরইমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের কিছু কাজ করা হচ্ছে। দ্রুত স্বচ্ছতার সঙ্গে বাজেটের আলোকে বাকি কাজ সম্পূর্ণ করা হবে।”

তিনি বলেন, “সম্পূর্ণ চাকসু ভবন রং করা, ইলেক্ট্রিক, টাইলস, গ্রাস ও প্লাম্বিংয়ের কাজসহ ছোটবড় যাবতীয় কাজ এ বাজেটের অন্তর্ভুক্ত।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.

মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “চাকসু ভবন সংস্কারে বড় একটি বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরকে সংস্কারের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত এ সংস্কারের কাজ শেষ হবে।” 

সংস্কারের কাজ তত্বাবধানে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠিত হয়েছে। কমিটিতে আছেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী, চাকসু কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধূরী, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক বজলুর রহমান ও চবির প্রকৌশল দপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলী ইমদাদুল হক রিয়াদ।

সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এরপর থেকেই কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল চাকসু ভবন। দীর্ঘদিন পর ‘ভাতের হোটেল’ খ্যাত ভবনটির সংস্কারে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফ তানজু বলেন, “দীর্ঘদিন পর চাকসু ভবন সংস্কারে আমরা অনেক আনন্দিত। আমরা দেখতে পাচ্ছি ভবনটিতে রং করাসহ আরো বিভিন্ন কাজ করা হচ্ছে। তবে শুধু অবকাঠামগত সংস্কার নয়, আমরা চাই চাকসুর মাধ্যমে যেন প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণ হয়।” 

ভোটার ও প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি, অবকাঠামোগত সংস্কার-সবমিলিয়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে চাকসু ভবন। শিক্ষার্থীদের কাছে এটি এখন শুধু ভাতের হোটেল নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে চাকসু ভবন।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে চাকসু নির্বাচনের প্রার্থীদের নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ঝুপড়ি থেকে লেডিস ঝুপড়ি, শহীদ মিনার থেকে জিরো পয়েন্ট, অনুষদ হতে শাটল ট্রেন- সর্বত্রই প্রার্থীরা ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে; দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিবর্তনের নানা প্রতিশ্রুতি।

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রদ্ধা

টাঙ্গাইলে নানা আয়োজনে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষ এলাকায় তাঁর মাজার প্রাঙ্গণ সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া-মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এই নেতাকে স্মরণ করা হয়।

দিনের কর্মসূচি শুরু হয় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আনোয়ারুল আজীম আকন্দ শ্রদ্ধা জানান। পরে ভাসানীর পরিবারের সদস্য, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভার আয়োজন করে জেলা বিএনপি। দলটির জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। এ ছাড়া বক্তব্য দেন ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, জেলা সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালসহ আরও অনেকে।

নির্বাচন ভন্ডুল করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এতে কোনো লাভ হবে না। দেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে আছে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে, তা বিএনপিরই সরকার হবে। তিনি দাবি করেন, মাওলানা ভাসানীর আদর্শ অনুসরণ করা মানেই শহীদ জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরণ করা।

জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, জামায়াত গণতন্ত্রের পক্ষের কোনো শক্তি নয়। জুলাই বিপ্লবের ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে এই দল। তাঁর দাবি, বিএনপির সঙ্গে থেকে জামায়াত ১৫-২০টি আসন পেয়েছে। অথচ বিএনপির সঙ্গে না থাকলে তিনটি আসনও পায় না। এবার নির্বাচনে জামায়াতের একটি আসনও জুটবে না।

ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশে যারা খুন করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিচার হতে হবে। ফ্যাসিবাদী কায়দায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বিচারে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। তার বিচার চলছে। আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে এই বিচারপ্রক্রিয়া হয়েছে। বিচারের মধ্য দিয়ে যে রায় আসবে, এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।’

আওয়ামী লীগ গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন গন অধিকার পরিষদের নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যাঁরা হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন। তাঁদের নির্দেশে ককটেল নিক্ষেপ ও জ্বালাও–পোড়াও থেকে বিরত থাকার জন্য দলটির সাধারণ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তাঁর দাবি, ১৯৭৫ সালের পর আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসতে ২১ বছর সময় লেগেছে। এরপর ৪১ বছরেও আর রাজনীতিতে দাঁড়াতে পারবে না তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ