চালককে হত্যা করে ট্যাক্সি ছিনতাই: ৩ জনের যাবজ্জীবন
Published: 30th, September 2025 GMT
কুমিল্লায় বেবি ট্যাক্সি চালক জসিম উদ্দিন হত্যা মামলায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক ফরিদা ইয়াসমিন এই রায় দেন। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এনামুল হক সরকার রায়ের তথ্য জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
সিলেটে মাদকাসক্ত ছেলেকে পুলিশে দিলেন বাবা, পরে কারাদণ্ড
কুমিল্লা কারাগারে হাজতির প্রক্সি দিতে এসে যুবক ধরা
এনামুল হক সরকার বলেন, ‘‘যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মোবারক হোসেন, আবদুল মালেক ও নুরুল ইসলাম। মামলার শেষ পর্যায়ে এসে তারা পালিয়ে যান। তাদের বিরুদ্ধে এখনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।’’
মামলার আসামি আব্দুল মান্নান ও সাইফুল ইসলামকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় চৌদ্দগ্রাম মিয়া বাজার থেকে মোবারক হোসেন ও আবদুল মালেক ময়নামতি দেবপুর যাওয়ার কথা বলে বেবি ট্যাক্সি ওঠেন। পথে পদুয়ার বাজারে তাদের সঙ্গে নুরুল ইসলাম যোগ দেন। পরে দেবপুর এলাকার বিন্দিয়ার চর ব্রিজের কাছে চালক জসিম উদ্দিনকে হত্যা করে ব্রিজের নিচে ফেলে রেখে তার ট্যাক্সি ছিনতাই করেন তারা।
ঘটনার পর দিন বুড়িচং থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন থানার এএসআই কাজী মাছুমুর রহমান। পুলিশ আসামি মোবারক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে আব্দুল মান্নানের গ্যারেজ থেকে ছিনতাই হওয়া ট্যাক্সি উদ্ধার করে। ২০০৯ সালে মামলাটি কুমিল্লা দায়রা জজ আদালতে নথিভুক্ত হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হয়।
ঢাকা/রুবেল/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রদ্ধা
টাঙ্গাইলে নানা আয়োজনে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষ এলাকায় তাঁর মাজার প্রাঙ্গণ সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া-মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এই নেতাকে স্মরণ করা হয়।
দিনের কর্মসূচি শুরু হয় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আনোয়ারুল আজীম আকন্দ শ্রদ্ধা জানান। পরে ভাসানীর পরিবারের সদস্য, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভার আয়োজন করে জেলা বিএনপি। দলটির জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। এ ছাড়া বক্তব্য দেন ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, জেলা সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালসহ আরও অনেকে।
নির্বাচন ভন্ডুল করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এতে কোনো লাভ হবে না। দেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য উদ্গ্রীব হয়ে আছে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে, তা বিএনপিরই সরকার হবে। তিনি দাবি করেন, মাওলানা ভাসানীর আদর্শ অনুসরণ করা মানেই শহীদ জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরণ করা।
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, জামায়াত গণতন্ত্রের পক্ষের কোনো শক্তি নয়। জুলাই বিপ্লবের ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে এই দল। তাঁর দাবি, বিএনপির সঙ্গে থেকে জামায়াত ১৫-২০টি আসন পেয়েছে। অথচ বিএনপির সঙ্গে না থাকলে তিনটি আসনও পায় না। এবার নির্বাচনে জামায়াতের একটি আসনও জুটবে না।
ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশে যারা খুন করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিচার হতে হবে। ফ্যাসিবাদী কায়দায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বিচারে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। তার বিচার চলছে। আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে এই বিচারপ্রক্রিয়া হয়েছে। বিচারের মধ্য দিয়ে যে রায় আসবে, এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
আওয়ামী লীগ গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন গন অধিকার পরিষদের নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যাঁরা হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন। তাঁদের নির্দেশে ককটেল নিক্ষেপ ও জ্বালাও–পোড়াও থেকে বিরত থাকার জন্য দলটির সাধারণ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তাঁর দাবি, ১৯৭৫ সালের পর আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসতে ২১ বছর সময় লেগেছে। এরপর ৪১ বছরেও আর রাজনীতিতে দাঁড়াতে পারবে না তারা।