বন্দরে টেঁটাযুদ্ধের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা, গ্রেপ্তার ৪
Published: 30th, September 2025 GMT
বন্দরে দুই গ্রুপের টেঁটা যুদ্ধে ৪ জন টেটাবিদ্ধসহ দুই পক্ষের ১২ জন আহতের ঘটনায় উভয় পক্ষের ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো বন্দর থানার বক্তারকান্দী এলাকার মৃত আঃ সালাম মিয়ার ছেলে আসলাম (৪২) ও একই এলাকার আব্দুল খালেক মিয়ার ছেলে ফয়েজ (৩০) একই এলাকার আব্দুল মালেক মিয়ার ছেলে মাকসুদ (৩০) ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার শিমুলপাড়া মৃত আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে চাঁন মিয়া (৪০)।
গ্রেপ্তারকৃতদের মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বন্দর থানার দায়েরকৃত পৃথক ২টি মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয় । গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে বন্দর থানার ২৪ নং ওয়ার্ডের দেওলী চৌরাপাড়া এলাকা অভিযান চালিয়ে এদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
এর আগে গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বন্দর থানার দেওলী এলাকায় দফা দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে আসমা আরেফিন বাদী হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখ্য করে আরো ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং- ৪২(৯)২৫। একই ঘটনায় জিয়াসমিন বেগম বাদী হয়ে প্রতিপক্ষ ১৮ জনের নাম উল্লেখ্য করে একই থানায় অপর একটি মামলা দায়ের করে। যার অপর মামলা নং- ৪৩(৯)২৫।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী গণমাধ্যমকে জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিবাদী সাহিদ (৩২), নাহিদ (৩৪) নাদিম (৩৮), বাসেদ (৫৫), রোমান (৩২), জুয়েল (২৮), পারবেজ (৩০), আল রেখা(৩০), মাহবুব (৩২) সুমন (৩৫) ভুমি দস্যু ও চিহ্নিত চাঁদাবাজ। বাড়ির ঘর মেরামত করতে গেলে বিবাদীরা চাঁদা দাবি করে।
চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছে। গত রোববার বিবাদীগণ নির্মাণাধীন ঘর তুলতে বাঁধা দেয়। এর সূত্র ধরে বিবাদীরা তাদের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করলে গত সোমবার সকালে উল্লেখিত বিবাদীরা আর্তকিত হামলা চালায়।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উভয় পক্ষকে থানায় বসার জন্য বলে পুলিশ চলে গেলে বিবাদীরা পুনরায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।
ওই সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে শিরিন, জুবায়ের, আ: মালেক, রুহুল আমিন, ওমর ফারুক মাকসুদ, আমির হোসেন, রিনা বেগম, রুনা আক্তার। অপর গ্রুপের পারভেজ, বাসেদ ও নাদিম জখম হয়।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ উল ল খ র ঘটন ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমি এতিম হয়ে গেলাম রে’
“আমি এতিম হয়ে গেলাম রে, আমার বাবা আর নেই, আমি এখন কী করবো ফুফু”- এভাবেই হাহাকার করছিলেন পাপিয়া আক্তার। বাবা হারানোর শোকে কণ্ঠ যেন পাথর ভেদ করা আর্তনাদ। পাশে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছেন স্বজনরা। সবাই জানে, এই কান্নার আর কোনো সান্ত্বনা নেই।
পাপিয়া মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়া এলাকায় হলি চাইল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া চালক পারভেজ খানের (৪৫) মেয়ে। তিনদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন পারভেজ খান। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরো পড়ুন:
স্কুল পরিচালকের বিরুদ্ধে ৮ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ
শ্রেণিকক্ষে টিকটক বানানোয় ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) গভীর রাতে ফলসাটিয়া বাজারের পাশে থেমে থাকা স্কুল বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বাসে ওই সময় ঘুমিয়ে ছিলেন চালক পারভেজ খান। আগুনে বাসটি মুহূর্তেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তিনদিন ধরে ৭০ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে বাঁচার লড়াই চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু জীবন তাকে আর সময় দেয়নি।
নিহত পারভেজ খান সদর উপজেলার বারাইভিকড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তার ঘরে রয়েছে স্ত্রী, এক স্কুলপড়ুয়া ছেলে এবং ছোট মেয়ে পাপিয়া আক্তার।
স্ত্রী চোখে মুখে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “স্বামীকে হারিয়ে আমরা পথে বসে গেলাম। এখন সন্তানদের কীভাবে মানুষ করবো? কে চালাবে সংসার?”
স্থানীয়রা জানান, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যাকাণ্ড। যারা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পারভেজের পরিবার যেন রাষ্ট্রীয় সাহায্য পায়, সন্তানদের পড়াশোনা ও সংসারের ব্যয় চালাতে যেন সরকার ও প্রশাসন এগিয়ে আসে।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, “গত বৃহস্পতিবার স্কুলবাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। এতে দগ্ধ হন বাসটির ভেতর ঘুমিয়ে থাকা চালক পারভেজ। পুলিশ উদ্ধার করে তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাকে। স্কুলবাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
ঢাকা/মেহেদী