রাঙামাটিতে গুর্খা সম্প্রদায়ের ‘ভৈল-ঢেওসি’ উৎসব
Published: 21st, October 2025 GMT
রাঙামাটি পার্বত্য অঞ্চলের বসববাসরত নেপালের বংশোদ্ভুত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা সম্প্রদায়ের দেওয়ালী পূজা (কালি পূজা) উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী ঐতিহবাহী ‘ভৈল-ঢেওসি’ উৎসব বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয়েছে।
দেওয়ালী পূজাকে (কালিপূজা) সামনে রেখে সোমবার ও মঙ্গলবার দুই দিনব্যাপী নেপালের বংশদ্ভুত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা সম্প্রদায় সুদীর্ঘকাল থেকে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে এই উৎসব পালন করে আসছে।
উৎসবের প্রথম দিনকে ‘ভৈল’ ও দ্বিতীয় দিনকে বলা হয় ‘ঢেওসি’। নেপালের বংশদ্ভুত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা সম্প্রদায়ের আবাল, বৃদ্ধা, বণিতারা সবাই এই উৎসবে মেতে উঠে দুইদিন আনন্দে মেতে ওঠে।
এই দুইদিন গুর্খা সম্প্রদায়ের আবাল বৃদ্ধা বণিতা সবাই কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে সন্ধ্যার পর পাড়ায় পাড়ায় মানুষের বাসা-বাড়িতে গিয়ে বাঁশের লাঠি হাতে মাটিতে ঠুকে সুরের তালে তালে কবিতার ছন্দে গান গেয়ে শুভেচ্ছা উপহার চাউল, টাকা, তরিতরকারী, বিশেষ পানীয় (পাহাড়ি মদ), সংগ্রহ করে থাকে। এই সময় নাচ-গানসহ ঘরে ঘরে মোমবাতির আলো জ্বালিয়ে ও রাতভর আনন্দে মেতে থাকে।
এই সমস্ত জিনিস সংগ্রহ করে পরবর্তীতে সবাই মিলে বনভোজনের আয়োজন করে থাকে। দ্বিতীয় দিনে ভাই টিকা দেওয়া হয়। দধিতে চাউল মিশিয়ে ভাই বোন একে অপরকে তাজ পরিয়ে দেওয়ার মধ্যদিয়ে শেষ হয় দুই দিনব্যাপী ঐতিহবাহী ‘ভৈল-ঢেওসি’ উৎসব।
রাঙামাটি শহরের জেল সড়কের কন্ট্রাক্টর পাড়া, মাঝেরবস্তি, আসামবস্তি ও গর্জনতলীসহ অন্যান্য পাড়া মহল্লায় নেপালের বংশোদ্ভুত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা সম্প্রদায়ের মানুষ ‘ভৈল-ঢেওসি’ উৎসবে মেতে উঠতে দেখা যায়।
দেওয়ালী পূজাকে (কালি পূজা) সামনে রেখে রাঙামাটি জেলায় বসবাসকারী নেপালের বংশোদ্ভুত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা সম্প্রদায়ের মানুষরা সুদীর্ঘকাল থেকে বিপুল উৎসাহি উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে এই ‘ভৈল-ঢেউসি’ উৎসব পালন করে আসছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গেজেটের এস, আর ও, নং-৭৮-আইন-২০১৯, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০(২০১০ সনের ২৩ নং আইন) এর ধারা ১৯-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার উক্ত আইনের তফসিলের পরিবর্তে নিম্নরূপ নতুন তফসিল প্রতিস্থাপন করে তফসিল ধারা ২(১) ও ধারা ১৯ দ্রষ্টব্যের ক্রমিক নং ৩০-এ গুর্খা সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ঢাকা/শংকর/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিজয় বইমেলা ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির (বাপুস) উদ্যোগে আগামী ১০ ডিসেম্বর বাংলা একাডেমি মাঠে শুরু হচ্ছে ‘বিজয় বইমেলা ২০২৫’। মেলাটি চলবে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দেশের প্রায় ২০০ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে এ মেলায়।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলা একাডেমির আল মাহমুদ লেখক কর্নারে সংবাদ সম্মেলন করে বইমেলা আয়োজনের তথ্য জানায় বাপুস। আয়োজকেরা জানান, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস হওয়ায় মেলাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আয়োজনটি শুধু বই বিক্রির মেলা নয়; বরং বই পড়া বাড়ানোর একটি উদ্যোগ হতে যাচ্ছে।
১০ ডিসেম্বর বিকেল চারটায় বিজয় বইমেলা ২০২৫-এর উদ্বোধন হবে। বিজয় বইমেলা প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ছুটির দিনে মেলা শুরু হবে বেলা ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
মেলা সম্পর্কে প্রথমা প্রকাশনের উপব্যবস্থাপক কাউসার আহমেদ বলেন, ‘শিশু থেকে বড়—সবাই যেন বই পড়তে আগ্রহী হয়, সেটি নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।’
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বইমেলাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আয়োজনের পরিকল্পনাও জানিয়েছে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস)। বিজয় বইমেলা ২০২৫–এর আয়োজনে ১৫টি দেশের দূতাবাসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানালেন মেলার আয়োজকেরা।
বিজয় বইমেলা উদ্যাপন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বাপুসের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির পরিচালক আবুল বাশার ফিরোজ শেখ বলেন, ‘অমর একুশে বইমেলা যেমন একটি সর্বজনীন উৎসব, বিজয় বইমেলা নামে তেমনি আরেকটি উৎসব আমরা জাতিকে উপহার দিতে চাই। আমাদের পরিকল্পনা আছে দেশের ৬৪ জেলায় বইমেলা করার।’
রেনেসা পাবলিকেশনের প্রকাশক সাবাহ খালেদ বলেন, ‘আগামী বছর আমরা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বইমেলার আয়োজন করতে যাচ্ছি। আমরা চাই সকল শ্রেণির পাঠক যেন বইমেলায় অংশ নিতে পারে।’
বিজয় বইমেলায় শিশুদের জন্য থাকছে গল্প বলার প্রতিযোগিতা, পুতুলনাচ, ম্যাজিক শো, বায়স্কোপসহ আরও অনেক কিছু। এ ছাড়া ১১ থেকে ২২ ডিসেম্বর প্রতিদিন থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন।