রোনালদোকে ছাড়াই ভারতে গেছে আল নাসর
Published: 21st, October 2025 GMT
এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে ভারতে পৌঁছেছে আল নাসর। আগামীকাল সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে মারগাওয়ের পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে গ্রুপপর্বের ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ এএফসি গোয়া। গত আগস্টে টুর্নামেন্টের ড্র হওয়ার পর থেকেই ম্যাচটি আলোচনায় ছিল।
তবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু আসলে আল নাসর বনাম গোয়া নয়, ছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ধারণা করা হচ্ছিল, রোনালদোও ভারতে যাবেন দলে সঙ্গে। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উন্মাদনায় মেতেছিলেন ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীরা। অনেকেই আগেভাগে টিকিট কেটে রেখেছিলেন, শুধু একবার রোনালদোকে দেখবেন বলে।
কিন্তু যত দিন গড়িয়েছে, বেড়েছে অনিশ্চয়তা। এক সময় শোনা গেল, রোনালদো হয়তো বিশ্রামে থাকবেন। শেষ পর্যন্ত সেটিই সত্যি হলো—রোনালদোকে ছাড়াই এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে ভারত গেছে আল নাসর।
আরও পড়ুনরোনালদোরা খেলবেন ভারতে, প্রতিপক্ষ কোন দল১৬ আগস্ট ২০২৫স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, রোনালদোর সঙ্গে আল নাসরের চুক্তিতে এমন একটি ধারা আছে, যাতে তিনি সৌদি আরবের বাইরে কোন ম্যাচে খেলবেন, তা নিজেই ঠিক করতে পারেন। হয়তো সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছেন তিনি। ভারত সফরের বদলে বেছে নিয়েছেন বিশ্রাম।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, এফসি গোয়া রোনালদোকে ভারতে আনার ব্যাপারে একাধিকবার অনুরোধ জানিয়েছিল আল নাসরকে। শেষ পর্যন্ত সে অনুরোধ রাখা হয়নি।
রোনালদোর অনুপস্থিতির কারণও খুব অজানা নয়। আগামী বছরের বিশ্বকাপের প্রস্তুতি এবং নিজের শরীরের ওপর বাড়তি চাপ কমাতেই এখন ম্যাচ বেছে বেছে খেলছেন তিনি। এর আগেও গ্রুপপর্বে ইরাকের আল-জাওরা ও মালদ্বীপের এফসি ইস্তিকলোলের বিপক্ষে খেলেননি পর্তুগিজ কিংবদন্তি, তবে দুই ম্যাচেই জয় পেয়েছে আল নাসর। গোয়ার বিপক্ষেও সেই জয়ের ধারা ধরে রাখতে চায় তারা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে সামরিক শক্তি বাড়ানোর ঘোষণা ট্রাম্পের
তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীনের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাঁর মিত্রদের সামরিক শক্তি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর প্রশাসনের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্রে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে সংবেদনশীল কূটনৈতিক ইস্যুগুলোর একটি তাইওয়ান। শুক্রবার প্রকাশিত ট্রাম্প প্রশাসনের ওই নথিতে এ ইস্যু নিয়ে ওয়াশিংটন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করল।
এমন সময় নথিটি প্রকাশ করা হলো, যখন পূর্ব এশিয়ার জলসীমায় নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক শক্তি প্রদর্শন করেছে চীন। এর মধ্য দিয়ে দেশটি মূলত গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত তাইওয়ান ও জাপানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘সামরিক প্রাধান্য বজায় রেখে তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট যেকোনো সম্ভাব্য সংঘাত এড়ানোই আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।’
চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে। দ্বীপটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনে শক্তি ব্যবহার করার কথা কখনোই অস্বীকার করেনি দেশটি। দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরো এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চীন। এ নিয়ে আশপাশের ছোট ছোট দেশগুলোর সঙ্গে তাদের বিরোধ দীর্ঘদিনের।
ওয়াশিংটনের সঙ্গে তাইওয়ানের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রই দ্বীপটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমর্থক। মার্কিন আইনে তাইওয়ানকে আত্মরক্ষায় সহায়তা দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। এ ইস্যুই বহু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের একটি বড় অস্বস্তির জায়গা।
চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে। দ্বীপটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনে শক্তি ব্যবহার করার কথা কখনোই অস্বীকার করেনি দেশটি।ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্রণীত ২০১৭ সালের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্রের একটি বাক্যে তাইওয়ানের কথা তিনবার উল্লেখ করা হয়েছিল। আর নতুন কৌশলপত্রে তিনটি অনুচ্ছেদজুড়ে আটবার তাইওয়ানের উল্লেখ আছে। নথিতে বলা হয়েছে, ‘তাইওয়ানকে ঘিরে এত মনোযোগ থাকা স্বাভাবিক।’ বাণিজ্যসমৃদ্ধ জলপথে এর কৌশলগত অবস্থান এবং বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে দ্বীপটির আধিপত্যই এই মনোযোগের প্রধান কারণ।
নথিতে আরও বলা হয়েছে, জাপান থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পর্যন্ত দ্বীপমালায় যুক্তরাষ্ট্র এমন সামরিক সক্ষমতা গড়ে তুলবে, যা যেকোনো আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে পারবে। তবে এককভাবে সবকিছু করা সম্ভব নয়। এ জন্য মিত্রদের এগিয়ে আসতে হবে, ব্যয় বাড়াতে হবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো— সমষ্টিগত প্রতিরক্ষার জন্য আরও বেশি পদক্ষেপ নিতে হবে।
তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনা বাড়লে ট্রাম্প কীভাবে এর প্রতিক্রিয়া জানাবেন, সে বিষয়ে তিনি এখনো পর্যন্ত কিছুই বলেননি। অবশ্য তাঁর আগের মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বারবার বলেছেন, চীন আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষা করবে।
আগামী বছরের এপ্রিলে ট্রাম্প বেইজিং সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। সেখানে দুই দেশের নেতারা তাদের মধ্যকার বাণিজ্যিক লড়াই প্রশমিত করার ব্যাপারে আলোচনা করবেন।চুক্তি করার প্রবণতা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার চেষ্টা— এসব কারণে টোকিও থেকে ম্যানিলা পর্যন্ত অনেক দেশে শঙ্কা বাড়ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো তাইওয়ান ও আঞ্চলিক মিত্রদের প্রতি সমর্থন কমাবে।
আগামী বছরের এপ্রিলে ট্রাম্প বেইজিং সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। সেখানে দুই দেশের নেতারা তাদের মধ্যকার বাণিজ্যিক লড়াই প্রশমিত করার ব্যাপারে আলোচনা করবেন।
গত মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি পার্লামেন্টে বলেন, তাইওয়ানে চীনের কোনো হামলা যদি জাপানের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে, তবে জাপান সামরিক প্রতিক্রিয়া জানাবে। এতে বেইজিং তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে।