বাংলা চলচ্চিত্রের অমর নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর প্রায় তিন দশক পর আবারো নতুন মোড় নিয়েছে তার মৃত্যুর রহস্য। আদালতের নির্দেশে তার অপমৃত্যুর মামলা, হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে পুলিশ। 

প্রায় ২৯ বছর পর সালমান শাহ হত্যা মামলার তদন্তে নেমেছে রমনা থানা পুলিশ। তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশ গিয়েছিল সেই ফ্ল্যাটে—যেখানে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পাওয়া গিয়েছিল সালমান শাহর নিথর দেহ।  

আরো পড়ুন:

সালমান শাহ হত্যা মামলায় স্ত্রী সামিরা-ডনসহ ১১ জন আসামি

সালমান শাহর মৃত্যু: রিভিশন মামলার শুনানি শেষ, আদেশ ২০ অক্টোবর

রাজধানীর ইস্কাটন প্লাজার বাসাটি তখন ভাড়া নিয়েছিলেন সালমান শাহ ও তার স্ত্রী সামিরা হক। নায়কের মৃত্যুর পর ফ্ল্যাটটি সিলগালা করা হয়েছিল, বর্তমানে সেখানে বসবাস করছেন নতুন মালিক। পুলিশ ঘুরে ঘুরে দেখেছে ফ্ল্যাটটির প্রতিটি কোণ, সংগ্রহ করেছে প্রয়োজনীয় তথ্যও। 

গত ২০ অক্টোবর, মধ্যরাতে রমনা থানায় হত্যা মামলাটি করেন সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হককে। এছাড়া অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, খলনায়ক ডনসহ মোট ১১ জন। এজাহারে আরো কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির নামও উল্লেখ করা হয়েছে। 

সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম বলেন, “সালমান শাহর বাবা একজন ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। তিনি জীবিত থাকাকালেই অপমৃত্যুর মামলা, হত্যা মামলা হিসেবে নেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন। চেষ্টা করতে করতে তিনিও চলে গেছেন। এখন এতদিন পর সেটি সম্ভব হয়েছে। ইনশাআল্লাহ প্রমাণ হবে—এটা হত্যা ছিল।” 

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তখন একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছিল। তার অকালমৃত্যুকে ঘিরে তৈরি হওয়া রহস্যের জট এবার নতুন করে খোলার অপেক্ষায় পুরো দেশ।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

বাস্তবের ‘জীবন নিয়ে খেলা’

সাধারণত এ ধরনের ঘটনা দেখা যায় সিনেমাতে। যেমনটি দেখা গিয়েছিল রঞ্জিত মল্লিক অভিনীত ‘জীবন নিয়ে খেলা’ সিনেমায়। এবার বাস্তবেই ধরা দিল সেই ঘটনা।

পাবনার চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ‘গরীবের ডাক্তার’ খ্যাত আলমগীর হোসেনের বদলি বাতিল করে বর্তমান কর্মস্থলে বহাল রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় মানুষ।

সেই সঙ্গে নানা অনিয়ম, চিকিৎসা বাণিজ্য এবং রোগী হয়রানির অভিযোগে একই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক বুলবুলকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এক্ষেত্রে জীবন নিয়ে খেলা সিনেমার দুটি চরিত্রের কথা মনে পড়ে। রঞ্জিত মল্লিক অভিনয় করেছিলেন ডা. শুভঙ্কর সান্যালের চরিত্রে। আর ডা. নারায়ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মনোজ মিত্র।

যেখানে শুভঙ্কর স্যানালকে পাওয়া যায় রোগ-শোকে আক্রান্ত গরিব, দুঃখী মানুষের আস্থার প্রতীক হিসেবে। তার উল্টো চরিত্র ডা. নারায়ণ, যাকে দেখা যায় চিকিৎসকের নামে গরিবের রক্ত চোষা হিসেবে।

পাবনার চাটমোহরেও স্থানীয় মানুষদের মানববন্ধনের মাধ্যমে সামনে এসেছে এমন দুটি চরিত্র। যেখানে আলমগীরকে হাসপাতালে রাখার জন্য রাস্তায় নেমেছে জনতা। সেখানে ডা. ওমর ফারুককে বিতাড়িত করতে দাবি তুলেছে তারা।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সচেতন নাগরিক সমাজ, চাটমোহরের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় দাপ্তরিক কাজে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা পাবনার সিভিল সার্জনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আসাদুজ্জামান লেবু, মোতালেব হোসেন, তানভীর জুয়েল লিখন, শাহীন হোসেন, ফুলচাঁদ হোসেন শামীম, হাসানুজ্জামান সবুজ, ফয়সাল কবীর, সাজেদুর রহমান সেজান, ইমরান হোসেন, হাসিনুর রহমান, জান্নাতুন নাঈম জুঁই প্রমুখ।

বক্তারা অভিযোগ করেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে পাবনা সদর হাসপাতাল বা রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানো হয়। ভর্তি রোগীরাও সঠিক সেবা পান না। এছাড়া হাসপাতালের অভ্যন্তরে দুর্নীতি, চিকিৎসা বাণিজ্য ও প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা এখন নিয়মিত চিত্র হয়ে উঠেছে।

তারা বলেন, ডা. আলমগীর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে গরিব ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। তিনি অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা লিখতেন না এবং কোনো কমিশনভিত্তিক সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। যে কারণে গরীবের ডাক্তার হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। তার এই মানবিক আচরণ ও সততা হাসপাতালের কিছু চিকিৎসক ও টেস্ট সিন্ডিকেটের স্বার্থে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সেই কারণে তাকে মাত্র এক বছরের মাথায় বদলি করা হয়েছে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, আর এসবের পেছনে কলকাঠি নাড়ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক বুলবুল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই হাসপাতালে থাকায় সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তার মনমতো না চললে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেন। নানা অনিয়মে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি। তার কারণে ভাল কোনো চিকিৎসক এখানে বেশি দিন থাকতে পারেন না।

বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে ডা. আলমগীর হোসেনের বদলি বাতিল করে বর্তমান কর্মস্থলে বহাল রাখা এবং ডা. ওমর ফারুক বুলবুলকে চাটমোহর থেকে অপসারণেল দাবি জানান।

সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘তিন কার্যদিবসের মধ্যে ডা. আলমগীর হোসেনকে চাটমোহর হাসপাতাল ফেরানো হবে। একইসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ওমর ফারুক বুলবুলের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।’’

অভিযোগের বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক বুলবুল বলেন, ‘‘সকালে হাসপাতালে ছিলাম না। আমার ডিউটি বিকেলে ছিল। তাই ওই সময়ে কি হয়েছে জানি না। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ বলা হয়েছে তা ঠিক নয়। ডা. আলমগীরকে বদলির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’’

ঢাকা/শাহীন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মির্জা ফখরুলের সঙ্গে মঙ্গোলিয়ার অনাবাসিক রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
  • ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেবে, আশা মির্জা ফখরুলের
  • এক ডাক্তারের বদলি বাতিল, আরেকজনের অপসারণ চাইলেন চাটমোহরবাসী
  • বাস্তবের ‘জীবন নিয়ে খেলা’