ভেসে ওঠা রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে পর্যটকদের ভিড়
Published: 24th, October 2025 GMT
প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর আবার উন্মুক্ত হয়েছে রাঙামাটির পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ ঝুলন্ত সেতু। আজ শুক্রবার সকাল থেকেই সেতুটিতে পর্যটকেরা ভিড় করছেন। এর আগে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ার গত ৩০ জুলাই সেতুটিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
জেলা পর্যটন করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড়ধস ও দুর্যোগের ঘটনার পর থেকে প্রতি বর্ষায় সেতুটি পানিতে তলিয়ে যাওয়া শুরু হয়। কাপ্তাই হ্রদের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়া এর অন্যতম কারণ। চলতি বছর ভারী বৃষ্টিতে সেতুটির অন্তত ৪ ফুট পানির নিচে তলিয়ে ছিল। বৃষ্টি কমায় ধীরে ধীরে এ সেতুর পাটাতন ভাসতে থাকে। একপর্যায়ে গত বুধবার এর পাটাতন ভেসে ওঠে। গতকাল বৃহস্পতিবার এটি মেরামত করা হয়। পরে আজ এটি চালু করা হয়।
উন্মুক্ত হওয়া এ সেতুতে উঠতে প্রথম দিনেই ভিড় করেছেন কয়েক শ পর্যটক। বেলা তিনটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুতে পর্যটকেরা উচ্ছ্বাস। তাঁদের কেউ ছবি তুলছেন, আবার কেউ প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা স্বর্ণা আক্তার বলেন, তিনি প্রথমবারের মতো সেতুটিতে এসেছেন। গতকালকেই এটি উন্মুক্ত হয়েছে এমন খবর পেয়েছেন। প্রিয়জনদের সঙ্গে সেতুতে দাঁড়িয়ে পাহাড়ঘেরা হ্রদ দেখতে তাঁর ভালো লাগছে।
ঝুলন্ত সেতুর কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা মো.
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, হ্রদের পানি কমায় সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সেতুটি থেকে গড়ে দৈনিক পাঁচ হাজার টাকা আয় হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুটি নির্মাণ করে। পরে এটি রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেতুটি নির্মাণের পর সারা দেশ থেকে পর্যটকেরা এটি দেখতে ছুটে আসতে শুরু করেন। এখনো সেতুটি দেখতে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ দর্শনার্থী আসেন এবং প্রতিবছর অন্তত অর্ধকোটি টাকা আয় হয় বলে জানিয়েছে পর্যটন করপোরেশন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে
সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে কক্সবাজারের নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাটে হাজির হয় ১১ পর্যটকের একটি দল। তবে ঘাটে পৌঁছানোর আগেই নির্ধারিত জাহাজ ছেড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলের সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও ঘাটে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে। দলের একজন নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর ঘাটে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পরে বিপাকে পড়তে হয় ওই পর্যটক দলের সদস্যদের। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, বাঁকখালী নদীর জোয়ার–ভাটা একেক সময় একেক রকম। জোয়ার–ভাটা বিবেচনায় নিয়ে জাহাজ ছাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। ইউএনওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ওই পর্যটক ঘাটে এসে জাহাজ দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম ইব্রাহিম। তিনি হয়তো ঘাটে থাকা ইউএনওকে চিনতে পারেননি। সাধারণ নারী মনে করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে আরেকটি জাহাজে পর্যটকদের ওই দল সেন্ট মার্টিনে যায়।
জানতে চাইলে কক্সবাজার সদরের ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে কেন জাহাজ ছেড়ে গেছে, এ বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন ইব্রাহিম নামের ওই ব্যক্তি। এ সময় নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবি করে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, আমাকে গ্রেপ্তার করতে। এ ঘটনার ভিডিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে বলার এখতিয়ার রাখেন না।’
ইউএনও বলেন, পর্যটকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটায় সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ে। কয়েকটি জাহাজে দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুযোগ রাখা হয়। জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন যাতে করা না হয়, সে বিষয়টি তদারকি করে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি।
১ ডিসেম্বর কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে রাত্রী যাপনের সুযোগও রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের সরকার ঘোষিত ১২টি নির্দেশনা মেনে চলতে হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।