শেরপুর-১ (সদর) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলামের গণসংযোগে বিএনপির নেতা-কর্মী হামলা করেছে বলে দলটি অভিযোগ করেছে। স্থানীয় জামায়াত নেতা-কর্মীদের দাবি, ‎এ ঘটনায় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতিসহ ১০ জন আহত হন। তবে অভিযোগটিকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করেছেন জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার ১০ নম্বর চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের ডাকপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ হামলায় বিএনপিকে দায়ী করে গতকাল সন্ধ্যায় শহরে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জামায়াতের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।

জেলা জামায়াতের নেতাদের ভাষ্য, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে গতকাল বিকেলে চরপক্ষীমারী ইউনিয়নে গণসংযোগ চলছিল। প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম নেতা-কর্মীদের নিয়ে ডাকপাড়া গ্রামে গেলে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। এতে জামায়াতের নেতা-কর্মীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে আশপাশের লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। ছাত্রশিবিরের জেলা শাখার সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম ও পৌর ওয়ার্ডের সভাপতি রাকিব ইসলামকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আটজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় রাশেদুল ইসলাম ও জেলা জামায়াতের আমির হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে সংক্ষিপ্ত পথসভায় জানানো হয়, বিএনপির লোকজন পরিকল্পিতভাবে তাঁদের ওপর এ হামলা চালিয়েছে। এতে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবিও জানানো হয়।

অন্যদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল রাত ১০টার দিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে দলটির পক্ষ থেকে শেরপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বিএনপির নেতারা দাবি করেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা ধর্মের কথা বলে ডাকপাড়া গ্রামে গণসংযোগ করতে যান। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের ফিরিয়ে দেন এলাকাবাসী। এটিকে হামলা বলে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে জামায়াত।

এ বিষয়ে জেলা জামায়াতের আমির হাফিজুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে থানায় মৌখিকভাবে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

অভিযোগটিকে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক  সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিএনপি বা এর অঙ্গ সহযোগী কোনো সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা ওই হামলার সঙ্গে জড়িত নন। এলাকাটির লোকজন জামায়াতের নেতা-কর্মীদের ফিরিয়ে দিয়েছেন, সেটিকে তাঁরা বিএনপির হামলা বলে বেড়াচ্ছেন। বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছেন।

শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবায়দুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় গতকাল রাত পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র ন ত ল ইসল ম গণস য গ এ ঘটন গতক ল র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টির অস্তিত্ববিহীন সংসদ গঠনের আহ্বান নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর

বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী।

দলগুলোকে গণতন্ত্রের পথে থাকার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেছেন, ‘আপনারা আসুন, একসঙ্গে আমরা একটি নতুন রাষ্ট্র নির্মাণ করব। আগামী সংসদ গঠন করব, যে সংসদে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির নামের অস্তিত্ব বাংলাদেশে থাকবে না।’

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিএম ভবনে ‘মাজার সংস্কৃতি : সহিংসতা, সংকট ও ভবিষ্যৎ ভাবনা’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। সংলাপের আয়োজন করে সুফিবাদী প্ল্যাটফর্ম মাকাম। সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি নিয়ে আজকে এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে গিয়েছে। তাদের মূল দাবি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ও অধ্যাদেশ জারি করা।

জুলাই সনদে যেন শেখ হাসিনার অন্যতম দোসর ও সহযোগীরা স্বাক্ষর না করে সে বিষয়ে জনমত গঠনের আহ্বান জানান নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী।  সনদে অধ্যাপক ইউনূসকে স্বাক্ষর করতে হবে বলেন তিনি।

জনতার রক্তের ওপর দিয়ে এই সরকার গঠিত হয়েছে বলেন এনসিপির এই মুখ্য সংগঠক। তাই ‘একটু রিস্ক নিয়ে হলেও’ জুলাই সনদের অধ্যাদেশ এবং আইনি ভিত্তি সুন্দরভাবে জনগণের সামনে হাজির করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানান তিনি । রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আলোচনার ভিত্তিতে দ্রুত একটা সমাধান করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে তাঁরা যেতে চান। তবে সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় বাধা দিলে  নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর নির্বাচন  ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাংলাদেশ সংকটের জায়গায় যাবে।

নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, বর্তমান আলেম-ওলামা প্রজন্মের মধ্যে যারা রাজনীতি, অর্থনীতি ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, তারা একটি 'মিলন মেলা' জায়গায় আসার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, মাঠে মারামারি, ভাঙচুর বা এই ধরনের অসভ্য কাজগুলো বাংলাদেশে আর হবে না। এই ধরনের সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য মাজার খানকা বিষয়ক একটি কমিশন গঠনের প্রস্তাবনার কথাও বলেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ