জামায়াতে ইসলামী দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জাতীয় সংসদে প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, “তখন প্রবাসীরা দুনিয়ার যেখানেই থাকুন, তারা অনুভব করবেন ‘আমিও বাংলাদেশ, আমিই বাংলাদেশ’। আমরা সেই বাংলাদেশ বানাতে চাই।”

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরায় সাংবাদিকের ওপর জামায়াত নেতাকর্মীদের হামলা

টঙ্গীর নিখোঁজ খতিব পঞ্চগড়ে উদ্ধার: প্রকৃত ঘটনা জানতে চায় জামায়াত

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা জামায়াত আমির স্থানীয় সময় শুক্রবার নিউইয়র্কের বাফেলোতে ‘বাংলাদেশ আমেরিকান কমিউনিটি, বাফেলো' আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বক্তব্যে দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদান ও তাদের ত্যাগের কথা তুলে ধরেন শফিকুর রহমান। স্মরণ করেন রক্তাক্ত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশে রেমিট্যান্স না পাঠিয়ে পতিত শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি প্রতিবাদ ও অনাস্থা প্রকাশের ঘটনাকে।

শফিকুর রহমান বলেন, “আপনাদের এ (রেমিট্যান্স না পাঠানোর) সিদ্ধান্ত জালিমের পায়ের তলার মাটি সরিয়ে ফেলেছিল। কুর্শি তরতর করে কেঁপে উঠেছিল।”

“যদি আল্লাহ তায়ালা আমাদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেন সেবক হিসেবে, এই দাবি (সংসদে প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্ব) বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাল্লাহ। প্রবাসে বাংলাদেশের কতজন মানুষ বসবাস করে, কতজন নরনারী, শিশু, আবালবৃদ্ধবনিতা-টোটাল পপুলেশনের সঙ্গে আমরা মিলিয়ে দেখব কত পার্সেন্ট। যত পার্সেন্ট মানুষ বিদেশের মাটিতে বসবাস করে আমরা সংসদে তত পার্সেন্ট প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করব।”

জামায়াত আমির বলেন, “আমরা সারা বিশ্বকে একটা কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসতে চাই। ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাত এক জায়গায় এনে হাতগুলোকে আমরা মজবুত করতে চাই।”

বক্তব্যে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা, অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, বিচার ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক সম্পর্কসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের কর্মপরিকল্পনা ও অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরেন শফিকুর রহমান।

‘অহিংস মানবিক জাতি' গড়ে তোলার আশাবাদ ব্যক্ত করে জামায়াত আমির বলেন, “সভ্যতার মিছিলে মেয়েরা নেতৃত্ব দেবে। সম্মান ও নিরাপত্তা দুটোই নিশ্চিত করা হবে মেয়েদের।”

দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশী হতে নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের তাগিদও দেন তিনি। বলেন, “ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে ভুলবেন না। যার যাকে পছন্দ, যে দলকে পছন্দ, যে ব্যক্তিকে পছন্দ তাকে ভোট দেবেন। আমরা চাই যে ভোটটা দেওয়া হোক।”

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রথমবারের মতো বিদেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছে। এর ফলে প্রবাসীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে জামায়াত আমির বলেন, “তারা (প্রবাসীরা) দেশে আসে বুক ভরা আশা নিয়ে। বিমানবন্দরে পাড়া দিয়ে বলে—এ কোন জালিমের জনপদ? কোথায় আসলাম? এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে নিজের আপনজন পর্যন্ত প্রবাসী ভাইবোনদের ওপর জুলুম করতে পিছপা হন না।”

“তারা কেবল জোগান দিয়েই যাচ্ছেন। তাদের যেন কোনো কিছু পাওয়ার নাই। আমরা তাদেরকে বলি রেমিট্যান্স যোদ্ধা। কিন্তু বীরের মর্যাদা না দিয়ে কেবল বায়বীয় শব্দ দিয়ে প্রবাসীদের শান্ত রাখা হয়।”

সংবর্ধনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াত আমিরের সফরসঙ্গী ও ঢাকা-১৭ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ডা.

এসএম খালিদুজ্জামান বলেন, “প্রবাসীরা বরাবরই দেশে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। সবাই তাদের ব্যবহার করলেও ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। জামায়াত সরকার গঠন করলে প্রবাসীদের অধিকার রক্ষাকে প্রধান দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করবে।”

খালিদুজ্জামান প্রবাসী বাঙালিদের ভোটার হওয়ার জন্য বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ মিশন ও দূতাবাসগুলোতে যোগাযোগের তাগিদ দেন।

অধ্যাপক নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামী যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র অধ্যাপক নাকীবুর রহমান, অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ম য় ত আম র ন শ চ ত কর প রব স র

এছাড়াও পড়ুন:

লটারির পুরস্কার যখন পিকাসোর চিত্রকর্ম

পাবলো পিকাসোর চিত্রকর্মের বিশ্বজোড়া কদর। দামও আকাশছোঁয়া। সে জন্যই হয়তো শিল্পপ্রেমীদের অনেকেই পিকাসোর চিত্রকর্ম নিজের সংগ্রহে রাখার কথা কল্পনাও করতে পারেন না। তাঁদের জন্য বড় সুযোগ হতে পারে ফ্রান্সের একটি দাতব্য সংস্থার লটারি। ১০০ ইউরোর লটারির টিকিট কিনে মিলতে পারে পিকাসোর একটি চিত্রকর্ম।

এই লটারির টিকিট পাওয়া যাবে ‘ওয়ান পিকাসো হানড্রেড ইউরো ডটকম’ নামের একটি ওয়েবসাইটে। এর উদ্দেশ্য মহৎ। মোট ১ লাখ ২০ হাজার টিকিট বিক্রির অর্থ যাবে আলঝেইমার রোগ নিয়ে গবেষণায়। আগামী বছরের ১৪ এপ্রিল নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টির প্যারিস কার্যালয়ে বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

পিকাসোর ওই চিত্রকর্মে ‘ডোরা মার’ নামের এক নারীকে আঁকা হয়েছে। তিনি পিকাসোর একজন বড় পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। ১৯৪১ সালে আঁকা চিত্রকর্মটির শিরোনাম ‘তেত দ্য ফাম’। বাংলায় এর অর্থ হচ্ছে ‘নারীর মাথা’। কাগজের ওপর গোয়াশ রঙে আঁকা চিত্রকর্মটির উচ্চতা ১৫ দশমিক ৩ ইঞ্চি। চিত্রকর্মটির বর্তমান বাজারদর ১০ লাখ ইউরো বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগেও ওয়ান পিকাসো হানড্রেড ইউরো ডটকমে এমন লটারির আয়োজন করা হয়েছিল। প্রথমটি ২০১৩ সালে। সেবার লেবাননের তায়ার শহর রক্ষায় ৪৮ লাখ ইউরোর তহবিল জোগাড় করা হয়েছিল। আর পরেরবার ২০২০ সালে আফ্রিকায় পানির উৎস ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার জন্য তোলা হয়েছিল ৫১ লাখ ইউরো। ওই দুবারও কিন্তু পুরস্কার ছিল পিকাসোর দুটি চিত্রকর্ম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ