ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌর বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটিতে পদ পাওয়া ও পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে বোয়ালমারী বাজারে কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে এক পক্ষ। একই সময়ে ঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ালেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদাররেছ আলী ও সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়ার যৌথ স্বাক্ষরে ফরিদপুর-১ আসনের অধীন মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপিতে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট মোট ছয়টি কমিটি অনুমোদন করা হয়। ২০১৫ সালের পর তিন উপজেলায় এবারই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেওয়া হলো।

ঘোষিত কমিটিতে সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থকদের একচেটিয়া আধিপত্য দেখা যায়। অন্যদিকে বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী শামসুদ্দিন মিয়ার পক্ষের হাতে গোনা কয়েকজন কমিটিতে স্থান পান। কমিটি ঘোষণার পরপরই এক পাক্ষিক কমিটি গঠনের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেন শামসুদ্দিন মিয়ার সমর্থকেরা।

আজ বিকেলে বোয়ালমারী উপজেলা শহরের ওয়াপদার মোড়ে কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে প্রথমে মিছিল করেন শামসুদ্দিন মিয়ার সমর্থকেরা। পরে তাঁরা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ওয়াপদার মোড়ে মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক কিছুক্ষণের জন্য অবরোধ করেন। কমিটিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগের লোকজনকে স্থান দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাঁরা কমিটি বাতিলের দাবি জানান।

অন্যদিকে কমিটিতে স্থান পাওয়া খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থকেরা বিকেল পাঁচটার পরে স্থানীয় চৌরাস্তা থেকে আনন্দ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ডাকবাংলো সড়কে গিয়ে শেষ হয়। তাঁদের মিছিল থেকে তারেক রহমান ও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে অভিনন্দন জানানো হয় এবং ধানের শীষে ভোট চাওয়া হয়।

দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে শহরে আতঙ্ক থাকলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। থানা-পুলিশও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে। বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় ছিল। দুই পক্ষ শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘ ষ ত কম ট ব এনপ র কম ট ত উপজ ল র সমর

এছাড়াও পড়ুন:

কিশোরগঞ্জ-১: বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত চার নেতা এক মঞ্চে, একসঙ্গে বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত চার নেতা এক মঞ্চে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে প্রথমে পৃথক স্থানে সমাবেশ করেন তাঁরা। পরে একত্র হয়ে বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন ওই চার নেতা।

গত বৃহস্পতিবার এ আসনে বিএনপি মনোনয়ন দেয় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলামকে। প্রথম দফায় মনোনয়ন ঘোষণার সময় আসনটি ফাঁকা রেখেছিল বিএনপি। এ আসনে অন্তত আটজন মনোনয়নপ্রত্যাশী সক্রিয় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সবার প্রত্যাশা ভঙ্গ করে মাজহারুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি অন্যান্য মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতার বাড়িতে গিয়ে সহযোগিতা চান। তবে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়নি। অন্যদিকে তাঁর মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে আসছেন মনোনয়নবঞ্চিত নেতারা।

গতকাল সন্ধ্যায় শহরের স্টেশন রোডে নিজ কার্যালয়ে সমাবেশ করেন মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি রেজাউল করিম খান (চুন্নু)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম। একই সময়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে সমাবেশ করেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ (ভিপি সোহেল)। পরে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি রুহুল হোসাইন।

বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলামকে ‘অযোগ্য’ আখ্যায়িত করেন বক্তারা। একই সঙ্গে তাঁর মনোনয়নের জন্য জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমকে দায়ী করেন। তাঁকে ‘ষড়যন্ত্রকারী’ বলেও উল্লেখ করা হয়। অবিলম্বে মনোনয়ন বাতিল করে ‘যোগ্য ও ত্যাগী’ নেতাকে মনোনীত করার দাবি তোলেন তাঁরা। সমাবেশে রেজাউল করিম খান বলেন, ‘এটা আমার শেষ নির্বাচন। কাজেই এই নির্বাচনে অবশ্যই অংশ নেব।’

এ আসনে অন্তত আটজন মনোনয়নপ্রত্যাশী সক্রিয় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন মাজহারুল ইসলাম।

সমাবেশ শেষে রেজাউল করিম খান, রুহুল হোসাইন, শরিফুল ইসলাম ও খালেদ সাইফুল্লাহ—এই চার নেতা এক রিকশায় চড়ে শহরের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন। মিছিলে জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম ও মনোনীত প্রার্থী মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেওয়া হয়। পরে স্টেশন রোড এলাকায় জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
মনোনয়ন পাওয়া মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘বড় দলে অনেক প্রার্থী থাকাটাই স্বাভাবিক। সবাইকে তো আর মনোনয়ন দেওয়া যাবে না। আমার প্রতি দলের আস্থা আছে বলেই মনোনয়ন দিয়েছে। রাজনীতির শিষ্টাচার ও শালীনতা বজায় রাখা উচিত।’

জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম বলেন, ‘আমি মনে করি, দল যোগ্য লোককেই মনোনয়ন দিয়েছে। সবাইকে শান্ত থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁর জন্য কাজ করা উচিত। এমন কিছু করা ঠিক নয়, যা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। আমাদের সবার মনে রাখতে হবে, দেশনেত্রী এখন অসুস্থ। আন্দোলন-সংগ্রাম রেখে তাঁর জন্য দোয়া করা উচিত।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌনমিছিল
  • কিশোরগঞ্জ-১: বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত চার নেতা এক মঞ্চে, একসঙ্গে বিক্ষোভ