খুলনার মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ঢাকায় ডেকেছে বিএনপি, ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠক করবেন তারেক রহমান
Published: 26th, October 2025 GMT
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে খুলনা বিভাগের ৩৬টি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের ঢাকায় ডেকেছে বিএনপি। আগামীকাল সোমবার বিকেলে ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম (অমিত) বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রতিটি বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় করছেন। সেই ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবেই আগামীকাল খুলনা বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে। সেখানে দলের পরবর্তী কর্মপন্থা ও গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেবেন তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের ফোন ও খুদে বার্তার মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অনেকে ইতিমধ্যে ঢাকায় রওনা হয়েছেন, অন্যরা আজ রাতে রওনা হবেন।
খুলনা জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কেন্দ্রীয় অফিস থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছি, আজ ঢাকায় যাচ্ছি। ১৯৮৪ সাল থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আছি। দলের দুঃসময়ে আইনজীবী হিসেবে বিনা পারিশ্রমিকে মামলা লড়েছি, কারাগারেও গিয়েছি। আগে প্রতিকূলতার মধ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে হয়েছে, এখন তুলনামূলক স্বস্তির পরিবেশে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা সবাই তাঁর পক্ষে কাজ করব।’
কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৬ আসনটি ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট গঠনের পর জামায়াতে ইসলামীর জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পর থেকে এই আসনে জামায়াতের প্রভাব ও আধিপত্য ছিল। তবে এবার বিএনপি সেই আধিপত্য ভেঙে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে মাঠে নেমেছে।
স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা বলছেন, এ আসনে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে নতুন উদ্দীপনা ও জনসমর্থন গড়ে উঠেছে। অতীতে জামায়াতের প্রার্থী দুবার নির্বাচিত হলেও এবার বিএনপি সংগঠনের শক্তি ও গণসংযোগের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান মজবুত করছে। তাঁদের মতে, আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে বিএনপি ও জামায়াতের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এই আসনে। সে ক্ষেত্রে দলের কাছে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্য কাউকে প্রার্থী করা হলে জয় পাওয়া সহজ হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
কিশোরগঞ্জ-১: বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত চার নেতা এক মঞ্চে, একসঙ্গে বিক্ষোভ
কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত চার নেতা এক মঞ্চে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে প্রথমে পৃথক স্থানে সমাবেশ করেন তাঁরা। পরে একত্র হয়ে বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন ওই চার নেতা।
গত বৃহস্পতিবার এ আসনে বিএনপি মনোনয়ন দেয় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলামকে। প্রথম দফায় মনোনয়ন ঘোষণার সময় আসনটি ফাঁকা রেখেছিল বিএনপি। এ আসনে অন্তত আটজন মনোনয়নপ্রত্যাশী সক্রিয় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সবার প্রত্যাশা ভঙ্গ করে মাজহারুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি অন্যান্য মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতার বাড়িতে গিয়ে সহযোগিতা চান। তবে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়নি। অন্যদিকে তাঁর মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে আসছেন মনোনয়নবঞ্চিত নেতারা।
গতকাল সন্ধ্যায় শহরের স্টেশন রোডে নিজ কার্যালয়ে সমাবেশ করেন মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি রেজাউল করিম খান (চুন্নু)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম। একই সময়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে সমাবেশ করেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ (ভিপি সোহেল)। পরে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি রুহুল হোসাইন।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলামকে ‘অযোগ্য’ আখ্যায়িত করেন বক্তারা। একই সঙ্গে তাঁর মনোনয়নের জন্য জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমকে দায়ী করেন। তাঁকে ‘ষড়যন্ত্রকারী’ বলেও উল্লেখ করা হয়। অবিলম্বে মনোনয়ন বাতিল করে ‘যোগ্য ও ত্যাগী’ নেতাকে মনোনীত করার দাবি তোলেন তাঁরা। সমাবেশে রেজাউল করিম খান বলেন, ‘এটা আমার শেষ নির্বাচন। কাজেই এই নির্বাচনে অবশ্যই অংশ নেব।’
এ আসনে অন্তত আটজন মনোনয়নপ্রত্যাশী সক্রিয় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন মাজহারুল ইসলাম।সমাবেশ শেষে রেজাউল করিম খান, রুহুল হোসাইন, শরিফুল ইসলাম ও খালেদ সাইফুল্লাহ—এই চার নেতা এক রিকশায় চড়ে শহরের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন। মিছিলে জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম ও মনোনীত প্রার্থী মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেওয়া হয়। পরে স্টেশন রোড এলাকায় জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
মনোনয়ন পাওয়া মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘বড় দলে অনেক প্রার্থী থাকাটাই স্বাভাবিক। সবাইকে তো আর মনোনয়ন দেওয়া যাবে না। আমার প্রতি দলের আস্থা আছে বলেই মনোনয়ন দিয়েছে। রাজনীতির শিষ্টাচার ও শালীনতা বজায় রাখা উচিত।’
জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম বলেন, ‘আমি মনে করি, দল যোগ্য লোককেই মনোনয়ন দিয়েছে। সবাইকে শান্ত থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁর জন্য কাজ করা উচিত। এমন কিছু করা ঠিক নয়, যা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। আমাদের সবার মনে রাখতে হবে, দেশনেত্রী এখন অসুস্থ। আন্দোলন-সংগ্রাম রেখে তাঁর জন্য দোয়া করা উচিত।’