সিদ্ধিরগঞ্জে বিজেসির সাবেক শ্রমিক-কর্মচারীদের পূনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 26th, October 2025 GMT
ভূমি দাও, ঘর দাও এই শ্লোগানকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিজেসির সাবেক শত শত শ্রমিক ও কর্মচারীরা।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় বাংলাদেশ জুট কর্পোরেশন (বিজেসি) প্রেস হাউজে বসবাসরত সাবেক শ্রমিক, কর্মচারী ও ক্ষুদ্র লীজিগণদের দখলে থাকা ৪ একর জমি হস্তান্তর এবং ভূমিহীনদের পূনর্বাসনের দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শত শত নারী-পুরুষ এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
সাবেক বিজেসি গোদনাইল শ্রমিক, কর্মচারী ও ক্ষুদ্র লীজিগণ পূনর্বাসন কমিটির সভাপতি আমান হোসেন প্রধানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক বিমল চৌধুরীর সভাপতিত্বে উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বিজেসি গোদনাইলের সাবেক কর্মচারী হাজী মো; জয়নাল আবেদীন, সাবেক কর্মচারীর সন্তান মো: জাহাঙ্গীর হোসেন রাজু ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: লেয়াকত আলী লেকু।
মানববন্ধনে সাবেক কর্মচারী হাজী মো: জয়নাল আবেদীন তার বক্তব্যে বলেন, আমি ১৯৬১ সালে বিজিসিতে চাকরীতে অংশগ্রহণ করি এবং বর্তমানেও যুক্ত রয়েছি। বিগত ৫০ বছর আগে থেকে যারা চাকরীজীবি ছিলেন তাদের ছেলে-মেয়েরা আজও চাকরী করে এই বিজিসির বাসস্থানে লীজ ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন।
এখানে যারা বসবাস করছে সবাই ছিন্নমূল, কারো কোন বাড়ি-ঘর নাই। তাদের কোন জায়গা-জমি নেই, অসহায়। ১৯৯৩ সালে বিজিসি বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে এখানে কেউই মাগনা থাকে না, সবাই ভাড়া দিয়ে বসবাস করছে। আমরা জানতে পেরেছি বিজিসি এই সামান্য গরীব কর্মচারীর বসবাসের স্থানটা অন্য জায়গায় হস্তান্তর করছে। তাহলে আমরা কোথায় যাব।
আমাদের ভূমিহীনদের যদি একটা বিকল্প স্থান করে দিয়ে বিজিসি তার জমি অন্যত্র হস্তান্তর করুক আমাদের কোন আপত্তি নেই।
সাবেক কর্মচারীর সন্তান মো: জাহাঙ্গীর হোসেন রাজু বলেন, সরকারকে ট্যাক্স এবং ভাড়া পরিশোধ করে সবাই বসবাস করছে। বিগত সরকারের আমলে বলা হয়েছিল যারা এই বিজিসিতে বসবাস করে, যারা বিজিসিতে চাকরীজীবি ছিল, যারা শ্রমিকের কাজ করেছে তাদেরকে এই বাড়ি-ঘর লিজে দেওয়া হইল।
এগুলো যেন কখনো বাইরে কোন সংস্থার কাছে বিক্রি করা না হয়। যদি বিক্রি করা হয় তাদের মাঝেই বিক্রি করা হবে সরকারী যে দর আছে সেই দরে যদি ক্ষুদ্র লিজাররা এই সম্পত্তি কিনতে ইচ্ছুক মনে করলে। আমি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পাট উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টাদের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলছি, বিগত ফ্যাসীবাদী সরকার কখনোই শ্রমিক, কর্মচারী ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করতে চেষ্টা করেন নি।
এখানে হাজার হাজার শ্রমিক বসবাস করে। আপনারা ক্ষণিকের জন্য কারো ক্ষতি কইরেন না। আমি সরকারের কাছে আবেদন করব যেন এই গরীব-দু:খীদের উচ্ছেদ না করে এবং টাকার বিনিময়ে এই সম্পত্তি অন্যকারো কাছে হস্তান্তর না করে। যদি টাকার বিনিময়ে হস্তান্তর করতে হয় তাহলে এই লিজিদের, গরীব-দু:খীদের ব্যবস্থা করে দেন, সবার জন্য ভাল হবে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে বা
পার্বত্য চট্টগ্রামে জোরপূর্বক খ্রিস্টানকরণের মাধ্যমে খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে বান্দরবানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বান্দরবান প্রেস ক্লাবের সামনে ‘সর্বস্তরের খ্রিস্টান সম্প্রদায়’ ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন শতাধিক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।
আরো পড়ুন:
ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি বেরোবি শিক্ষার্থীদের
ইসকন সদস্যদের সন্ত্রাসবাদের প্রতিবাদে বুটেক্সে মানববন্ধন
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একটি দেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেই রাষ্ট্র গড়ে ওঠে। খ্রিস্টান হয়ে জন্ম নেওয়া কোনো অপরাধ নয়। এটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করা হচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলে সব সম্প্রদায়ের মানুষ নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করে আসছে। বাইবেল নিয়ে ধর্মীয় উপদেশ বা সভা-সমাবেশ করা মানে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র নয়।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা দেশের আইন মেনে চলি, জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি আমরা গভীরভাবে শ্রদ্ধাশীল। যে রাষ্ট্রে জন্মেছি, তাকে ধ্বংস করার কোনো ষড়যন্ত্র আমরা করতে পারি না।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য লালজার লম বম, মানবাধিকার কর্মী লেলুং খুমী, জামান সাইলুক, দিনেন্দ্র ত্রিপুরা ও জজ ত্রিপুরা। এ সময় বান্দরবানের বিভিন্ন চার্জের পাদ্রীরাও উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পার্বত্য চট্টগ্রামের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বলছে, এখানে স্থানীয়দের জোরপূর্বক খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তর করা হচ্ছে।
এ ধরনের অপপ্রচার পার্বত্য চট্টগ্রামের মাত্র ৩.২৬ শতাংশ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য অপমানজনক, অস্বস্তিকর এবং অপবাদমূলক। এটি তাদের অস্তিত্বকে ধ্বংসের লক্ষ্যে পরিচালিত একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
এতে আরো বলা হয়েছে, স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে সব নাগরিকের সমানভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগের সাংবিধানিক অধিকার থাকলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের খ্রিস্টানরা ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নানা সময় হয়রানির শিকার হচ্ছেন-যা সংবিধান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
ঢাকা/চাই মং/মেহেদী