শ্রম উপদেষ্টার সঙ্গে জার্মান সংসদ সদস্যের সাক্ষাৎ
Published: 26th, October 2025 GMT
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে জার্মান ফেডারেল প্রজাতন্ত্রের সংসদ সদস্য বরিস মিজাতোভিচ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে উপদেষ্টার এ সাক্ষাৎ করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
‘জাতিসংঘে ভেটো ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা জরুরি’
নৌ উপদেষ্টার সঙ্গে আরব আমিরাতের জ্বালানি ও অবকাঠামো মন্ত্রীর বৈঠক
সাক্ষাৎকালে শ্রম ও নৌপরিবহন খাতের বিভিন্ন বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিনিময় হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল, বাংলাদেশের শ্রম খাতের উন্নয়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার, বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরদার এবং বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে জিআইজেডের (জার্মান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা) কার্যক্রম।
বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় ও প্রতিশ্রুতিশীল জাহাজ শিল্পে জার্মান বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সামুদ্রিক দেশ। মাতারবাড়িতে নির্মাণাধীন একটি গভীর সমুদ্রবন্দর ছাড়াও দেশের আরো তিনটি সমুদ্রবন্দর রয়েছে। এছাড়া ৫৪টি অভ্যন্তরীণ নদী বন্দর রয়েছে।”
তিনি বলেন, “দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সামুদ্রিক খাতের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ কারখানাগুলোতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মিত হচ্ছে এবং এসব জাহাজ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। জার্মান বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের ক্রমবিকাশমান জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ করে দক্ষ ও সাশ্রয়ী শ্রমবাজারের সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন।”
মাতারবাড়িতে একটি আন্তর্জাতিকমানের ডকইয়ার্ড নির্মাণেও জার্মান বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) কাউন্সিলের আসন্ন ২০২৬-২৭ মেয়াদে ক্যাটাগরি ‘সি’ এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে উল্লেখ করে ড.
বৈঠকে নৌপরিবহন উপদেষ্টা জাহাজ নির্মাণ শিল্প, বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নসহ অন্যান্য খাতে বাংলাদেশ ও জার্মানির বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরো জোরদার করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উপদেষ্টা শ্রমিক অধিকার রক্ষা, শোভন কর্মপরিবেশ ও পেশাগত স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি জার্মান সংসদ সদস্যের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ক্রেতা ব্র্যান্ডগুলোর কাছে বাংলাদেশের তৈরি পণ্যের জন্য প্রত্যাশিত ন্যায্য মূল্য (ফেয়ার প্রাইজ) নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
উভয় পক্ষই শ্রম ও নৌপরিবহন খাতে পারস্পরিক সম্পর্ক আরো সম্প্রসারণ এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নতুন সুযোগ সৃষ্টির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) দেলোয়ারা বেগম, বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ, গবেষণা সহকারী ডেনিজ-ক্যাথরিন বেনটেলে এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন পর বহন উপদ ষ ট সহয গ ত সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
৩ দফা দাবিতে ঢাবির প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করলেন ডাকসু নেতারা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) তহবিলের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ ও বরাদ্দকৃত অর্থ হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন ডাকসু ও হল সংসদ নেতারা। একপর্যায়ে তাঁরা ভবনের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কক্ষে গিয়ে স্লোগান দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদের আশ্বাসে তাঁরা ফিরে যান।
আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে ডাকসু নেতারা রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহসহ বিভিন্ন হল সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো, ২০১৯ সালের পর থেকে ডাকসু ও হল সংসদ ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ ডাকসুর কাছে হস্তান্তর এবং অতীতের সব তহবিলের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ করে স্বচ্ছ বাজেট প্রণয়ন, ক্যাম্পাস থেকে ভবঘুরে, টোকাই ও মাদক চক্র নির্মূলের মাধ্যমে নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানবিরোধী মিছিলে অংশ নেওয়া ডেপুটি রেজিস্ট্রার রুহুল আমিনসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক–কর্মকর্তাদের অপসারণ ও বিচারের আওতায় আনা।
ডাকসুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার দেড় মাস পার হয়ে গেলেও এখনো বাজেট হস্তান্তর করা হয়নি। এর ফলে আমাদেরকেই শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। গতকাল শনিবার আমরা ক্যাম্পাস থেকে হকারদের সরালে বাম সংগঠনগুলো বহিরাগত এনে মিছিল করেছে। অথচ প্রশাসন তখনো নির্লিপ্ত থেকেছে।’
মুসাদ্দেক আলী আরও বলেন, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট কোষাধ্যক্ষ অফিসের কর্মকর্তা রুহুল আমিন খুনি হাসিনার পক্ষে মিছিল করেছিলেন। এখনো তিনি স্বাভাবিকভাবে অফিস করছেন। এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য চরম লজ্জার।
ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ক্যাম্পাসকে টোকাই ও মাদক চক্রমুক্ত করে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’