মৃত্যুর ২৯ বছর পরও ফ্যাশন ও স্টাইলে সালমান শাহ যে কারণে অনন্য
Published: 27th, October 2025 GMT
সবকিছুতেই স্বচ্ছন্দ্য
ফ্যাশন, স্টাইল, রুচিশীল জীবনযাপনের জন্য সালমান শাহ ছিলেন তাঁর সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা একজন। বিভিন্ন ধরনের পোশাকে ছিলেন সাবলীল। নিউট্রাল-শেডের পোশাক ও জিনসেই তাঁকে বেশি দেখা গেছে।
ওভারসাইজড ও ফিটেড—সব ধরনের শার্টেই ছিলেন স্বচ্ছন্দ্য। তাঁর ব্যাকব্রাশ হেয়ারস্টাইলও ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয়। ব্যান্ডানা, নেপালি টুপি ও মধ্যপ্রাচ্যের রুমাল তাঁর মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পায়।
১ / ৪এখনকার সময়ে একজন তারকার স্টাইলের পেছনে থাকে বেশ কয়েকজনের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল। ফলে সেখানে ব্যক্তিগত স্টাইলের প্রতিফলন ঘটার সম্ভাবনা থাকে খুবই কম। আবার একই দল একাধিক তারকার ফ্যাশন, স্টাইল ও মেকআপের বিষয়টি দেখভাল করে বলে প্রায় সবার স্টাইল অনেকটা একই রকম লাগে। তবে শুরু থেকেই সালমান শাহ ছিলেন ব্যতিক্রম।
সালমান শাহর সঙ্গে কাজ করা একাধিক চলচ্চিত্র নির্মাতা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, সিনেমায় পোশাক নির্বাচনের ব্যাপারটা সালমান শাহর ওপর ছেড়ে দিতেন তাঁরা। ফরমাল পরবেন নাকি ক্যাজুয়াল, সিদ্ধান্ত নিতেন সালমানই। এমনও হয়েছে, পরদিন শুটিং, আগের দিন সারা বিকেল-সন্ধ্যা সালমানের কেটেছে নিউমার্কেটের দোতলায়।
১ / ৩নিজে কাপড় কিনে, টেইলরের পাশে বসে নিজেই দেখিয়ে দিয়েছেন ডিজাইন। এ দোকান ও দোকান ঘুরে নিজেই জামা কিনেছেন। জামাকাপড়ের সঙ্গে কিনেছেন মানানসই অনুষঙ্গ। কোন দৃশ্যে কী পরবেন, সে সবই গুছিয়ে ঠিক করে গভীর রাতে বাড়ি ফিরেছেন। যেকোনো প্রয়োজনে আউটডোরে গেলে কিংবা শুটিংয়ের জন্য দেশের বাইরে গেলে ফিরে আসার সময় তাঁর সঙ্গে থাকত নানা ধরনের পোশাকআশাক ভর্তি ৬–৭টি লাগেজ।
জুতার সংগ্রহ ছিল বিশাল১ / ৩সালমানের বাসায় শত শত জোড়া জুতা, লোফার, কনভার্স, হাই বুট ও স্নিকার্স ছিল। দেশের বাইরে গেলে অবশ্যই কয়েক জোড়া জুতা নিয়ে আসতেন। জুতা পরিবর্তন করতেন সিনেমার প্রতিটি দৃশ্যে। অল্প দিনের ক্যারিয়ারে সালমান সিনেমায় তিন শতাধিক জোড়া জুতা ব্যবহার করেছিলেন!
যেদিন সালমান মারা গেলেনপুরুষেরা সাধারণত বাঁ হাতে ঘড়ি পরেন। তবে সালমান সব সময় ডান হাতে ঘড়ি পরতেন। বিভিন্ন লাক্সারি ব্র্যান্ডের ঘড়ি ছিল তাঁর সংগ্রহে। সালমান শাহ যেদিন মারা যান, সেদিনও তাঁর হাতে ছিল দেড় লাখ টাকা দামের রাডো ব্র্যান্ডের ঘড়ি।
অলংকারও পরতেন দেদার
ফরমাল ও ক্যাজুয়াল—উভয় ধরনের পোশাকের সঙ্গে সালমান বিভিন্ন ধরনের ব্রেসলেট ব্যবহার করতেন। গলায় থাকত সোনার চেইন। সেই চেইনে মাঝেমধ্যে পেনডেন্টও ঝুলত। কানে থাকত এক পাথরের মেন স্টাড। হাতের আঙুলে সোনার আংটির সঙ্গে পাথরের আংটিও পরতেন।
চশমা, সানগ্লাস, ক্যাপসালমানের ফ্যাশনের অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল সানগ্লাস ও চশমা। তাঁর চেহারা ছিল ওভাল শেপড বা ডিম্বাকার। সে কারণে যেকোনো ফ্রেমের চশমা বা রোদচশমায় তাঁকে দিব্যি মানিয়ে যেত। সিনেমায় তাঁকে গোলাকার, এভিয়েটর, ক্লাব মাস্টার ও ওয়েফ্যারার রোদচশমা পরতে দেখা গেছে। গোলাকার ফ্রেমের চশমাও ব্যবহার করতেন। চশমার পাশাপাশি কনটাক্ট লেন্সও ব্যবহার করতেন সালমান।
১ / ৬সালমান শাহর ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ সিনেমার নির্মাতা বাদল খন্দকার একবার বলেছিলেন, ‘তখন রাস্তায় বের হলেই চোখে পড়ত অসংখ্য তরুণের সালমান হওয়ার আকাঙ্ক্ষা। তরুণীদের কাছে তিনি ছিলেন স্বপ্নের নায়ক। এখনো সালমান সবার হৃদয়ে আছেন। নতুন যাঁরা নায়ক হতে চান, তাঁরা আদতে সালমান শাহই হতে চান।’
আরও পড়ুনমিচেল স্টার্ক ও অ্যালিসা হিলি—ক্রিকেটের এই পাওয়ার কাপলের ১৩টি ছবি ও ভালোবাসার গল্প৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর করত ন ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
চিত্রকর্মে আরব্য রজনীর চরিত্র: ২৪ হাজার টাকায় কিনে ৭৪ লাখে বিক্রি
চিত্রকর্মটি বেশ পুরোনো। গড়পড়তা চোখে দেখে অনেকে হয়তো বলবেন, এ আর এমন কী, ভয়ংকরদর্শী মানুষের মাথায় চেপে বসেছে ভিনগ্রহী কোনো বস্তু। তবে ঝানু চোখের রায় হবে ভিন্ন। খুঁটিয়ে দেখলে তিনি ঠিকই বুঝবেন, ছবিটি যেনতেন কিছু নয়। কারণ, এর আঁকিয়ের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। তিনি স্প্যানিশ চিত্রশিল্পী সালভাদর দালি।
সালভাদর দালির ওই চিত্রকর্ম শুক্রবার যুক্তরাজ্যে নিলামে বিক্রি হয়েছে। নামী শিল্পী, তাই দামটাও আকাশছোঁয়া। পরিচয় প্রকাশ না করা কেউ একজন সেটি কিনে নিয়েছেন ৪৫ হাজার ৭০০ পাউন্ডে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা সাড়ে ৭৪ লাখ টাকার বেশি। অবাক করা বিষয় হলো চিত্রকর্মটি মাত্র ১৫০ পাউন্ডে (২৪ হাজার টাকা) কিনেছিলেন জন রাসেল (ছদ্মনাম) নামের এক ব্যক্তি।
জন রাসেল একজন শিল্পকর্ম বিক্রেতা। তাঁর সঙ্গে ঘটনাটি ঘটেছিল দুই বছর আগে। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজে একটি বাড়ির পুরোনো জিনিসপত্র বিক্রি হচ্ছিল। সেখানেই ওই চিত্রকর্ম এক চোখ দেখার সুযোগ পান রাসেল। চিত্রকর্মের এক কোণে ছিল দালির স্বাক্ষর। আর পেছনে ছিল যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত নিলামকারী প্রতিষ্ঠান সদবি’স-এর স্টিকার।
‘এটি হয়তো নকল’—ঠিক এ কথাই প্রথম মাথায় এসেছিল রাসেলের। তবে একটু ঝুঁকি নিতে দোষ কী? যদি ভাগ্য খুলে যায়। চিত্রকর্মটির দরাদরি শুরু করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে আরও একজন দরদাম করছিলেন। তবে রাসেল হুট করে ১৫০ পাউন্ড বলার পর ওই ব্যক্তি আর আগে বাড়েননি। রাসেলের কথায়, ‘জীবনে এমন সুযোগ একবারই আসে।’
চিত্রকর্মটি যে আসল, তা পরে যাচাই করে বোঝা যায়। এটি আসলে একজন ‘বৃদ্ধ সুলতানের’ ছবি। তিনি আরব্য রজনীর একটি চরিত্র। ১৯৬৬ সালে আরবের এই রূপকথা নিয়ে ৫০০ ছবির এক সিরিজ আঁকতে চেয়েছিলেন সালভাদর দালি। সুলতানের চিত্রকর্মটি তারই একটি অংশ। কোনো কারণে চিত্রকর্মটি সিরিজ থেকে হারিয়ে গিয়েছিল।
চিত্রকর্মটি কেনার পর রাসেলের অবশ্য আরও কিছু খরচ হয়েছিল। সেটি আসল কি না যাচাই করতে পকেট থেকে বের হয়েছিল ৪ হাজার পাউন্ড। তবে কেমব্রিজের নিলামকারী প্রতিষ্ঠান চেফিন্জ-এ যখন চূড়ান্ত দামটা হাঁকা হলো তখন রাসেলের মনে হয়েছিল, তিনি যেন ‘চাঁদকে ছাড়িয়ে’ গেছেন। তাঁর একটাই কথা—‘এটি ছিল অসাধারণ।’
চিত্রকর্মে ‘সুররিয়ালিজম’ বা ‘পরাবাস্তববাদ’ ধারার জন্য সালভাদর দালির খ্যাতি রয়েছে। তাঁর বিখ্যাত শিল্পকর্মগুলোর কয়েকটি হলো—‘দ্য পারসিসট্যান্স অব মেমোরি’, ‘দ্য এলিফেন্টস’, ‘দ্য বার্নিং জিরাফ’ ও ‘মেটামরফোসিস অব নার্সিসাস’। ১৯৮৯ সালে ৮৪ বছর বয়সে মৃত্যু হয় এই শিল্পীর।