উড়োজাহাজে তেলাপোকাকে ‘ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড’
Published: 27th, October 2025 GMT
ভারতে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটের ‘লগবই’-এর একটি পাতার ছবি অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে লেখা আছে, মাঝ আকাশে উড়োজাহাজের কেবিনের ভেতর একটি ‘জীবন্ত তেলাপোকা’ আবিষ্কৃত হয় এবং সেটিকে ‘ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়’।
একজন কেবিন ক্রু ফ্লাইটের লগবইয়ে এভাবেই ঘটনাটি লিপিবদ্ধ করেছেন। এ ঘটনা যখন ঘটে, তখন এয়ার ইন্ডিয়ার ওই ফ্লাইট ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই যাচ্ছিল।
লগবইয়ে থাকা তারিখটি ছিল ২০২৫ সালের ২৪ অক্টোবর। ফ্লাইট চলাকালীন উড়োজাহাজে কী কী অসুবিধা দেখা দেয়, সেগুলো ক্রুদের নথিবদ্ধ করতে হয়। এ জন্য একটি ‘কেবিন ডিফেক্ট লগবুক’ থাকে। সংক্ষেপে একে ‘কেবিন লগ’ বলে।
এয়ার ইন্ডিয়ার কেবিন লগে হাতে লেখা ওই এন্ট্রি নিয়ে অনলাইনে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কেউ কেউ ভারতের অন্যতম ব্যস্ত এ আন্তর্জাতিক পথে চলাচলকারী উড়োজাহাজের ভেতরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পোস্ট অনুযায়ী, উড়োজাহাজ উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর এক যাত্রী একটি তেলাপোকা দেখতে পান। পরে কেবিন ক্রু ঘটনাটি কেবিন লগবইয়ে নথিবদ্ধ করেন। সেখানে লেখা হয়, ‘একজন যাত্রী জীবন্ত তেলাপোকা পেয়েছেন। তেলাপোকাটিকে আমৃত্যু ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেবিন লগবইয়ের যে পাতা ভাইরাল হয়েছে, সেখানে উড়োজাহাজের ভেতরের আরও বেশ কিছু সমস্যা নথিবদ্ধ করা আছে, যেমন ওয়াশ বেসিন আটকে যাওয়া, উড্ডয়নের পর লাইট ঠিকমতো কাজ না করা ইত্যাদি।
তবে মূল বিতর্ক হচ্ছে, তেলাপোকাটিকে ‘আমৃত্যু ঝোলানোর’ দরকার ছিল কি না, সেটা নিয়ে। মন্তব্যকারীদের কেউ কেউ বলেন, সেটিকে ‘পিষে মেরে’ ফেললেই তো হতো।
আরেকজন লেখেন, ‘তেলাপোকাটির জন্য একটি জুতাই যথেষ্ট ছিল। তারপরও এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষের ফাঁসির মঞ্চের প্রয়োজন কেন পড়ল, বুঝলাম না।’
এ বিষয়ে জানতে খালিজ টাইমস থেকে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু এই প্রতিবেদন তৈরি করা পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ল ইট
এছাড়াও পড়ুন:
ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এআই দিয়ে বানানো ছবি ছড়ানো হচ্ছে: কৃষ্ণ নন্দী
খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী দাবি করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে যেসব ছবি ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে বানানো। তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে একটি মহল এগুলো ছড়াচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষ্ণ নন্দী এ দাবি করেন।
সম্প্রতি কৃষ্ণ নন্দীর কয়েকটি ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিপন কুমার বসুর সঙ্গে কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সঙ্গে তাঁর কয়েকটি ছবি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে আজ তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘ভারতে অবস্থানরত বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিপন কুমার বসু মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করছে। সে একজন আন্তর্জাতিক চাঁদাবাজ। সে আমার মোবাইল নম্বর ম্যানেজ করে বিভিন্ন কৌশলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং জীবননাশের হুমকি দিয়ে বলে, “আমি হিন্দু হয়ে কেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করে হিন্দুধর্মকে বিতর্কিত করছি।”’
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের এই প্রার্থী বলেন, ‘আমাকে প্রার্থী করায় হিন্দুদের মনে শান্তি ফিরে এসেছে। হিন্দুরা মনে করছে, জামায়াত ইসলামী একটা অসাম্প্রদায়িক দল। জামায়াত ক্ষমতায় এলে হিন্দু-মুসলমান সবাই ভালো থাকবে। আমাকে যদি মানুষ সংসদে পাঠায়, তখন হিন্দুদের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করব।’
শিপন কুমার বসু ও বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘তাঁর বাসায় গিয়ে খেয়েছি। তবে এরপর যে সে ব্ল্যাকমেল করবে, সেটা বুঝিনি। বিদেশি কোনো গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে আমার আদৌ কোনো সংযোগ নেই। কোনো কথা হয় না।’
লিখিত বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী শ্রেণির যোগসাজশে আমার ব্যক্তিগত ইমেজ ও জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন করার জন্য মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যাচারসহ বেশ কিছু ছবি এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করে অপপ্রচার করছে। আমি এসব অপপ্রচারের জোর প্রতিবাদ জানাই। সাথে এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ করছি।’
কৃষ্ণ নন্দী আরও বলেন, ‘আমাকে খুলনা-১ আসনে জামায়াত মনোনীত দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে আরও স্পষ্টভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে প্রমাণিত হয়, জামায়াতে ইসলামী একটি অসাম্প্রদায়িক দল। দলটির কাছে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, উপজাতি কোনো ভেদাভেদ নেই। সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। আমাকে প্রার্থী করায় সারা বাংলাদেশের হিন্দুদের দাঁড়িপাল্লার পক্ষে ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াত আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার পরই একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা শুরু করেছে, যা প্রমাণ করে, এটা গভীর ষড়যন্ত্রের একটি অংশ।’
মনোনয়ন পরিবর্তন নিয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার আগে খুলনা-১ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ছিলেন বটিয়াঘাটা উপজেলার আমির মাওলানা শেখ আবু ইউসুফ। তাঁকে পরিবর্তন করে আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পরপরই মাওলানা শেখ মোহাম্মদ আবু ইউসুফ আমাকে সমর্থন করেন এবং আমরা একসঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছি। আমাদের ভেতর কোনো ভুল–বোঝাবুঝি নেই। আমি তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমি দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা রাখি।’
সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ চন্দের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘ব্যবসার কারণে মন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। আমি একজন ব্যবসায়ী, তিনি একজন মন্ত্রী। জামায়াতে ইসলামী করি বলে আমাকে কোণঠাসা করে রেখেছিল।’
সংবাদ সম্মেলনে বটিয়াঘাটা উপজেলার আমির মাওলানা শেখ আবু ইউসুফ বলেন, জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্রে অমুসলিম সম্প্রদায়েরও জামায়াতের রাজনীতি করার সুযোগ আছে। ফলে তাঁদের নির্বাচন করারও সুযোগ আছে। দেশের অনেক জায়গাতেই জামায়াতের অমুসলিম কমিটি আছে।