বিদেশে উচ্চশিক্ষা শুধু একটি ডিগ্রির লক্ষ্য নয়; এটি নিজের জ্ঞান, চিন্তাশক্তি ও গবেষণার পরিসরকে বিস্তৃত করার এক দীর্ঘ যাত্রা। মাস্টার্স থেকে পিএইচডি—এই পথচলায় শিক্ষার্থীরা যেমন নিজেদের একাডেমিক দক্ষতা বাড়ান, তেমনি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন, নতুন সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে শেখেন এবং গবেষণার মাধ্যমে নিজের আগ্রহের ক্ষেত্রকে গভীরভাবে জানতে পারেন।

সঠিক পরিকল্পনা

বিদেশে মাস্টার্স বা পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হলে পরিকল্পনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রথমেই নির্ধারণ করতে হবে নিজের উদ্দেশ্য। আপনি কি শুধুই ডিগ্রি অর্জন করতে চান নাকি গবেষণার মাধ্যমে একাডেমিক বা পেশাগত ক্ষেত্রে অবদান রাখতে চান? এরপর আসে দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় বাছাইয়ের বিষয়টি। বিভিন্ন দেশের উচ্চশিক্ষা কাঠামো, টিউশন ফি, জীবনযাপনের খরচ ও গবেষণার পরিবেশ আলাদা। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি বা নেদারল্যান্ডস—প্রতিটি দেশেরই রয়েছে নিজস্ব গবেষণা ফোকাস ও আলাদা একাডেমিক নেটওয়ার্ক।

সুপারভাইজার নির্বাচন

গবেষণানির্ভর প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে সঠিক সুপারভাইজার নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন উপযুক্ত সুপারভাইজার শুধু গবেষণার দিকনির্দেশনাই দেন না, বরং আপনার কাজের মান, প্রকাশনা এমনকি ভবিষ্যতের ক্যারিয়ারের ওপরও প্রভাব ফেলেন। তাই গবেষণার বিষয় ঠিক করার আগে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে আগ্রহের ক্ষেত্র অনুযায়ী প্রফেসরদের কাজ ও প্রকাশনা পড়া দরকার। প্রাথমিকভাবে ই–মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করেই জানা যায় আপনার আগ্রহ তাঁদের গবেষণার সঙ্গে মেলে কি না।

আরও পড়ুনবিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে২৬ অক্টোবর ২০২৫স্কলারশিপের সুযোগ

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সহায়তা বা স্কলারশিপ পাওয়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। অনেক সময় টিউশন ফি ও জীবনযাপনের খরচ বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে প্রায় সব দেশেই রয়েছে সরকারি ও বেসরকারি ফান্ডিংয়ের সুযোগ। যেমন কমনওয়েলথ স্কলারশিপ (যুক্তরাজ্য), ফুলব্রাইট (যুক্তরাষ্ট্র), ডাড (জার্মানি), এরাসমাস মুন্ডুস (ইউরোপ) এবং অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস (অস্ট্রেলিয়া)। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের উদ্যোগেও টিউশন ওয়েভার, রিসার্চ গ্র্যান্ট বা অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ অফার করে থাকে। তাই আবেদন করার আগে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ‘স্কলারশিপ’ বিভাগটি ভালোভাবে দেখা প্রয়োজন।

প্রয়োজনীয় নথিপত্র

আবেদনের প্রক্রিয়া অনেক সময়সাপেক্ষ এবং ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হবে। সাধারণত মাস্টার্স বা পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন শুরু করতে হয় অন্তত আট থেকে বারো মাস আগে। এই সময়ের মধ্যে প্রস্তুত করতে হয় স্টেটমেন্ট অব পারপাস, রিসার্চ প্রোপোজাল (যদি প্রয়োজন হয়), ইংরেজি ভাষার দক্ষতার প্রমাণ, রিকমেন্ডেশন লেটারসহ প্রাসঙ্গিক নথিপত্র। পাশাপাশি সময়মতো সম্ভাব্য সুপারভাইজারের সঙ্গে যোগাযোগ ও অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।

আরও পড়ুনজেনে নিন বিশ্বের সেরা ১০ স্কলারশিপ সম্পর্কে২৬ অক্টোবর ২০২৫বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতা

বিদেশে পড়াশোনার অভিজ্ঞতা শুধু একাডেমিক নয়, এটি মানসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে নিজেকে গড়ে তোলারও সুযোগ। ভিন্ন সংস্কৃতি ও দেশের মানুষের সঙ্গে মেলামেশা, গবেষণার নতুন পদ্ধতি শেখা এবং বৈশ্বিক একাডেমিক পরিবেশে কাজ করা—সব মিলিয়ে এই অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীর দৃষ্টিভঙ্গিকে বহুমাত্রিক করে তোলে। মাস্টার্স বা পিএইচডি শেষে অনেকে যুক্ত হন গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতা বা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে উচ্চমানের চাকরিতে। সঠিক পরিকল্পনা, অধ্যবসায় ও সময়মতো পদক্ষেপই শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেতে পারে বিশ্বমানের শিক্ষা ও ক্যারিয়ারের গন্তব্যে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক ড ম ক প এইচড য ক তর

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলের রাজা মেসির দেখা পেলেন বলিউডের বাদশা শাহরুখ

কলকাতায় বিশেষ এক অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হলেন দুই বিশ্বতারকা—‘বলিউড বাদশা’ শাহরুখ খান আর ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি। দুজনের করমর্দন ও একসঙ্গে ছবি তোলার দৃশ্য মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। শাহরুখের কনিষ্ঠ পুত্র আব্রাম খানকেও দেখা যায় মেসির সঙ্গে ছবি তুলতে—ফুটবল কিংবদন্তিকে সামনে পেয়ে স্পষ্টতই উচ্ছ্বসিত ছিল সে।

বর্তমানে ‘গোট ট্যুর অব ইন্ডিয়া ২০২৫’–এর অংশ হিসেবে ভারতে রয়েছেন আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি। আজ শনিবার কলকাতা সফরে এসে তিনি অংশ নেন এক বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানে। সেখানেই ঘটে যায় ভক্তদের জন্য বাড়তি চমক—মেসির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় শাহরুখ খানের।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শাহরুখ প্রথমে করমর্দন করেন উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজ ও আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার রদ্রিগো দে পলের সঙ্গে। এরপর এগিয়ে যান মেসির দিকে। দুজন হাত মেলান, কথা বলেন আর ছবি তোলেন। সেই সময় মেসি আলাদাভাবে ছবি তোলেন আব্রামের সঙ্গেও। পুরো অনুষ্ঠানে শাহরুখকে দেখা যায় সাদা টি-শার্টের ওপর হলুদ কার্ডিগানে—চিরচেনা স্টাইলিশ লুকে।

মেসি, সুয়ারেজ, শাহরুখ ও আব্রাম। এক্স থেকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ