বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত না পাল্টালে তীব্র আন্দোলন
Published: 27th, October 2025 GMT
রাজধানীতে এক সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রামের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল এবং মোংলা বন্দর কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই ডিপি ওয়ার্ল্ড নামের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকার চুক্তি করতে চায়।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেছেন, এই প্রতিষ্ঠানটি (ডিপি ওয়ার্ল্ড) যেসব দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পেয়েছে, সেখানে তাদের কাজ নিয়ে বদনাম রয়েছে। বিদেশি কোম্পানি বন্দর পরিচালনা করার দায়িত্ব নিলে সেখানে দেশীয় কর্মীদের ছাঁটাই করা হবে। তার দায় যাতে ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে না যায় সেজন্য আগেভাগেই সেখানকার শুল্ক ৪১ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। অন্তর্বর্তী সরকার যদি এই চুক্তির সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না আসলে বাম দলগুলো তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে। প্রয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান হবে।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন সংলগ্ন জিপিও মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় অভিমুখে এই কর্মসূচির আয়োজন করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চা।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ শুরু করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চা। এরপর তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সচিবালয় অভিমুখে রওয়ানা দিলে জিপিও মোড়ে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। তখন সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা।
সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, জিবুতি নামের দেশ ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে বন্দর ইজারা দিয়েছিল। তবে দেশের স্বার্থ হানি হচ্ছিল, তাই তারা সেই চুক্তি বাতিল করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা ঋণমুক্ত হতে পারে নি। তিনি বলেন, বিদেশি কোম্পানি বন্দর পরিচালনা করার দায়িত্ব নিলে সেখানে দেশিয় কর্মীদের ছাঁটাই করা হবে। তার দায় যাতে ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে না যায় সেজন্য আগেভাগেই সেখানকার শুল্ক ৪১ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার।
বজলুর রশীদ বলেন, বিদেশি সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থ রক্ষার্থে সরকার একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। তার অংশ হিসেবে সরকার ঘোষণা করেছে, চট্টগ্রামের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল এবং মংলা বন্দর কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়া হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই সেই চুক্তি সম্পাদন তারা করতে চায় । শেখ হাসিনার সরকার ভারতের স্বার্থ রক্ষা করত। সে কারণেই তাকে উচ্ছেদের জন্য গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কাছে ইজারা দেওয়ার পায়তারা করছে। তার অংশ হিসেবে বন্দর ইজারা দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে।
রাজধানীতে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চার মিছিল.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ম গণত ন ত র ক জ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মাহফুজ-আসিফের পদত্যাগ কার্যকর তফসিল ঘোষণার পর
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উপদেষ্টা হিসেবে মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
আরো পড়ুন:
মাহফুজ–আসিফের মঙ্গল কামনা প্রধান উপদেষ্টার
পদত্যাগ করলেন উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
প্রেস সচিব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম। তাদের পদত্যাগ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে। এর আগ পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।”
মাহফুজ আলম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সেই সরকারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের ৩ জন প্রতিনিধি জায়গা পান।
এর মধ্যে নাহিদ ইসলাম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং আসিফ মাহমুদ প্রথমে শ্রম উপদেষ্টা, পরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পান। পরে শ্রম উপদেষ্টার পরিবর্তে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
মাহফুজ আলম শুরুতে উপদেষ্টা পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হন। পরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ