রাবিতে আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ পালন
Published: 27th, October 2025 GMT
‘কোনো মাত্রাই নিরাপদ নয়, সিসা দূষণ বন্ধে কাজ করার এখনই সময়’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পালিত হলো ‘আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ ২০২৫’।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ উপলক্ষে ইউনিসেফের সহযোগিতায় ইয়ুথনেট গ্লোবাল ও পিওর আর্থ বাংলাদেশ যৌথভাবে জনসচেতনতামূলক র্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনশনরত রাবির চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের ৫ শিক্ষার্থী
রাবির সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যু.
সিনেট ভবনের সামনে থেকে র্যালি শুরু হয়ে জোহা চত্বর প্রদক্ষিণ শেষে মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে সকাল ১১টায় তাদের এ কর্মসূচি শেষ হয়।
এতে অংশ নেন রাবির ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম, ইয়ুথনেট গ্লোবালের স্বেচ্ছাসেবক, পিওর আর্থ ও ইউনিসেফের প্রতিনিধি, পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ শতাধিক অংশগ্রহণকারী।
র্যালিতে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল সিসা দূষণ প্রতিরোধমূলক ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড। ‘সিসা দূষণ বন্ধ হলে, বাড়বে শিশু বুদ্ধি-বলে’সহ বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে সিসা বিষক্রিয়া রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, আইন প্রয়োগ ও সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
মানববন্ধন থেকে জানা যায়, সিসা দূষণে বিশ্বে বাংলাদেশ চতুর্থ। দেশের ৬০ শতাংশ শিশুর রক্তে অতিরিক্ত সিসা পাওয়া গেছে, যা বুদ্ধি ও মনোযোগ কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ দূষণে বছরে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু ও জিডিপির ৬–৯ শতাংশ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। দেয়াল রং, খেলনা, প্রসাধনী, মসলা ও অনিরাপদ ব্যাটারি রিসাইক্লিং সিসা দূষণের প্রধান উৎস।
পিওর আর্থ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিতালী দাশ বলেন, “আমাদের মাটি, পানি ও বায়ু সিসা দ্বারা দুষিত হচ্ছে। ভোগ্য পণ্যে সিসার মান নির্ধারণ, অবৈধ ব্যাটারি রিসাইক্লিং প্রতিরোধ এবং কঠোর আইন প্রয়োগ ছাড়া সিসা দূষণ রোধ সম্ভব নয়।”
ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান বলেন, “সিসা দূষণ শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ। যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করে সচেতনতা বাড়াতে পারলেই সিসামুক্ত, নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব।”
ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, “সিসা দূষণ প্রতিরোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতা বাড়াতে হবে।”
কর্মসূচির শেষে আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীরা সরকার ও নীতিনির্ধারকদের প্রতি দশ দফা দাবি জানান। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য— সিসাকে ‘বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য’ হিসেবে জাতীয়ভাবে তালিকাভুক্ত করা, জনগণের রক্তে সিসার মাত্রা নির্ধারণে জাতীয় জরিপ পরিচালনা, শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং ভোগ্যপণ্যে সিসার মান নিয়ন্ত্রণ ও কঠোর মনিটরিং নিশ্চিত করা।
জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আহ্বানে প্রতিবছর অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ’।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ১৫ দফা দাবি
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ১৫ দফা দাবি তুলে ধরেছে।
১০ ডিসেম্বর (আজ বুধবার) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। এ উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে মানবাধিকার সংগঠনটি। এ সময় জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগঠনটি ১৫ দফা দাবি তুলে ধরেছে।
কর্মসূচিতে অংশ নেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) কর্মকর্তা-কর্মচারী, তাঁদের পরিবার এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘স্পিক আপ’ প্রকল্পের তরুণেরা। এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালের এ দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। এ ঘোষণার মাধ্যমে স্বীকৃত হয়, মানবাধিকার সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। জন্মস্থান, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বিশ্বাস, অর্থনৈতিক অবস্থা কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে মানবাধিকার সর্বজনীন ও সবার জন্য সমান। প্রত্যেক মানুষ জন্মগতভাবেই এসব অধিকার লাভ করেন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের বাইরে গিয়েও প্রতিদিনই মানবাধিকার বিষয়ে জাগ্রত ও সোচ্চার থাকতে চাই। আইন ও সালিশ কেন্দ্র কখনো মানবাধিকার বিষয়ে কারও কাছে মাথা নত করেনি, কারও সঙ্গে আপস করেনি। যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, সেখানেই আইন ও সালিশ কেন্দ্র সব সময় সোচ্চারভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছে।’
নারী অধিকারের বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সংস্থার এই উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘আইনের ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে কিন্তু নারী ও শিশুর প্রত্যয়ী সহিংসতাগুলো বন্ধ হয়নি। এটি নিয়েও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। আজ বুধবার, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে