সোলার ফেজ-২–এর উদ্বোধন: সৌরশক্তিনির্ভর সেচে খরচ ৩০ শতাংশ কমে
Published: 27th, October 2025 GMT
বাংলাদেশের সেচব্যবস্থা মূলত আমদানি করা ডিজেলের ওপর নির্ভরশীল। সৌর সেচপাম্প শুধু ডিজেল ব্যবহার কমায় না; বরং কৃষকদের সেচ খরচ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমায়। ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫ হাজার সৌর সেচপাম্প স্থাপন ও গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর অঙ্গীকার আছে সরকারের।
সৌরশক্তিনির্ভর কৃষি সেচের প্রকল্প সোলার (সোলার এনার্জি ফর অ্যাগ্রিকালচারাল রেজিলিয়েন্স) ফেজ-২–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বক্তারা। রাজধানীর একটি হোটেলে আজ সোমবার এ অনুষ্ঠান হয়। দক্ষিণ এশিয়ায় সফলভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে প্রথম পর্যায়ে। এ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হচ্ছে। এটি এখন পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া ও কেনিয়াতেও সম্প্রসারিত হচ্ছে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার মাধ্যমে। এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও জলবায়ু সহনশীলতার ভিত্তিতে টেকসই সৌর কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা।
আন্তর্জাতিক পানি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট (আইডব্লিউএমআই) এবং সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো–অপারেশন (এসডিসি) যৌথভাবে আজকের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কর্মশালায় বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান, যেমন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বারিন্দ বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এ ছাড়া উন্নয়ন সহযোগী, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সোলার প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশে আইডব্লিউএমআই ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) সঙ্গে যৌথভাবে করা গবেষণায় দেখা গেছে, সৌর সেচপাম্প শুধু ডিজেল ব্যবহার কমায় না; বরং কৃষকদের সেচ খরচ ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমায়। সময়সাশ্রয়ী ও শ্রমসাশ্রয়ী সেবা প্রদান করে এবং দেরিতে বর্ষা শুরু হলে অতিরিক্ত সেচের সুযোগ সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশ ও ভারতের তুলনামূলক গবেষণায় আইডব্লিউএমআই দেখিয়েছে যে সাধারণ ধারণার বিপরীতে সৌর সেচ সব সময় ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার ঘটায় না। বাংলাদেশে অপারেটর পরিচালিত সৌর পাম্প টেকসই পানি ব্যবহার নিশ্চিত করেছে।
কৃষিখেতে সৌরশক্তি ব্যবহারে এগিয়ে এসেছেন নারীরা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন রূপে নদীপথে ফিরছে শতবর্ষী স্টিমার পি এস মাহসুদ
শুক্রবার সকাল ১০টা। ঢাকার সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনের সামনে বেশ জটলা। সবার চোখ শতবর্ষী স্টিমার পি এস মাহসুদের দিকে। কারও চোখে পুরোনো স্মৃতি, কারও চোখে উচ্ছ্বাস। নদীকেন্দ্রিক ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক পি এস মাহসুদ তিন বছর পর আবার ঢাকার নদীপথে ফিরছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) জানিয়েছে, আগামী ১৫ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে চলাচল শুরু করবে এই ঐতিহাসিক জলযান। ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতি শুক্রবার সকালে ছেড়ে যাবে বরিশালের উদ্দেশে। পরদিন শনিবার আবার ফিরবে ঢাকায়। যাত্রাপথে পর্যটকেরা উপভোগ করবেন নদী আর দক্ষিণাঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
পি এস মাহসুদ ১৯২২ সালে কলকাতার গার্ডেন রিচ ওয়ার্কশপে নির্মিত হয়। বেলজিয়ামের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ১৯৮৩ সালে নারায়ণগঞ্জের ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ লিমিটেডের মাধ্যমে স্টিমারটির স্টিম ইঞ্জিনকে ডিজেল ইঞ্জিনে রূপান্তর করা হয়। ১৯৯৫ সালে মেকানিক্যাল গিয়ার সিস্টেমে রূপান্তর করা হয়।
পি এস মাহসুদে জীবন রক্ষাকারী লাইফ জ্যাকেট, লাইফ বয়া, ফায়ার এক্সটিংগুইসারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। পি এস মাহসুদ শতবর্ষ ধরে নৌপথে কোনো দুর্ঘটনা ছাড়া নিরাপদভাবে নিরবচ্ছিন্ন যাত্রী ও পর্যটনসেবা দিয়ে আসছে।
ঢাকা থেকে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে চলাচল করত স্টিমারটি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাত্রীর অভাবে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে স্টিমারটির চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিন বছর ধরে অচল থাকা প্যাডেল স্টিমারটিকে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে। ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে এর সংস্কারকাজ করা হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিসি জানিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার স্টিমারটির ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জে পরীক্ষামূলক যাত্রা শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘পি এস মাহসুদ কেবল একটি নৌযান নয়, এটি বাংলাদেশের নদীজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক। আমরা চাই, নতুন প্রজন্ম কাছ থেকে দেখুক, একসময় নদীপথই ছিল যোগাযোগ ও সংস্কৃতির প্রাণ।’
উপদেষ্টা জানান, পি এস মাহসুদের পাশাপাশি আরও তিনটি পুরোনো স্টিমার—পি এস অস্ট্রিচ, পি এস লেপচা ও পি এস টার্ন সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নদীপথের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও নদীভিত্তিক পর্যটনের সম্ভাবনা বিস্তৃত করার লক্ষ্যে এটা করা হবে।
শতবর্ষী স্টিমার পি এস মাহসুদ তিন বছর পর আবার নদীপথে যাত্রী পরিবহন শুরু করছে। গতকাল শুক্রবার সদরঘাটে