সম্প্রতি সন্ধান মিলেছে বিরল রুশ সাহিত্যবিষয়ক বই চুরির এক বিশাল আন্তর্জাতিক চক্রের, যাদের নাম দেওয়া হয়েছে দ্য পুশকিন জব। ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন গ্রন্থাগার ও বই–সংগ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এই খবর।

দ্য গার্ডিয়ান–এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক ড্যান ইয়র্ক লিখেছেন, এই চক্র কয়েক বছর ধরে ইউরোপের নানা লাইব্রেরি ও প্রাইভেট কালেকশন থেকে ১৯ শতকের রুশ সাহিত্যের শতাধিক বিরল গ্রন্থ চুরি করেছে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল অ্যালেকজান্ডার পুশকিন, গোগোল ও দস্তয়েভস্কির প্রাথমিক সংস্করণের বই।

চুরির কেন্দ্রবিন্দু ছিল লাটভিয়ার রাজধানী রিগার ন্যাশনাল লাইব্রেরি। সেখানে এক দম্পতি গবেষক সেজে বই ধার নিত এবং পরে মূল কপির জায়গায় দক্ষ হাতে তৈরি নকল রেখে দিত। তদন্তকারীরা জানান, আসল বইগুলো এরপর মস্কো ও পোল্যান্ড হয়ে পশ্চিম ইউরোপের কালোবাজারে বিক্রি করা হচ্ছিল।

বিরল বই চুরির এই ধারা নতুন নয়। ইউরোপে ২০০০–এর দশকের শুরুতে ইংরেজি ও ফরাসি পাণ্ডুলিপি নিয়ে একই রকমের অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু ‘দ্য পুশকিন জব’ বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। কারণ, এটি সাহিত্যিক ঐতিহ্যের মূল শিকড়কে আঘাত করেছে।

সংস্কৃতি–সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাঁদের আশা বই যে কেবল কাগজ নয়, বরং সভ্যতার ইতিহাসের মূল্যবান স্মারক। প্রতিটি প্রথম সংস্করণ, প্রতিটি নোটেশন বা প্রিন্টিং বৈশিষ্ট্যই যে সাহিত্য ইতিহাসের অংশ—অপরাধী চক্রটি অন্তত এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে।

লাটভিয়ার পুলিশ ইন্টারপোলের সহায়তায় বর্তমানে ২০টির বেশি দেশে তল্লাশি চালাচ্ছে। চুরি হওয়া বইগুলোর মধ্যে ইউজিন ওনেগিন-এর প্রথম সংস্করণ ও দস্তয়েভস্কির হাতে লেখা নোটসংবলিত এক অনুলিপি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুনইরানি সাহিত্যে নারী জাগরণ, হার্পার লির নতুন বই প্রকাশিত২৩ অক্টোবর ২০২৫

রিগা ন্যাশনাল লাইব্রেরির পরিচালক এলিনা গ্রোসে মনে করেন, শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, এটি সাংস্কৃতিক এক অপূরণীয় ক্ষতি। বইগুলোর কিছু ইতিমধ্যেই উদ্ধার হয়েছে, তবে বেশির ভাগ এখনো নিখোঁজ।

এ ঘটনার প্রভাব এখন সাহিত্য সংরক্ষণ নীতিতে নতুন প্রশ্ন তুলছে। ডিজিটাল আর্কাইভিং, বিমাব্যবস্থা ও নিরাপত্তা–নিয়ম পুনর্গঠনের দাবি উঠেছে ইউরোপীয় সাহিত্যিক মহলে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
গ্রন্থনা: বোদরুল হেকীম

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বই চ র র ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

বর্ণিল আয়োজনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্‌যাপন

‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান, স্বপ্ন জয়ে অটল প্রাণ’ স্লোগান নিয়ে সোমবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ক্যাম্পাসে র‍্যালি, চারুকলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সোমবার সকালে শহীদ মিনার চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। উপাচার্য মো. রেজাউল করিম বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড় ও ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। এরপর শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনে চারুকলা অনুষদের আয়োজনে ‘বার্ষিক শিল্পকর্ম ২০২৫’ শীর্ষক একটি চারুকলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত আলোচনা সভায় উপাচার্য মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘২০০৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর সেই পদক্ষেপের ফলেই আজ আমরা এখানে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছি। গত এক বছরে আমাদের অর্জন সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে ভালো জানেন। আমরা যখন দায়িত্ব নিই, তখন শিক্ষার্থীসংশ্লিষ্ট বাজেট ছিল খুবই সীমিত। এখন আমরা সেই বাজেট উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াতে পেরেছি।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা একাডেমিক মানোন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে কাজ করে যাব। নিয়মিত ক্লাস মনিটরিং–ব্যবস্থা চালু থাকবে ও ফলাফল প্রকাশে যেন কোনো বিলম্ব না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষকদের গবেষণায় শিক্ষার্থীদের গবেষণা সহকারী হিসেবে যুক্ত করা হচ্ছে, যাতে তারা হাতে-কলমে গবেষণার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।’

‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান, স্বপ্ন জয়ে অটল প্রাণ’ স্লোগান নিয়ে সোমবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করা হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ