চার কিশোরের আগুন নেভানোর স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র
Published: 28th, October 2025 GMT
পত্রিকা কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখ রাখলে দেখা যায় অগ্নিদুর্ঘটনা। অগ্নিদুর্ঘটনার কারণে প্রতিবছর হারিয়ে যাচ্ছে বহু জীবন ও মূল্যবান সম্পদ। এই ভয়াবহতাকে প্রযুক্তির মাধ্যমে রুখে দেওয়ার স্বপ্ন দেখছে কুমিল্লার চারজন কিশোর। কয়েক সপ্তাহের প্রস্তুতির নিরলস প্রচেষ্টায় তারা তৈরি করেছে এক বিস্ময়কর বিজ্ঞান প্রকল্প। তাদের এই প্রকল্পের নাম অটোমেটেড ফায়ার এক্সটিংগুইশার বা স্বয়ংক্রিয় আগুন নেভানোর যন্ত্র। এই যন্ত্র অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগুন নিভিয়ে দিতে সক্ষম।
কুমিল্লা শহরের চার খুদে বিজ্ঞানীর দল ‘ব্লেজ স্কেপ’ এই প্রকল্প তৈরি করেছে। দলের সদস্যরা হলো আবদুল্লাহ আজিম (দলনেতা), সাদমান চৌধুরী, নাহিদুল ইসলাম ও সাবির ফারহান হক। সবাই কুমিল্লার এথনিকা স্কুল ও কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের এ প্রকল্প সম্প্রতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স ক্লাব আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় প্রথম স্থান অর্জন করে। এরপর নিজ স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় সেরা প্রকল্পের পুরস্কার জিতে নেয় তারা।
অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রটির কার্যকারিতাব্লেজ স্কেপের তৈরি স্বয়ংক্রিয় ফায়ার এক্সটিংগুইশারটি একটি সহজ কিন্তু কার্যকর প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হবে। এতে একটি তাপমাত্রা সংবেদনশীল সেন্সর ব্যবহার করা হবে। যখন কোনো কক্ষে তাপমাত্রা একটি নির্দিষ্ট বিপৎসীমা অতিক্রম করে যা আগুনের উপস্থিতি নির্দেশ করে তখন সেন্সরটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগুন নেভানোর উপাদান, যেমন পানি বা রাসায়নিক ফোম নির্গত করতে শুরু করে। এটি বিশেষত বন্ধ কক্ষ, সার্ভার রুম বা এমন বদ্ধ জায়গায় অত্যন্ত কার্যকর বলে জানায় খুদে বিজ্ঞানীরা। যেখানে তাৎক্ষণিকভাবে মানুষের পক্ষে পৌঁছানো কঠিন, সেসব এলাকায় অগ্নিনির্বাপণের এই উদ্ভাবন কাজে আসবে। ভবিষ্যতে এই প্রকল্পে রোবট ও ড্রোন ব্যবহার করে উন্নত করার সুযোগ থাকবে বলে জানায় খুদে বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞান মেলায় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রটির কার্যকারিতা তুলে ধরেছে খুদে বিজ্ঞানীরা। বাঁ থেকে আবদুল্লাহ আজিম, সাবির ফারহান হক, সাদমান চৌধুরী, নাহিদুল ইসলাম ও বিচারক ঝলক ঘোষ।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী অজয় চন্দ্র বর্মণের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল শুরু করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিয়ে ঘুরে গোলচত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন—‘প্রহসনের বহিষ্কার, মানি না মানব না’, ‘অজয়ের বহিষ্কারাদেশ, প্রত্যাহার করতেই হবে’, ‘জাস্টিস ফর অজয় বর্মণ’ ইত্যাদি।
মানববন্ধনে বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জুয়েল হোসেন বলেন, ‘অজয় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে ছিল। অস্ত্র ও মাদকসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে প্রশাসনের এই অযৌক্তিক বহিষ্কার পুনর্বিবেচনার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা প্রশাসনের কাছে কয়েকবার গিয়েছি, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।’
একই বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রশাসন আপিলের সুযোগ দিয়েছে। আমরা বলছি, অজয় কোনো মাদক ও অস্ত্রের সঙ্গে জড়িত নয়। এই বহিষ্কারাদেশ অন্যায্য। আমাদের জুনিয়রের ওপর এমন অবিচার হতে দেব না। আমরা বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিচ্ছি, দ্রুত সময়ে অজয়ের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনের দিকে যাব।’
২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ২৩৭তম সভায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং আবাসিক হলে অস্ত্র ও মাদক রাখার দায়ে ৫৪ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে শাহপরাণ হলের কক্ষে অস্ত্র ও মাদক রাখার অভিযোগে অজয় চন্দ্র বর্মণকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। অজয় চন্দ্র বর্মণ বাংলা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।