রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে ও বিচার চেয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

রাবি প্রশাসন ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) প্রতিনিধিরা।

আরো পড়ুন:

সুইমিংপুলে মৃত্যু: কুষ্টিয়ায় রাবি শিক্ষার্থী সায়মার অশ্রুসিক্ত বিদায়

যবিপ্রবি প্রক্টরের বিরুদ্ধে ওঠা মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টায় রাবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খান এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড.

মোজাম্মেল হোসেন বকুল এ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।

স্মারকলিপিতে তারা লিখেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) হিসেবে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন তার ফেসবুক আইডিতে দেওয়া একাধিক পোস্টে রাকসু নির্বাচনে হল সংসদে বিজয়ী নারী প্রতিনিধিদের ব্যক্তিগত পোশাক, নারীর ধর্মীয় পরিচয় এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা সম্পর্কে অবমাননাকর ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করেছেন।

পাশাপাশি তিনি পূর্বের পোস্টগুলোতে বোরকা, কাঠমোল্লা, মদ, সেক্সুয়াল রেভল্যুশন ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এছাড়া এক পোস্টে টু-কোয়াটার ও মদের বোতল হাতে নিয়ে ক্লাসে আসা এবং একটি ছাত্র সংগঠন ও সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যা স্পষ্টতই উস্কানিমূলক এবং শিক্ষাঙ্গনের নৈতিক মান ও পেশাগত দায়িত্ববোধের গুরুতর লঙ্ঘন।

এ পরিস্থিতিতে রাকসুর পক্ষ থেকে চারটি মন্তব্য করা হয়েছে। এসব মন্তব্যের মধ্যে রয়েছে- একজন শিক্ষক হিসেবে ড. আ. আল মামুনের এ মন্তব্য শুধুই ব্যক্তিগত মতামত নয়, এটি শিক্ষাঙ্গনের মর্যাদা, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা ও আত্মবিশ্বাস এবং শিক্ষকের দায়িত্ববোধকে চ্যালেঞ্জ করছে; তিনি নারীর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, ধর্মীয় অনুশাসন ও পোশাককে ব্যঙ্গ করে যে মনোভাব প্রকাশ করেছেন, তা হিজাব-ফোবিয়া এবং নারীবিদ্বেষী মনোভাবে উৎসাহ যোগায়, যা কোনো শিক্ষাগত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনুরূপ নয়।

বাকি দুইটি মন্তব্য হলো- রাকসুর দৃঢ় অবস্থান হলো নারীর পোশাকের স্বাধীনতা, হিজাব ও নিকাব কোনো অপরাধ নয় এবং তা পশ্চাৎপদতার চিহ্নও নয়, বরং এটি একজন নারীর নিজস্ব পরিচয়, বিশ্বাস, আত্মমর্যাদা ও শালীনতার প্রতিফলন; একজন শিক্ষক বা নাগরিকের নৈতিক অধিকার নয় কোনো ব্যক্তির ধর্মীয় বিশ্বাস বা পোশাককে ব্যঙ্গ করা, এ ধরনের মন্তব্য ধর্মীয় বিদ্বেষ উসকে দেওয়া এবং শিক্ষকের শপথ ভঙ্গের সমতুল্য।

স্মারকলিপিতে তারা কয়েকটি দাবিও জানিয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ড. আ. আল মামুনকে জনসম্মুখে তার এই অবমাননাকর ও বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে; ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হোক এবং তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী শিক্ষকতার শপথ, কর্মসংস্কৃতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা লঙ্ঘনের অপরাধে যথাযোগ্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

অন্য দাবিগুলো হলো- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন এই ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মানসিকতার বিরুদ্ধে স্পষ্ট ও দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করে, তার সার্বিক নীতি ও নির্দেশনা অবিলম্বে ঘোষণা করা হোক; ভবিষ্যতে যেন কোনো শিক্ষক বা কর্মরত ব্যক্তি শিক্ষার্থীর ধর্মীয় পরিচয়, পোশাক বা ব্যক্তিগত বিশ্বাস নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করতে না পারেন, এই উদ্দেশ্যে সতর্কতামূলক ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সহিষ্ণুতা, সাম্য ও ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জোরদার করার লক্ষ্যে যথোপযুক্ত সেমিনার/ওরিয়েন্টেশন/বড়দিন কর্মসূচি গ্রহণ করা হোক।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ম রকল প গ রহণ কর স ব ধ নত আল ম ম ন ব দ কত

এছাড়াও পড়ুন:

‘প্রতারক পুরুষ বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে, তবে আল্লাহ সব দেখেন’

ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা—দু’জায়গাতেই অভিনয় গুণে জায়গা করে নিয়েছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। পর্দার চরিত্রে যেমন সাহসী, বাস্তব জীবনেও তেমনি সরব ও স্পষ্টভাষী।  

বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাবনার উপস্থিতি সবসময়ই আলোচনায় থাকে। নিয়মিত ছবি ও ভাবনার টুকরো অংশ প্রকাশ করায় অনেক সময় কটাক্ষের মুখেও পড়েছেন এই অভিনেত্রী। গতকাল রাতে ভাবনা তার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে নারীর সঙ্গে পুরুষের বিশ্বাসঘাতকতার একটি চিত্রায়ণ করেছেন এই অভিনেত্রী। 

আরো পড়ুন:

‘খুকুমণির’ বিয়ে

রাজবাড়িতে বসবে মধুমিতার বিয়ের আসর!

এ বিষয়ে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “একজন প্রতারক পুরুষ তার বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে। কিন্তু যে নারীকে সে আঘাত করেছে, তাকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহ তা প্রকাশ করেন। প্রতিটি মিথ্যা, যা সে পেছনে বলেছে, নীরবে ভাঙা প্রতিটি প্রতিশ্রুতি, কান্নার প্রতিটি মুহূর্ত, অথচ পুরুষটি ভান করেছে সব ঠিক আছে। তবে আল্লাহ সব দেখেন, যা সে দেখতে পায় না।” 

কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। এমন তথ্য স্মরণ করে ভাবনা বলেন, “একজন পুরুষ ভাবেন, তার কর্ম ঢাকতে সে যথেষ্ট চতুর। কিন্তু কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। তাকে ধ্বংস করার জন্য আল্লাহ সত্য প্রকাশ করেন না। বরং সেই নারীকে জীবনভর কষ্ট পাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য এটি করেন।” 

খানিকটা ব্যাখ্যা করে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “বিশ্বাসঘাতকতা হয়তো গোপনে করা হয়। কিন্তু তার প্রকাশ হলো ঐশ্বরিক সুরক্ষা। আল্লাহ যখন পর্দা সরিয়ে দেন, তা শাস্তি নয় বরং এটা উদ্ধার। আমি এখন গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আলহামদুলিল্লাহ।” 

তবে ভাবনা কেন এ ধরনের একটি পোস্ট নিজের ফেসবুকে দিয়েছেন, তার পেছনের কারণ জানা যায়নি। কিন্তু তার ভাবনার সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন নেটিজেনরা। 

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্যানসার, ৩৬ অস্ত্রোপচার—গানে ফেরার গল্প শোনাবেন ‘বেজবাবা’
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ১১০ বোতল ফেন্সিডিলসহ কারবারি গ্রেপ্তার
  • পাবনায় বিষাক্ত মদপানে ২ যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ
  • রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যা মামলায় একজন গ্রেপ্তার
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণাহীনতা: উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা
  • বেগম রোকেয়াকে নিয়ে রাবি শিক্ষকের মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার লঙ্ঘন: আসক
  • কালো পতাকার মানুষ
  • ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এআই দিয়ে বানানো ছবি ছড়ানো হচ্ছে: কৃষ্ণ নন্দী
  • কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখাতে হামলা, নির্দেশদাতা এখনো পলাতক
  • ‘প্রতারক পুরুষ বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে, তবে আল্লাহ সব দেখেন’