মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে, বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস নিমিৎস যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটির দিকে ফিরে যাচ্ছে। রণতরিটি মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যবধানে দক্ষিণ চীন সাগরে একটি যুদ্ধবিমান ও একটি হেলিকপ্টার হারানোর পর এই উদ্যোগ নিয়েছে। ওই হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান সমুদ্রে ভেঙে পড়েছিল।

নৌবাহিনীর প্যাসিফিক ফ্লিট জানিয়েছে, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বাণিজ্যিক জাহাজগুলোয় হামলার প্রতিক্রিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন থাকার পর নিমিৎস এখন ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের নৌঘাঁটি কিটসাপে ফিরে যাচ্ছে।

১৯৭৫ সালে কমিশন পাওয়া এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্যাসিফিক ফ্লিট কমান্ডার চেস্টার ডব্লিউ নিমিৎসের নামে ইউএসএস নিমিৎস রাখা হয়। এটি ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ ইলেভেনের (সিএসজি–১১) প্রধান রণতরি। এই রণতরি সক্রিয় পরিষেবা থেকে অপসারণ করার আগে চূড়ান্ত অভিযানে ছিল।

এর আগে নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, গত রোববার বিকেলে এমএইচ–৬০আর সি হক হেলিকপ্টারের তিন ক্রু সদস্যকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর এফ/এ–১৮এফ সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমানের দুই পাইলট নিরাপদে বিমান থেকে বের হতে পেরেছিলেন। তাঁদেরও উদ্ধার করা হয়েছে। পাঁচজনই ‘নিরাপদ ও স্থিতিশীল’ অবস্থায় আছেন।

নৌবাহিনীর বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই দুটি দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

নৌবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এফ/এ-১৮এফ যুদ্ধবিমানের দাম ৬ কোটি ডলারের বেশি।

ট্রাম্প কী বলেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার টোকিওতে যাওয়ার পথে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, এসব ঘটনার কারণ ‘খারাপ জ্বালানি’ হতে পারে। তিনি কোনো ধরনের নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, এখানে ‘লুকানোর’ কিছু নেই।

সাম্প্রতিক মাসগুলোয় মার্কিন নৌবাহিনীর কোনো বিমানবাহী রণতরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এটি দ্বিতীয় কোনো বড় দুর্ঘটনা।

এর আগে গত এপ্রিলে ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান বিমানবাহী রণতরি থেকে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি এফ/এ–১৮ সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান লোহিত সাগরে পড়ে গিয়েছিল।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ চীন সাগরে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে বিধ্বস্ত মার্কিন হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ও একটি যুদ্ধবিমান আধা ঘণ্টার ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে গতকাল রোববার পৃথক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সময় এসব ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনায় ক্রুদের নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন নৌবাহিনীর প্রশান্ত মহাসাগরীয় বহর।

কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জলসীমায় ঘটে যাওয়া ঘটনা দুটি নিয়ে তদন্তে নেমেছে মার্কিন নৌবাহিনী।

আরও পড়ুনকুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে নেমেই নাচলেন ট্রাম্প২৬ অক্টোবর ২০২৫

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় বেলা পৌনে তিনটার দিকে একটি এমএইচ–৬০আর সিহক হেলিকপ্টার বিমানবাহী ইউএসএস নিমিত্জ রণতরী থেকে নিয়মিত অভিযানে অংশ নেওয়ার সময় বিধ্বস্ত হয়। নৌবাহিনী জানায়, অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল তিনজন ক্রুকে উদ্ধার করেছে।

এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর একই রণতরী থেকে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনার সময় একটি এফ/এ–১৮এফ সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। নৌবাহিনী জানায়, উভয় ঘটনায় ক্রুরা নিরাপদে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে।

দক্ষিণ চীন সাগরের অবস্থান কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীনসহ দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশ এ সাগরের জলসীমার কিছু অংশের মালিকানার দাবিদার। যদিও আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ জলপথের প্রায় পুরোটার মালিকানা দাবি করে বেইজিং।

আরও পড়ুনট্রাম্প গেলেন মালয়েশিয়ায়, আরেকটি ‘বড় শান্তিচুক্তি’ সইয়ের সাক্ষী হবেন২৬ অক্টোবর ২০২৫

চীনের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করা এবং আঞ্চলিক মিত্র ও অংশীদারদের সমর্থনের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রও এই জলসীমায় নিজের অবিচল উপস্থিতি বজায় রেখেছে।

এমন একসময়ে এ দুটি ঘটনা ঘটল, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এশিয়া সফরে রয়েছেন। সফরকালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে তাঁর। দুই নেতা মূলত বাণিজ্য ইস্যুতে আলোচনা করতে পারেন।

আরও পড়ুনএশিয়া সফরে সির সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি চান ট্রাম্প২৪ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রাম্প এশিয়ায় শান্তি খুঁজছেন, উত্তেজনা বাড়াচ্ছেন লাতিনে
  • দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত
  • দক্ষিণ চীন সাগরে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে বিধ্বস্ত মার্কিন হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান
  • যুক্তরাষ্ট্রের ‘গোপন অভিযান’ ঠেকাতে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে ভেনেজুয়েলা