বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডে (এসএওসিএল) ১১৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল মঙ্গলবার এ মামলা করা হয়।

মামলাটি করেছেন দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো.

জাহাঙ্গীর আলম। আসামিরা হলেন এসএওসিএলের ব্যবস্থাপক মো. মোশাররফ হোসেন, বেলায়েত হোসেন ও উপব্যবস্থাপক মো. আতিকুর রহমান। মামলায় ১৯৯৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়কালকে ঘটনাপর্ব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

দুদকের মামলায় বলা হয়, তিন কর্মকর্তা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতারণার মাধ্যমে কোম্পানির ১১৯ কোটি ২৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮৪৯ টাকা আত্মসাৎ করে মানি লন্ডারিং করেছেন।

তবে এই তিন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা কোনো অনিয়ম ও বেআইনি কাজ করেননি। বিষয়টি তাঁরা আইনিভাবে মোকাবিলা করবেন। বেলায়েত হোসেন ও আতিকুর রহমান বলেন, স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানিটি (এসএওসিএল) ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এসএওসিএলের মালিকানায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এশিয়াটিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৫০ শতাংশ শেয়ার ও বিপিসির ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। মাঈন উদ্দিন আহম্মেদ ছিলেন এসএওসিএলের মালিক ও পরিচালক। পাশাপাশি তিনি ব্যবস্থাপনা পরামর্শক কমিটিরও (ম্যাক) প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।

এজাহারে যা উঠে এল

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এসএওসিএলের পরিচালক মাঈন উদ্দিন আহম্মেদ একই সঙ্গে এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (এওসিএল) নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ছিলেন। কোম্পানি আইন, ১৯৯৪-এর ১০৫ ধারায় একজন পরিচালক তাঁর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেনে অংশ নিতে পারেন না। কিন্তু মাঈন উদ্দিন আহম্মেদ আইন ভেঙে নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসএওসিএল থেকে বাকিতে লুব্রিকেটিং অয়েল কেনেন।

দুদকের অনুসন্ধান অনুযায়ী, এসএওসিএলকে বাকি টাকা পরিশোধের জন্য প্রতিবছর চেক দিয়েছে এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড। কিন্তু চেকগুলো ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়নি। অথচ কোম্পানির হিসাব বইয়ে সেই চেকগুলো জমা হয়েছে বলে দেখানো হয়। পরে চেক ফেরত দেখিয়ে টাকা অনাদায়ি রাখা হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটি (এসএওসিএল) বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে। এই জালিয়াতিতে জড়িত ছিলেন ওই তিন কর্মকর্তা ও মাঈন উদ্দিন আহম্মেদ। গত ২৬ এপ্রিল মাঈন উদ্দিন আহম্মেদ মারা গেছেন। এ কারণে তাঁকে আসামি করা হয়নি।

জানতে চাইলে দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ৪২০ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত ন কর মকর ত অন য য় পর চ ল র চ লক ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে দূষণমুক্ত ও টেকসই না’গঞ্জ গড়ে তোলা সম্ভব 

নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর এর উপপরিচালক এ, এইচ, এম রাসেদ বলেছেন, নারায়ণগঞ্জকে একটি পরিবেশবান্ধব ও টেকসই শহর হিসেবে গড়ে তুলতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

শিল্পায়ন ও নগরায়নের ফলে পরিবেশের উপর যে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, তা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।

পরিবেশবান্ধব জীবনধারা গ্রহণ, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পরিহার, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের মাধ্যমে একটি দূষণমুক্ত ও টেকসই নারায়ণগঞ্জ গড়ে তোলা সম্ভব।

রোববার (২৬ অক্টোবর) তারুণ্যের উৎসব-২০২৫” উদযাপন উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত  সভায় মাটি, পানি, বায়ু ও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক, ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর এর উপপরিচালক এ, এইচ, এম রাসেদ। উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক, পরিদর্শকবৃন্দ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

সভায় পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন পরিবেশ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ জেলার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাসেল মাহমুদ।

সভায় বাপা নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের সভাপতি মাহবুবুব রহমান মাসুম, বাপা নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক মো: তারিক বাবু, পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ণ সোসাইটির চেয়ারম্যান মো: হোসাইন, মানব কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান ভূইয়া, পরিবেশবিদ মো: খালেদ মোশারফ, মাইক্রো ফাইবার গ্রুপের সহকারী ম্যানেজার পারভেজ আহমেদ সুজন, ইপিলিয়ান লিমিটেড এর ম্যানেজার মো: আল-আমিন ইসলাম, জলমল টেক্সটাইল মিলস (প্রা:) এর ম্যানেজার নজরুল ইসলাম, আজিজুল রি-সাইকেলিং এন্ড ই-ওয়েষ্টজ  কোম্পানি লিমিটেড এর ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম এবং আল-বাকারা স্টীল কো: লিমিটেড ম্যানেজার রুবেল আলম সহ আরও অনেকই বক্তব্য প্রদান করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, শিল্পায়ন ও নগরায়নের ফলে পরিবেশের উপর যে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, তা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবেশবান্ধব জীবনধারা গ্রহণ, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পরিহার, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের মাধ্যমে একটি দূষণমুক্ত ও টেকসই নারায়ণগঞ্জ গড়ে তোলা সম্ভব।

সভায় আগামী নভেম্বর মাসব্যাপী বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি, ক্যাম্পেইন, প্রচারাভিযান ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভা শেষে সভাপতি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণে তারুণ্যের ভূমিকা অনন্য। তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন যে, সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করলে নারায়ণগঞ্জ হবে একটি পরিবেশবান্ধব ও টেকসই শহর।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিআরডিবির হিসাবরক্ষক আনিছুর গ্রেপ্তার
  • সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে দূষণমুক্ত ও টেকসই না’গঞ্জ গড়ে তোলা সম্ভব