সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাবন্দী সাংবাদিক মনজুরুল আলমকে (পান্না) অবিলম্বে বিনা শর্তে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)। সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা বৈশ্বিক সংগঠনটি বলেছে, মনজুরুল আলমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আনা ‘মিথ্যা অভিযোগ’ অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে।

মঙ্গলবার আরএসএফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মনজুরুল আলম ‘মানচিত্র’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করেন। গত ২৯ আগস্ট ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে আয়োজিত একটি গোলটেবিল বৈঠকে তাঁকে কথা বলার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে কাজ করা ‘মঞ্চ ৭১’ নামের নাগরিক সমাজের একটি প্ল্যাটফর্ম ওই বৈঠকের আয়োজন করেছিল। হঠাৎ একদল ব্যক্তি সেখানে ঢুকলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ‘সহানুভূতিশীল’ বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটেছিল ২০২৪ সালে কয়েক সপ্তাহের ব্যাপক বিক্ষোভে রক্তক্ষয়ী দমন–পীড়ন চালানোর পরে।

গোলটেবিল বৈঠক ঘিরে পরিস্থিতির অবনতি হলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য পুলিশ ডেকেছিলেন মনজুরুল আলম। সেখানে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের বদলে মনজুরুল আলমসহ গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেওয়া ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তার পর থেকে মনজুরুল আলমসহ গ্রেপ্তার গোলটেবিলের অন্য অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রের’ ভিত্তিহীন অভিযোগে কারাবন্দী রয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের কাছে এ বিষয়ে বক্তব্য চেয়েছিল আরএসএফ। তবে তিনি তাতে সাড়া দেননি।

আরএসএফের দক্ষিণ এশিয়া ডেস্কের প্রধান সেলিয়া মারসিয়ে বলেছেন, ‘সাংবাদিক মনজুরুল আলমকে আটক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী আচরণকে তুলে ধরেছে। এই সরকার সমালোচনাকারীদের কণ্ঠ রোধের জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইন ব্যবহার করছে। কেবল নিজ দেশের ইতিহাস নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য একজন সাংবাদিককে সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করা হবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা অভিযোগগুলো তুলে নেওয়ার এবং অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

আরএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৪ সেপ্টেম্বর জামিনের জন্য মনজুরুল ইসলামের করা আবেদন খারিজ করা হয়। এখন পর্যন্ত এ মামলার বিচারের কোনো দিনও ধার্য করা হয়নি। জামিনের আবেদন শুনানির সময় মনজুরুল আলমের সাক্ষাৎকার নিতে যাওয়া দুই সাংবাদিক একজন আইনজীবীর আক্রমণের শিকার হন। তাঁদের মধ্যে সময় টিভির আসিফ হোসাইনকে মারধর করেন ওই আইনজীবী। এ ছাড়া বাংলা আউটলুকের সাংবাদিক মুকতাদির রশিদকে হুমকি দেন তিনি।

মনজুরুল আলম ছাড়াও বাংলাদেশে আরও পাঁচ সাংবাদিককে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আরএসএফের প্রতিবেদনে। তাঁরা হলেন ফারজানা রূপা, শাকিল আহমেদ, মোজাম্মেল বাবু, শাহরিয়ার কবির ও শ্যামল দত্ত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মনজ র ল আলম আরএসএফ র ক র বন দ সন ত র স র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কনকনে শীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথনে ৩৫০ জন

কনকনে শীত নিয়ে এসেছে হিমেল হাওয়া। ঘরের বাইরে বেরোলেই সেই হাওয়া শরীরে কাঁপন ধরায়। এমন আবহাওয়ার মধ্যে আজ শনিবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের তিতাস নদীর প্রথম সেতু এলাকায় জড়ো হন বিভিন্ন জেলার ৩৫০ দৌড়বিদ। সেখানে তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে ছিলেন বয়োজ্যেষ্ঠ ও শিশুরাও। তবে উচ্ছ্বাস প্রকাশে যেন কেউ কারও থেকে কম নয়। হাফ ম্যারাথনে অংশ নিতেই তাঁদের এই জমায়েত।

আজ সকালে এই হাফ ম্যারাথনের আয়োজন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটি (বিআরসি)। আয়োজকেরা জানান, চার পর্যায়ের দূরত্বে এই হাফ ম্যারাথন দৌড় হয়। এর মধ্যে ছিল ২ কিলোমিটার, ৫ কিলোমিটার, ১০ কিলোমিটার ও ২১ কিলোমিটার।

আয়োজক, অংশগ্রহণকারী ও স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, সূর্য ওঠার আগেই ভোর পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যে দৌড়বিদেরা জেলা শহরের তিতাস নদীর প্রথম সেতুর ওপর জড়ো হতে শুরু করেন। সকাল ৬টায় প্রথমে ২১ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণকারীরা সেখান থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে ৫ ও ১০ কিলোমিটারের দৌড়বিদেরা রওনা দেন। সর্বশেষ সকাল ৭টায় শিশুদের দুই কিলোমিটারের দৌড় শুরু হয়।

২১ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নেন ৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৪ জন ও নারী একজন। ১০ কিলোমিটারে অংশগ্রহণ করেন ১৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৬৬ জন ও নারী দুজন। ৫ কিলোমিটারে অংশ নেন ৭৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৪ জন ও নারী ১০ জন। ২ কিলোমিটার দৌড়ে ৪৩ জন শিশু অংশ নেয়।

দৌড় প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বয়সী দৌড়বিদের পাশাপাশি ভারত, জাপান, নেপাল ও ডেনমার্কের চারজন অংশ নেন। জেলা শহরের তিতাস নদীর ওপর নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার সংযোগ সড়ক কালীবাড়ি মোড় থেকে বিজয়নগরের নূরপুর জিসি সড়ক (সিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া) পথে দৌড়বিদেরা ছড়িয়ে পড়েন। নির্দেশিত পথ ধরে প্রত্যেকে নিজের নির্ধারিত দূরত্ব অনুযায়ী দৌড় সম্পন্ন করেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মুহাম্মদ আবদুল মতিন বলেন, ‘১০ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নিয়েছি। ভালো লাগছে। হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত হাঁটা ও দৌড়ের বিকল্প নেই।’

দৌড় শেষের ফিনিশিং লাইনে পৌঁছান এক দৌড়বিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কনকনে শীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথনে ৩৫০ জন
  • পরিস্থিতির উন্নতির জন্য নির্বাচন হতেই হবে
  • সিকৃবিতে শিবিরের ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা