ভারতের কুখ্যাত সন্ত্রাসী লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং কানাডায় তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। এ চক্রের সদস্যরা গত সোমবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক অ্যাবটসফোর্ড–ভিত্তিক এক শিল্পপতিকে হত্যা এবং একজন পাঞ্জাবি গায়কের বাড়িতে গুলি করার দায় স্বীকার করেছে।

রাজস্থান পুলিশ যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় এই লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য জগদীপ সিং ওরফে জগ্গাকে গ্রেপ্তারের ঠিক এক দিন পরেই এই দুটি ঘটনা সম্পর্কে জানা গেল।

শিল্পপতিকে হত্যা

বিষ্ণোইয়ের সন্ত্রাসী দলের সদস্য গোল্ডি ঢিলোঁ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে জানিয়েছে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিল্পপতি দর্শন সিং সাহাসিকে তারাই হত্যা করেছে।

বিষ্ণোইয়ের সন্ত্রাসী দলের দাবি, ৬৮ বছর বয়সী সাহাসি একটি বড় মাদকের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিষ্ণোই গ্যাং তাঁর কাছে অর্থ দাবি করেছিল। কিন্তু তিনি অর্থ না দেওয়ায় তারা তাকে খুন করে।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সোমবার সকালে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার অ্যাবটসফোর্ডে নিজের বাড়ির বাইরে সাহাসিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বাড়ির বাইরে সড়কের পাশে দাঁড়ানো সাহাসির গাড়ির কাছে সন্দেহভাজন খুনি তাঁর অপেক্ষায় ওত পেতেছিল।

৬৮ বছর বয়সী শিল্পপতি সাহাসি তাঁর গাড়িতে উঠতেই খুনি তাঁকে নিশানা করে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়।

পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাহাসিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে বাঁচাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। তবে তাঁকে বাঁচানো যায়নি।

এ ঘটনার সময় সতর্কতা হিসেবে কাছাকাছি থাকা তিনটি স্কুলকে ‘শেল্টার-ইন-প্লেস’ প্রোটোকলের আওতায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য কোনো শিক্ষার্থীর ক্ষতি হয়নি বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুনভারতের বিষ্ণোই গ্যাংকে কেন কানাডায় ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করা হলো০১ অক্টোবর ২০২৫১৯৯১ সালে সাহাসি কানাডায় যান

সাহাসি ছিলেন বিখ্যাত টেক্সটাইল রিসাইক্লিং কোম্পানি ক্যানাম ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট।

১৯৯১ সালে সাহাসি কানাডায় পাড়ি জমান। প্রথম দিকে তিনি সেখানে ছোটখাটো কাজ করতেন। পরে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত একটি টেক্সটাইল রিসাইক্লিং ইউনিটের একাংশ কিনে নেন। সেটিকে তিনি বিশ্বমানের একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেন।

সাহাসি কেবল একজন সফল শিল্পপতিই ছিলেন না, একজন সমাজসেবীও ছিলেন। তাঁর মৃত্যু অ্যাবটসফোর্ড এবং কানাডার পাঞ্জাবি সম্প্রদায়ের মধ্যে শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

অনেক কমিউনিটি নেতা এই ঘটনাটিকে কানাডার ভারতীয় অভিবাসীদের নিরাপত্তার জন্য একটি মারাত্মক হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং পুলিশের কাছে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

গায়কের বাড়িতে গুলি

লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের দ্বিতীয় অপরাধটি হলো পাঞ্জাবি গায়ক চান্নি নাট্টানের বাড়ির বাইরে গুলি চালানো।

সন্ত্রাসী দলের সদস্য ঢিলোঁ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টে লিখেছে, নাট্টান গায়ক সর্দার খেরার ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এই গুলি চালানো হয়।

ঢিলোঁ জানিয়েছে, নাট্টানের সঙ্গে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তবে তারা সতর্ক করে দিয়েছে, খেরার সঙ্গে কাজ করা যেকোনো গায়ক তাদের ক্ষতির জন্য নিজেদেরই দায়ী থাকবে।

আরও পড়ুনকানাডায় একের পর এক হত্যাকাণ্ড, ভারতীয় বিষ্ণোই গ্যাংকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার দাবি১০ আগস্ট ২০২৫লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং আসলে কী

কানাডা সরকারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গে বিশ্বব্যাপী কাজ করা ৭০০ জনের বেশি শুটারের সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যায়।

এই গ্যাংটি র‌্যাপার এবং রাজনীতিবিদ সিধু মুসেওয়ালাকে হত্যা, বলিউড অভিনেতা সালমান খানকে হুমকি দেওয়া এবং খালিস্তানপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি হাই প্রোফাইল মামলার সঙ্গে যুক্ত।

আরও পড়ুনগ্রামের কিশোর থেকে আন্তর্জাতিক গ্যাং লিডার—জেলে বসেও নিয়ন্ত্রণ করেন অন্ধকার জগৎ০৯ অক্টোবর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সন ত র স শ ল পপত র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগ এক শিক্ষার্থীর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে মুঠোফোন চেক করে ব৵ক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের (সিএসই) শিক্ষার্থী আবির হাসান। আজ সোমবার দুপুরের দিকে প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন তিনি।

আবির হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে উমামা ফাতেমার নেতৃত্বাধীন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সদস্য প্রার্থী ছিলেন। তিনি সিএসইর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

এ বিষয়ে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা ফোন চেক করেছেন, এমন অভিযোগ করেছেন আবির। তাঁরা ফোন চেক করতে পারেন কি না এবং এর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি।

প্রক্টর আরও বলেন, ‘এটি সত্য কি না, কোন পর্যায়ে হয়েছে, কেন করা হয়েছে, তাঁর সম্মতি ছিল কি না—এসব যাচাই করতে আমি একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছি। সেই কমিটিতে দুজন সহকারী প্রক্টর আছেন, পাশাপাশি অভিযোগকারীর প্রতিনিধি হিসেবে একজন ছাত্র প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।’

অভিযোগকারী আবির হাসান সাংবাদিকদের বলেন, গত শনিবার রাতে শাহবাগ চেকপোস্ট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় তাঁর মুঠোফোন তল্লাশি করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়েরই দুজন সহকারী প্রক্টর (শিক্ষক) আধা ঘণ্টা ধরে আমার ফোন চেক করেছেন। কাউকে উলঙ্গ করা আর ফোন চেক করা একই কথা। এটি স্পষ্টভাবে আইনের লঙ্ঘন। যে দুজন আমার ফোন চেক করেছেন...তাঁরা যদি ভুল স্বীকার করে বিবৃতি না দেন, তাহলে দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী আমি তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

আবির হাসান আরও বলেন, ‘আমার কোনো সংগঠন নেই, কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ও নেই। আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে গোপনীয়তার অধিকারের সুরক্ষা চাই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদা চান
  • গাজা যুদ্ধের সংবাদে ‘পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগে ১৫০ লেখক নিউইয়র্ক টাইমস বর্জন করছেন
  • হিজাব নিযে মন্তব্য: রাবি অধ্যাপকের শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি
  • মোটরবাইকে কেউক্রাডং, এক রোমাঞ্চকর যাত্রা
  • পেয়ালায় ডুবে মরলেন দেবদূত
  • চট্টগ্রামের শিশির ভাবনায় বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
  • একজন ব‌্যাটসম‌্যান থাকলেই হতো…
  • ‘রূপবানে নাচে কোমর দুলাইয়া’—ভাইরাল যুগেও প্রাসঙ্গিক মিলা
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগ এক শিক্ষার্থীর