জামালপুরে মহাসড়কে অটোরিকশা বন্ধসহ ১২ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
Published: 29th, October 2025 GMT
জামালপুরের মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধসহ ১২ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত মানববন্ধন এবং পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালিত হয়। এতে কলেজটির শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তাঁরা প্রথমে শহরের ফৌজদারি মোড়ে মানববন্ধন করেন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে যান। পরে সেখানে দাবি বাস্তবায়নে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে বেলা দেড়টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দপ্তরে স্মারকলিপিও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জামালপুরের বিভিন্ন মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, নছিমন-করিমন অবাধে চলাচল করছে। এসব যানবাহন গতি নিয়ন্ত্রণে অক্ষম ও নিরাপত্তাব্যবস্থা অপ্রতুল। প্রশিক্ষণবিহীন চালকের হাতে পরিচালিত হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছেন এবং পঙ্গুত্ববরণ করছে। গত সোমবার জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দিগপাইত এলাকায় কাভার্ড ভ্যান ও অটোরিকশার সংঘর্ষে আশেক মাহমুদ কলেজের দুজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। অথচ সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৪৭ (২) ধারা অনুযায়ী মহাসড়কে এ ধরনের যানবাহন চলাচল আইনত নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুনজামালপুরে কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে ইজিবাইকের সংঘর্ষে তিনজন নিহত২৭ অক্টোবর ২০২৫শিক্ষার্থীদের ১২ দফা দাবির মধ্যে আছে, মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, নছিমন-করিমসহ অননুমোদিত যানবাহনের চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা; স্থানীয় প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা; ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নির্দিষ্ট গ্রামীণ ও শহরতলির রাস্তা নির্ধারণ; সড়কে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত; মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সচেতনতা কর্মসূচি ও চালকদের প্রশিক্ষণ জোরদার; তিন চাকার যানগুলোর চালকদের ৬০ ঘণ্টা ট্রেনিং ও ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা; তিন চাকার যানগুলোর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা; চেকপোস্ট বৃদ্ধি করা ও পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ করা অথবা প্রয়োজনে ছাত্রদের সাহায্য নেওয়া; প্রতিটি মহাসড়কে ২ জোড়া করে বিআরটিএ (লোকাল) বাস সার্ভিস চালু করা; গাড়ির ফিটনেস নিশ্চিত এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা, ওই সড়ক দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত ও নিহত পরিবারকে রাষ্ট্রীয় অনুদান নিশ্চিত করা।
এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুস সাকিব বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের বিষয়টি শুনেছি। আমি তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে যাচ্ছি। ওই দিনের সড়ক দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজকে বাঁচাতে এখনই গভর্নিং বডি নির্বাচন দিতে হবে
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার নির্মূল হলেও মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে এখনো তাদের দোসররা বহাল তবিয়তে আছে। এই প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে হলে এখনই গভর্নিং বডি নির্বাচন দিতে হবে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচিত কমিটি গঠনের লক্ষ্যে তিন দিনের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের মূল বালক শাখায় অভিভাবকদের ব্যানারে এক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
মানববন্ধন শেষে অভিভাবকদের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়। স্মারকলিপিতে তারা আগামী তিন দিনের মধ্যে গভর্নিং বডি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানায়।
অভিভাবকদের দাবি, ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত স্কুলটি সিলেক্টেড বা পকেট কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। এরপর ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ আট বছর ধরে অ্যাডহক কমিটি প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছে। তাঁরা অভিযোগ করেন, ‘৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার নির্মূল হলেও মনিপুর স্কুলে এখনো তাদের দোসররা বহাল তবিয়তে আছে।’
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অ্যাডহক কমিটি কর্তৃক বিদ্যালয় পরিচালিত হওয়ায় শিক্ষার মান, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও প্রতিষ্ঠানের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলেও বিপর্যয় ঘটেছে। তাঁরা অভিযোগ করেন, অদক্ষ ও অযোগ্য প্রশাসনের কারণে একাডেমিক কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে।
অভিভাবকেরা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় বহিষ্কৃত কিছু শিক্ষককে অর্থের বিনিময়ে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এমনকি শিক্ষক ও কর্মচারীদের ক্যাম্পাস ও শিফট পরিবর্তনেও অর্থ লেনদেন হচ্ছে। একইভাবে শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও টাকার বিনিময়ে শিফট পরিবর্তনের ঘটনা ঘটছে।
অভিভাবকেরা বলেন, এসব অনিয়মে ক্যাম্পাস ও শিফটের শিক্ষার্থীদের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা উভয়ই। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত বৈধ গভর্নিং বডি কমিটি এখন সময়ের দাবি।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন অভিভাবক সাইফুল ইসলাম, মঈন উদ্দিন, আবদুল মুতাকাব্বির, আবদুল্লাহ আল আমান, শাহবুদ্দিনসহ অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসী।