জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রতিবেদনের একটি সহজবোধ্য বই প্রস্তুত করে দেশের জনগণের জন্য তা উন্মুক্ত করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে আট খণ্ডের সংস্কার প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা। এ প্রতিবেদনে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ, সভা ও কার্যবিবরণীর বিস্তারিত রয়েছে।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এই প্রতিবেদন সাধারণের সহজবোধ্য একটি ভার্সন (সংস্করণ) তৈরি করতে হবে। বই আকারে প্রকাশ করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়ে বুঝতে পারে এবং অন্যদেরও বুঝাতে পারে।’

বইটি ইংরেজি ও বাংলা দুই ভাষাতেই প্রকাশের আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে এই বইটি যেন শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যপাঠ্য হয়ে যায়, সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। তরুণ প্রজন্ম বইটি পড়বে; তাঁরা নিজেরা জানবে এবং তাঁদের মা–বাবাকেও জানাবে এতে কী আছে।’

প্রতিবেদন হস্তান্তরকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘আট খণ্ডের এই প্রতিবেদনে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ নিয়ে এই কমিশনের কার্যক্রমের প্রক্রিয়া, প্রেক্ষাপট, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে প্রাপ্ত লিখিত প্রস্তাব, সাধারণ মানুষের মতামত, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রেরিত স্প্রেডশিট, সব ধরনের আলোচনা ও সংলাপ লিপিবদ্ধ আছে।’

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস ভবিষ্যতে এই আট খণ্ডের প্রতিবেদন বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে গবেষণার জন্য দলিল হয়ে উঠবে।’

প্রতিবেদন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো.

এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার কমিশন সরকারের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ হস্তান্তর করে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গণমাধ্যমের সংস্কারের সুযোগ এখনো আছে: রেজওয়ান উল আলম

বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বিদ্যমান সংকটের সমাধান এবং গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকার, জনগণ ও গণমাধ্যমের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সমাধান দরকার বলে মনে করেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম কর্মসূচির সমন্বয়ক ও সহযোগী অধ্যাপক এস এম রেজওয়ান উল আলম। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সংস্কারের সুযোগ এখনো আছে।

আজ বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সংস্কার: সুপারিশ, বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অধ্যাপক রেজওয়ান উল আলম এ কথা বলেন। প্রথম আলো এ বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ।

রেজওয়ান উল আলম বলেন, সরকার, জনগণ, মাঝখানে যদি গণমাধ্যম হয়ে থাকে, এই তিনটি পক্ষের নেতিবাচক কাজগুলো কমিয়ে ইতিবাচক দিকগুলো এক জায়গায় নিয়ে আসতে হবে।

গণমাধ্যম সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি উল্লেখ করে রেজওয়ান উল আলম বলেন, তাঁর কাছে মনে হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলো আসলে যোগাযোগে খুব দুর্বল। বর্তমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অপতথ্যসহ নানা সংকট দূর করতে সবার আলোচনা করা, সমাধানের পথ খোঁজার ওপর জোর দেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির এই শিক্ষক।

সংস্কারের সুযোগ এখনো আছে জানিয়ে রেজওয়ান উল আলম বলেন, ‘সময় আছে। সুযোগ আছে। ৫৪ বছর এমন কোনো সময় না, অনেক দেশের ২০০ বছর লেগেছে...কিছু করতে।’ সে জন্য সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে বলেও জানান তিনি।

গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, কমিশনের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম, নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সদস্য এ কে আজাদ, সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) সভাপতি ও মাছরাঙা টিভির বার্তা সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রাজা।

এ ছাড়া নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান মওদুদ হোসেন আলমগীর (পাভেল), জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান মতিউর রহমান আকন্দ, এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন, এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন সদস্য কামরুন্নেসা হাসান এ বৈঠকে বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুনঅনেকের কথা শুনেই বোঝা যায়, আসলে কী বলা হয়েছে, এটা পড়েনি৩ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদন সহজভাবে প্রকাশের আহ্বান
  • গণমাধ্যমের সংস্কারের সুযোগ এখনো আছে: রেজওয়ান উল আলম
  • অভিজ্ঞদের নিয়ে দুই প্যানেল, সরে যাচ্ছেন অন্যরা
  • জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা: কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নতুন বাংলাদেশের পথ দেখাবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • জুলাই সনদ অনুযায়ীই সংবিধান সংস্কার করতে হবে: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কীভাবে, জানুন ১০ প্রশ্নের উত্তরে
  • সংসদ ২৭০ দিনে ব্যর্থ হলে প্রস্তাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে
  • সংসদ ২৭০ দিনে ব্যর্থ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রস্তাবগুলো সংবিধানে যুক্ত হবে: আলী রীয়াজ