নির্বাচনকে ঘিরে দেশের মানুষের কৌতূহল ঘটতে যাচ্ছে তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে। তবে এবার জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট একই দিনে হওয়ার কথা, যে কারণে আবহ কিছুটা আলাদা।  

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) তফসিল ঘোষণা করবে; এই তফসিলের মাধ্যমে ছাড়বে ভোটের ট্রেন। আর সেই ট্রেনের গন্তব্য অর্থাৎ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের তারিখেই থাকবে সবার দৃষ্টি।

আরো পড়ুন:

‘নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে কমিশন সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেবে’

ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগে জনপ্রশাসনকে চিঠি পাঠালো ইসি

যতদূর জানা গেছে, ইসি ভোটগ্রহণের যে তারিখটি ঘোষণা করবে, ওই দিন সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ভোট দেওয়ার সুবিধা থাকার কথা। 

এবার যেহেতু দুটি ভোট হবে, ফলে দুটি পৃথক রঙের ব্যালট থাকবে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট হওয়ার কথা সাদা-কালো। তবে গণভোটের ব্যালটের রং হওয়ার কথা গোলাপি।

দেশের ইতিহাসে এই প্রথমবার একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হতে যাচ্ছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তফসিলও ঘোষণা করবেন। এর আগে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকালে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভি এবং বাংলাদেশ বেতারে সিইসির ভাষণ রেকর্ড করা হয়।

তফসিলের মধ্যে কী কী থাকে
তফসিলে মূলত নির্বাচন আয়োজনের শুরু থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথগ্রহণ পর্যন্ত সময়সূচির বিস্তারিত বর্ণনা থাকে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম.

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “খুব সাধারণ ভাষায় বলতে গেলে এটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখের আইনি ঘোষণা।”

তফসিলে থাকে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে প্রার্থীরা কবে থেকে মনোনয়নপত্র কিনতে ও জমা দিতে পারবেন।

নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র বাছাই করতে কত দিন সময় লাগবে।

বাছাইয়ে বাতিল হলে প্রার্থীর আপিল করার সময়সীমা।

প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পর তালিকা প্রকাশের তারিখ।

নির্বাচনি প্রচার কখন থেকে শুরু হবে এবং কতদিন চলবে।

ভোটের তারিখ ও সময়, ভোট গণনার প্রক্রিয়া ও স্থান।

নির্বাচনী প্রতীক ঘোষণা ও প্রচারের সূচি।

তফসিলের সিদ্ধান্ত কীভাবে নেওয়া হয়
সংবিধানে কিছু বিষয় নিশ্চিতভাবে বলা থাকে। তাই সেগুলোতে আলাদা সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। উদাহরণস্বরূপ, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তবে এবারের নির্বাচন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার সাংবিধানিক ক্ষমতার বলে সংসদ ভেঙে দেন এবং এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেন। তাই এবার ৯০ দিনের বাধ্যবাধকতা নেই; কমিশন দুই মাসের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করছে।

ঢাকা/এএএম/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইস ইস তফস ল হওয় র

এছাড়াও পড়ুন:

সকালে স্থগিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন, রাতে পুনঃ তফসিল

সকালে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (ব্রাকসু) স্থগিত করার পর আবার পুনঃ তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো তফসিল ঘোষণা করা হলো। এবার ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ব্রাকসু নির্বাচন হবে ২১ জানুয়ারি।

বুধবার রাত আটটার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক শাহজামান পুনঃ তফসিল ঘোষণা করেন। প্রথম আালোকে তিনি বলেন, ২৪ ডিসেম্বর ব্রাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ভোটার তালিকায় অসংখ্য অসংগতি থাকায় ওই তারিখের নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক নির্বাচনের পুনঃ তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।

এর আগে বুধবার সকালে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে নির্বাচন কমিশন। সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার পরিসংখ্যান বিভাগের মো. শাহজামান, নির্বাচন কমিশনার অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আমির শরীফ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাসুদ রানা, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রদীপ কুমার সরকার, ইংরেজি বিভাগের প্রধান মোহসীনা আহসান এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হাসান আলী উপস্থিত ছিলেন।

সভাসূত্রে জানা যায়, ভোটার তালিকায় ত্রুটি, শিক্ষার্থীদের একাংশের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ না করা এবং অন্যান্য জটিলতার কারণে নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়।

আরও পড়ুনরোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন আবার স্থগিত৩ ঘণ্টা আগে

নতুন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৩ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর ১৪, ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর ভোটার তালিকা সংশোধন ও আপত্তি গ্রহণ করা হবে। ১৭ ডিসেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। প্রার্থীদের নির্বাচনী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বিতরণ ও দাখিল শুরু হবে, যা চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ২২ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। এ তালিকা নিয়ে আপত্তি গ্রহণ, নিষ্পত্তি এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর ২৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ব্রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২১ জানুয়ারি। ওই দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।

এদিকে সকালে মতবিনিময় সভায় নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানালে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত শিক্ষার্থী পরিষদ প্যানেলের প্রার্থীরা সভা ত্যাগ করেন। বেলা একটায় শিবির–সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে ব্রাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে তফসিল অনুযায়ী ব্রাকসু নির্বাচন কার্যক্রম না হলে উপাচার্যসহ প্রশাসনের পদত্যাগের কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

গত ১৮ নভেম্বর ব্রাকসু নির্বাচনের প্রথম তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ওই তফসিল অনুযায়ী ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৯ ডিসেম্বর। কিন্তু শীতকালীন ছুটি থাকায় ভোট গ্রহণের তারিখ এগিয়ে আনার জন্য উপাচার্যের দপ্তরের সামনে অবস্থান করে শিক্ষার্থীদের একাংশ। ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দফা তফসিল ঘোষণা করে ২৪ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিনে ভোটার তালিকায় অসংগতির কথা বলে হঠাৎ নির্বাচন স্থগিত করেন নির্বাচন কমিশন। পরে ৩ ডিসেম্বর পুনঃ তফসিল ঘোষণা করে ভোটের তারিখ অপরিবর্তিত রাখা হয়।

তবে শীতকালীন ছুটি নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে উপাচার্যের কাছে জমা দেয়। তারা শীতকালীন ছুটির পর নির্বাচনের দাবি করে আসছে। অন্যদিকে ২৪ ডিসেম্বর নির্ধারিত তারিখে ব্রাকসু নির্বাচন করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ২৪ ডিসেম্বর
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ২৪ ডিসেম্বর
  • সকালে স্থগিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন, রাতে পুনঃ তফসিল
  • বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রেখে কর্মবিরতি ও শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা
  • জাতীয় নির্বাচনের তফসিল: বিটিভি-বেতারে সিইসির ভাষণ রেকর্ড ১০ ডিসেম্বর