প্লাস্টিক দূষণ রোধে শক্তিশালী বৈশ্বিক উদ্যোগের দাবি বাংলাদেশের
Published: 11th, December 2025 GMT
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে একটি সুদৃঢ়, উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক চুক্তি গ্রহণের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, “আলোচনায় দীর্ঘসূত্রিতা কেবল বৈশ্বিক পরিবেশ সংকটকে আরো তীব্র করবে।”
বুধবার কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ পরিবেশ সম্মেলনের (UNEA-7) ৭ম অধিবেশনে ‘হাই অ্যাম্বিশন কোয়ালিশন টু অ্যান্ড প্লাস্টিক পলিউশন’ শীর্ষক মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জলবায়ু অর্থায়ন হতে হবে ন্যায্য, জনগণকেন্দ্রিক ও সক্ষমতা-ভিত্তিক
সরকার পরিবেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করছে: উপদেষ্টা
ড.
সচিব বলেন, “বাংলাদেশের জাতীয় উদ্যোগ এখন বৈশ্বিক প্লাস্টিক দূষণবিরোধী প্রচেষ্টার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা এমন একটি বৈশ্বিক প্লাস্টিক চুক্তির পক্ষে কাজ করছি, যা উৎপাদন, রাসায়নিক উপাদান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর পরিবেশগত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণকে পুরো জীবনচক্র জুড়ে মোকাবিলা করবে।”
বিচ্ছিন্ন জাতীয় উদ্যোগ যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে সচিব আরো বলেন, “একটি কার্যকর ও বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সর্বোত্তম সুযোগ হলো এ প্লাস্টিক চুক্তি। আমাদের এমন একটি চুক্তি প্রয়োজন যা প্লাস্টিক উৎপাদন হ্রাস করবে, ক্ষতিকর রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ করবে এবং কর্মীদের জন্য ন্যায়সঙ্গত রূপান্তর নিশ্চিত করবে।”
আলোচনায় অগ্রগতির ধীরগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আলোচনা দ্রুততর করতে হবে-বিলম্ব কমাতে হবে, খসড়া আরো স্পষ্ট করতে হবে এবং রাজনৈতিক অঙ্গীকার জোরদার করতে হবে। প্রতিটি পর্বে দীর্ঘসূত্রিতা মানে আরো একটি বছর অনিয়ন্ত্রিত দূষণ। পৃথিবী তা সহ্য করতে পারবে না, বাংলাদেশও না।”
ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশের অবস্থান বহু বছরের অভিজ্ঞতা এবং মানুষ, নদী, প্রতিবেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার দায়িত্ববোধ থেকেই গড়ে উঠেছে।”
পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. জিয়াউল হক বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের নিরপেক্ষতার স্বার্থে এটাই হওয়া উচিত: দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা
অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার পদত্যাগ করার বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সরকারের নিরপেক্ষতার স্বার্থে এটাই হওয়া উচিত।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, তাঁদের মধ্যে একজন (আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া) বলেছেন, তিনি নির্বাচন করবেন। যিনি নির্বাচন করবেন, একটি অরাজনৈতিক সরকারে তিনি আর থাকবেন না, সে জন্যই তিনি পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। তাঁরও কিছু দাপ্তরিক কাজ আছে। তফসিল ঘোষণার আগে সেগুলো শেষ করতে পারেন, সেই সময়টুকু পেলেন। এটা সে জন্য।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন ‘আরেকজনের (বিদায়ী উপদেষ্টা মাহফুজ আলম) কথা শুনিনি। আপনারা যেটা পত্রিকায় পড়েন, আমরাও সেটা পত্রিকায় পড়ি। কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে, সরকারের নিরপেক্ষতার স্বার্থে এটাই হওয়া উচিত।’
দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের পর তিনটি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার পদ ফাঁকা হচ্ছে। এসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কারা পাচ্ছেন, সে বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন ‘এটা সম্পূর্ণ প্রধান উপদেষ্টার এখতিয়ার।...পদত্যাগপত্র কার্যকর হোক। তারপর প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকেই জানতে পারবেন।’
বিদায়ী দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিলে প্রধান উপদেষ্টা তা গ্রহণ করেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের পদত্যাগ কার্যকর হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হন মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ। মাহফুজ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং আসিফ মাহমুদ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছিলেন।
গতকাল বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, তিনি নির্বাচন করবেন। তবে কোনো দল থেকে, নাকি স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করবেন, তা বলেননি।
আসিফ মাহমুদ ঢাকা থেকে ভোট করবেন, এটা আগেই জানিয়েছেন। তিনি গত ৯ নভেম্বর ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে ধানমন্ডিতে ভোটার হওয়ার আবেদন করেন। এরপর ঢাকা-১০ আসন (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ) থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুনতফসিল ঘোষণামাত্র কার্যকর হবে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ১৫ ঘণ্টা আগেসাংবাদিকের প্রশ্নে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমি নির্বাচন করব, এটা স্পষ্টভাবেই বলা যায়। কিন্তু কোথা থেকে করব, কোন দল থেকে করব, সেটা পরবর্তী বিশ্লেষণ।’
এদিকে পদত্যাগ করা তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম নির্বাচন করবেন কি না, তা তিনি জানাননি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এত দিন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন প্রধান উপদেষ্টাসহ ২৩ জন। তাঁদের মধ্যে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি পদত্যাগ করলেন।