ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে সামনে রেখে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ভবনের ভেতর ও আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রবেশপথে বসানো হয়েছে ব্যারিকেড। ভবনে ঢুকতে হচ্ছে তল্লাশি পেরিয়ে।

নির্বাচন ভবনের মূল ফটক ও সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও র‌্যাব সদস্যদের টহল বাড়ানো হয়েছে। আশপাশের সড়কগুলোতে সাধারণ মানুষের চলাচলেও আনা হয়েছে সীমাবদ্ধতা।

আরো পড়ুন:

পটুয়াখালী-২: জামায়াত নেতার ছেলে পেলেন এনসিপির মনোনয়ন

রেকর্ড করা হয়েছে সিইসির ভাষণ

আজ সন্ধ্যা ৬টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে তফসিল ঘোষণা করবেন। আগের দিন বুধবারও পুরো এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছিল।

দায়িত্বরত ডিএমপির এসআই (এডিসি) মাহবুবুল করিম বলেন, ‘‘তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি। নির্বাচন ভবনে প্রবেশকারীদের পরিচয় যাচাইসহ প্রতিটি পয়েন্টে তল্লাশি করা হচ্ছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না ঘটে, সে জন্যই এ ব্যবস্থা।’’

দায়িত্বরত ডিএমপির  ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ মাসুদ রহমতুল্লাহ  জানান, নির্বাচন কমিশনের অনুষ্ঠান আজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের মোতায়েন বেড়েছে। ভবনের চারপাশে টহল বাড়ানো হয়েছে এবং সন্দেহজনক যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

নির্বাচন ভবন এলাকায় কাজে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সালমা আক্তার বলেন, “দুপুরে দেখি আশপাশ ঘিরে অনেক পুলিশ। হাঁটতে একটু অসুবিধা হলেও নিরাপত্তা বাড়ানো ভালো। বড় অনুষ্ঠান বলে স্বাভাবিকভাবেই কড়াকড়ি থাকা উচিত। এতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’’

অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল হক খানিকটা বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘‘রাস্তায় ব্যারিকেড থাকায় ঘুরে যেতে হচ্ছে। তবে নির্বাচন সামনে এ কারণে নিরাপত্তা থাকাটা দরকার। কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য যেন খুব বেশি ভোগান্তি তৈরি না হয়ভ।’’

ঢাকা/এএএম//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্নীতির লাগাম টানতে ৭ পরিকল্পনার কথা জানালেন তারেক রহমান

দুর্নীতির সর্বব্যাপী বিস্তার রোধে সাত দফা কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবসে তিনি বলেন, দুর্নীতি আজও লাখো মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে দমবন্ধ করে ফেলছে।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তিনি।

পোস্টে তারেক রহমান লিখেছেন, “দুর্নীতি কীভাবে বাংলাদেশকে পঙ্গু করে দিচ্ছে- তা বুঝতে দূরে যাওয়ার দরকার নেই। মেধার ভিত্তিতে চাকরি খুঁজতে বের হওয়া একজন গ্র্যাজুয়েটের সঙ্গে কথা বললেই বুঝবেন। মাসের পর মাস ধরে একটি সাধারণ সরকারি সেবা পেতে হিমশিম খাওয়া কৃষকের দিকে তাকান। হাসপাতালে গিয়ে এক তরুণের পরিবার কীভাবে ভোগান্তিতে পড়ে, সেটা শুনুন। অথবা ব্যবসা বাঁচিয়ে রাখতে ঘুষ দিতে বাধ্য হওয়া উদ্যোক্তাদের ভোগান্তি দেখুন। খাবারের দাম কেন বাড়ে, স্কুলে ভালো পড়াশোনা কেন মেলে না, রাস্তায় কেন নিরাপত্তা নেই- সব কিছুর পিছনে সেই একই কারণ: দুর্নীতি। এটা লাখো মানুষের প্রতিদিনের জীবনকে দমবন্ধ করে ফেলেছে।”

তিনি লিখেছেন, “বাংলাদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই নতুন নয়, এটা বহু যুগের আলোচনার বিষয়। আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস আমাদের সেই লড়াইয়ের কথা মনে করিয়ে দেয়, আর মনে করিয়ে দেয় সেই সময়টাও, যখন বাংলাদেশ সত্যিকারের অগ্রগতি করেছিল। আর সেই সময়টা এসেছে মূলত বিএনপির আমলে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরানো, পরিচ্ছন্ন সরকারি সেবা আর অর্থনীতিকে মুক্ত করার কাজে হাত দিয়েছিলেন- যা অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার কমিয়ে দিয়েছিল। তারপর প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সময়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে আধুনিকায়ন শুরু হয়; নতুন ক্রয় নীতিমালা, কঠোর আর্থিক আইন, শক্তিশালী অডিট ব্যবস্থা, আর পরিষ্কার নজরদারি।”
 
তিনি আরো বলেন, “সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ ছিল ২০০৪ সালে ‘দুদক’ গঠন; একটি স্বাধীন কমিশন, যেখানে সরকার চাইলে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বিশ্বব্যাংক, এডিবি সবাই বলেছিল- এটা বাংলাদেশের জবাবদিহিতার বড় অগ্রগতি। টিআইবি’র জরিপেও দেখা গেছে- ২০০২ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। মানুষ নিজেরাই বলেছে- দুর্নীতি কমেছে। এটা কোনো গল্প নয়, এটা তখনকার সংস্কারের প্রমাণ।” 

যেসব বড় পরিবর্তনের জন্য বিএনপি গর্ব করতে পারে সেসব বিষয়ও ফেসবুক পোস্টে তুলে ধরেছেন তারেক রহমান। তার মতে বিএনপি ১। শক্তিশালী অর্থ ব্যবস্থাপনা: বাজেট নিয়ন্ত্রণ, অডিট, ব্যাংকিং ও মানি লন্ডারিং-বিরোধী আইন। ২। স্বচ্ছ ক্রয় নীতি: প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র, নিয়মের মধ্যে সরকারি ক্রয়- যা পরবর্তীতে দেশের সবচেয়ে বড় স্বচ্ছতার আইনের ভিত্তি তৈরি করে। ৩। উন্মুক্ত বাজার: টেলিকম, মিডিয়া, বিমান পরিবহন; যেখানে প্রতিযোগিতা বাড়ায় দুর্নীতি কমে, সাধারণ মানুষের সুযোগ বাড়ে। ৪। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ: প্রশাসন কম জটিল, কম ইচ্ছাধীন, বেশি মানুষের কাছে জবাবদিহিতা।

আগামী দিনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ আরও শক্তভাবে চালাতে বিএনপির পরিকল্পনাও তুলে ধরেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেগুলো হলো: ১। প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা: আদালত, দুদক, নির্বাচন কমিশন, সরকারি সেবা; কেউই যেন রাজনৈতিক চাপের মধ্যে না থাকে। ২। পুরোপুরি স্বচ্ছতা: উন্মুক্ত দরপত্র ব্যবস্থা, সম্পদ বিবরণী, রিয়েল-টাইম অডিট, শক্তিশালী তথ্য অধিকার আইন। ৩। বিচার ও আইনশৃঙ্খলা সংস্কার: পেশাদার পুলিশিং, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি, ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ। ৪। ই-গভর্ন্যান্স: লাইসেন্স, জমি, পেমেন্ট; সব অনলাইনে এনে ঘুষের সুযোগ কমানো (বিশ্বমান অনুযায়ী ৩০–৬০% দুর্নীতি কমতে পারে)। ৫। হুইসলব্লোয়ার সুরক্ষা: অনিয়ম ফাঁস করতে যারা সাহস দেখায়, তাদের নিরাপত্তা প্রদান। ৬। নৈতিক শিক্ষা: স্কুল–কলেজ থেকেই সততার চর্চা পাঠ্যসূচির অন্তর্ভূক্ত করা ও ৭। শক্তিশালী আর্থিক নজরদারি: ডিজিটাল ব্যয় ট্র্যাকিং ও স্বাধীন অডিট, সংসদের কঠোর তদারকি।

ফেসবুক পোস্টে তিনি আরো লিখেছেন, বহু বছর অব্যবস্থাপনার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই অবশ্যই কঠিন হবে।  কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসই প্রমাণ করে, যখন সৎ নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও জনগণের সমর্থন একসঙ্গে আসে, তখন পরিবর্তন অসম্ভব নয়। জনগণ যদি দায়িত্ব দেয়-বিএনপি আবারো সেই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।

ঢাকা/ইভা   

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন
  • দুর্নীতির লাগাম টানতে ৭ পরিকল্পনার কথা জানালেন তারেক রহমান
  • সাইবার হামলার বিষয়ে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করল অ্যাপল ও গুগল