শেরপুরে হেমন্তের বাতাসে তুলসীমালা ধানের সুবাস
Published: 11th, December 2025 GMT
হেমন্তের বিকেল। মাঠজুড়ে ছড়ানো তুলসীমালা ধানগাছগুলো শীতল বাতাসে দুলছে। দূর থেকে সেই বাতাসে ভেসে আসছে এ ধানের মিষ্টি গন্ধ। শেরপুরের সীমান্তবর্তী পাঁচ উপজেলার মাঠজুড়ে এখন সুগন্ধি আমেজ। এই সুবাস যেন জানিয়ে দেয়, আশপাশে তুলসীমালা ধান ফলেছে।
তুলসীমালা দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী সুগন্ধি চাল। তুলনামূলকভাবে চিকন ও কালো রঙের ধানটি দিয়ে পোলাও, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, পায়েস ও পিঠা তৈরি করা হয়। স্বাদ ও গন্ধে অনন্য হওয়ায় বহু আগেই দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও এর কদর বেড়েছে। ‘পর্যটনের আনন্দে, তুলসীমালার সুগন্ধে’ স্লোগান নিয়ে ২০১৮ সালে শেরপুর জেলা প্রশাসন একে ‘ব্র্যান্ডিং পণ্য’ ঘোষণা করে। এরপর ২০২৩ সালের ১২ জুন ধানটি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়, যা দেশের ১৪তম জিআই পণ্য।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গন্ধ, স্বাদ ও গুণে অতুলনীয় এই তুলসীমালা ধান এখন শেরপুরের কৃষি ঐতিহ্যের অন্যতম গর্ব। বাতাসে ছড়িয়ে পড়া এর সুবাস পরিচিত করে তোলে ‘সুগন্ধি ধানের জেলা’ হিসেবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে শেরপুরের পাঁচ উপজেলায় মোট ৮ হাজার ৭১৮ হেক্টর জমিতে তুলসীমালা ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে শেরপুর সদরে ২ হাজার ২২৫ হেক্টর, নালিতাবাড়ীতে ৪ হাজার ১৪৭ হেক্টর, ঝিনাইগাতীতে ১ হাজার ২৩১ হেক্টর, নকলায় ৬৯১ হেক্টর ও শ্রীবরদীতে ৪২৫ হেক্টর। এখন এসব মাঠে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে।
নিজের খেতের তুলসীমালা ধান দেখাচ্ছেন এক কৃষক.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত লস ম ল
এছাড়াও পড়ুন:
কেনিয়া: মাউ মাউ বিদ্রোহ ও স্বাধীনতার গর্জন
আফ্রিকার দিগন্তজোড়া সাভানা আর বন্য প্রকৃতির দেশ কেনিয়া। কিন্তু এই শান্ত প্রকৃতির আড়ালে লুকিয়ে আছে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের এক উত্তপ্ত ইতিহাস। আজ ১২ ডিসেম্বর কেনিয়ার ‘জামহুরি দিবস’ (Jamhuri Day)। সোয়াহিলি ভাষায় ‘জামহুরি’ শব্দের অর্থ ‘প্রজাতন্ত্র’। এই দিনটি কেনিয়াবাসীর কাছে দ্বিগুণ আনন্দের—কারণ, ১৯৬৩ সালের এই দিনে তারা ব্রিটিশদের হাত থেকে স্বাধীনতা লাভ করে এবং ঠিক এক বছর পর ১৯৬৪ সালের একই দিনে দেশটি প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
কেনিয়ার এই বিজয়ের পথ মোটেও মসৃণ ছিল না। ১৯৫০-এর দশকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ‘মাউ মাউ বিদ্রোহ’ (Mau Mau Uprising) ছিল এই স্বাধীনতার মূল চালিকাশক্তি। জঙ্গল ও পাহাড়ের আড়াল থেকে সাধারণ কৃষকেরা ব্রিটিশদের আধুনিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে দা, কুড়াল আর পুরোনো বন্দুক নিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিল। ব্রিটিশরা হাজার হাজার স্বাধীনতাকামীকে বন্দী করে, হত্যা করে ও নির্যাতন চালায়। কিন্তু মাউ মাউ যোদ্ধাদের সেই আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। তাদের সেই রক্তস্রোতই শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশদের কেনিয়া ছাড়তে বাধ্য করে।
কেনিয়াবাসী ঘটা করে উদ্যাপন করে ‘জামহুরি দিবস’