পণ্ডিত রবিশঙ্কর—সেতারের কিংবদন্তি শিল্পী, যাঁকে শ্রদ্ধাভরে ‘সেতারসম্রাট’ বলা হতো—ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতকে শুধু একটি ধারায় সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি সে সংগীতকে সময়, ভূগোল আর সংস্কৃতির সীমারেখা পেরিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বমঞ্চে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সংগীতধারার সেতুবন্ধ ঘটিয়ে তিনি সৃষ্টি করেছিলেন এক নতুন সাংস্কৃতিক জাগরণ। অথচ এই মহিরুহ শিল্পীকেও তাঁর দীর্ঘ ও বর্ণিল শিল্পীজীবনে অন্তর্গত দ্বন্দ্ব, নীরব প্রতিযোগিতা ও সামাজিক বাস্তবতার মোকাবিলা করতে হয়েছে। আজ ১১ ডিসেম্বর—এই মহান সংগীতস্রষ্টার প্রয়াণদিবসে তাঁর সেই বিস্তৃত, জটিল ও মানবিক অধ্যায়গুলো নতুন করে ফিরে দেখা যাক।

নড়াইল থেকে বারানসি
রবিশঙ্করের পূর্ণ নাম রবীন্দ্রশঙ্কর চৌধুরী। তাঁর পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের নড়াইল জেলায় হলেও জীবনের শুরুটা হয় ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসিতে। কর্মসূত্রে তাঁর বাবা নড়াইল ছেড়ে বারানসিতে চলে যান। সেখানেই ১৯২০ সালের ৭ এপ্রিল জন্ম নেন রবিশঙ্কর। এই শহরের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আবহ, গঙ্গার তীরঘেঁষা সংগীতচর্চা তাঁর মননে প্রাথমিকভাবে প্রভাব ফেলে।
রবিশঙ্করের বড় ভাই উদয়শঙ্কর ছিলেন উপমহাদেশের অন্যতম পথিকৃৎ নৃত্যশিল্পী। ভারতীয় নৃত্যকে আধুনিক মঞ্চে উপস্থাপন করে তিনি ইউরোপজুড়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। দাদার নৃত্যদলের সদস্য হিসেবেই শৈশবে ইউরোপ ভ্রমণের সুযোগ পান রবিশঙ্কর। সেই সময়েই তাঁর ভেতর জন্ম নেয় সংগীত, ছন্দ ও শিল্পবোধের গভীর আকাঙ্ক্ষা। নৃত্য, সরোদ ও সংগীতের সমন্বিত চর্চা তাঁর শিল্পীসত্তার ভিত্তিকে বহুমাত্রিক করে তোলে।

গুরু আলাউদ্দিন খাঁ প্রসঙ্গ
রবিশঙ্করের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঁক আসে প্যারিসে। উদয়শঙ্করের দলের সঙ্গে ইউরোপ সফরের সময় সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় ঘটে কিংবদন্তি সংগীতগুরু ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর। এ সাক্ষাৎই নির্ধারণ করে দেয় রবিশঙ্করের ভবিষ্যৎ। পরবর্তী সময়ে মধ্যপ্রদেশের মাইহার শহরে গিয়ে তিনি গ্রহণ করেন আলাউদ্দিন খাঁর কঠোর শিষ্যত্ব।

দিনের পর দিন নিরবচ্ছিন্ন রেওয়াজ, শারীরিক ক্লান্তি আর মানসিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে তিনি গড়ে ওঠেন একজন পরিপূর্ণ সেতারবাদক হিসেবে।পণ্ডিত রবিশঙ্কর ছিলেন সেতারের কিংবদন্তি শিল্পী.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যে ব্যথা, যে দ্বন্দ্ব লুকিয়ে রেখেছিলেন রবিশঙ্কর

পণ্ডিত রবিশঙ্কর—সেতারের কিংবদন্তি শিল্পী, যাঁকে শ্রদ্ধাভরে ‘সেতারসম্রাট’ বলা হতো—ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতকে শুধু একটি ধারায় সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি সে সংগীতকে সময়, ভূগোল আর সংস্কৃতির সীমারেখা পেরিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বমঞ্চে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সংগীতধারার সেতুবন্ধ ঘটিয়ে তিনি সৃষ্টি করেছিলেন এক নতুন সাংস্কৃতিক জাগরণ। অথচ এই মহিরুহ শিল্পীকেও তাঁর দীর্ঘ ও বর্ণিল শিল্পীজীবনে অন্তর্গত দ্বন্দ্ব, নীরব প্রতিযোগিতা ও সামাজিক বাস্তবতার মোকাবিলা করতে হয়েছে। আজ ১১ ডিসেম্বর—এই মহান সংগীতস্রষ্টার প্রয়াণদিবসে তাঁর সেই বিস্তৃত, জটিল ও মানবিক অধ্যায়গুলো নতুন করে ফিরে দেখা যাক।

নড়াইল থেকে বারানসি
রবিশঙ্করের পূর্ণ নাম রবীন্দ্রশঙ্কর চৌধুরী। তাঁর পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের নড়াইল জেলায় হলেও জীবনের শুরুটা হয় ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসিতে। কর্মসূত্রে তাঁর বাবা নড়াইল ছেড়ে বারানসিতে চলে যান। সেখানেই ১৯২০ সালের ৭ এপ্রিল জন্ম নেন রবিশঙ্কর। এই শহরের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আবহ, গঙ্গার তীরঘেঁষা সংগীতচর্চা তাঁর মননে প্রাথমিকভাবে প্রভাব ফেলে।
রবিশঙ্করের বড় ভাই উদয়শঙ্কর ছিলেন উপমহাদেশের অন্যতম পথিকৃৎ নৃত্যশিল্পী। ভারতীয় নৃত্যকে আধুনিক মঞ্চে উপস্থাপন করে তিনি ইউরোপজুড়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। দাদার নৃত্যদলের সদস্য হিসেবেই শৈশবে ইউরোপ ভ্রমণের সুযোগ পান রবিশঙ্কর। সেই সময়েই তাঁর ভেতর জন্ম নেয় সংগীত, ছন্দ ও শিল্পবোধের গভীর আকাঙ্ক্ষা। নৃত্য, সরোদ ও সংগীতের সমন্বিত চর্চা তাঁর শিল্পীসত্তার ভিত্তিকে বহুমাত্রিক করে তোলে।

গুরু আলাউদ্দিন খাঁ প্রসঙ্গ
রবিশঙ্করের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঁক আসে প্যারিসে। উদয়শঙ্করের দলের সঙ্গে ইউরোপ সফরের সময় সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় ঘটে কিংবদন্তি সংগীতগুরু ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর। এ সাক্ষাৎই নির্ধারণ করে দেয় রবিশঙ্করের ভবিষ্যৎ। পরবর্তী সময়ে মধ্যপ্রদেশের মাইহার শহরে গিয়ে তিনি গ্রহণ করেন আলাউদ্দিন খাঁর কঠোর শিষ্যত্ব।

দিনের পর দিন নিরবচ্ছিন্ন রেওয়াজ, শারীরিক ক্লান্তি আর মানসিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে তিনি গড়ে ওঠেন একজন পরিপূর্ণ সেতারবাদক হিসেবে।পণ্ডিত রবিশঙ্কর ছিলেন সেতারের কিংবদন্তি শিল্পী

সম্পর্কিত নিবন্ধ