ক্রিকেট
নিউ জিল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন
সরাসরি, ভোর ৪টা;
টি স্পোর্টস ও সনি স্পোর্টস ফাইভ।
ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি
সরাসরি, সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিট;
টি স্পোর্টস।
মেয়েদের বিগ ব্যাশ লিগ
সিডনি সিক্সার্স-পার্থ স্কোরচার্স
সরাসরি, দুপুর ২টা ১০ মিনিট;
স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১।
ফুটবল
ইউরোপা লিগ
সেল্টিক-রোমা
সরাসরি, রাত ২টা;
সনি লিভ ও সনি স্পোর্টস ওয়ান।
সেল্তা ভিগো-বোলোনিয়া
সরাসরি, রাত ২টা;
সনি লিভ।
এফসি বাসেল-অ্যাস্টন ভিলা
সরাসরি, রাত ২টা;
সনি লিভ।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হোসনেয়ারা বেগমরা আমাদের অনুপ্রেরণা
বাংলাদেশে প্রসবকালীন মা ও শিশুর মৃত্যুর হার কমাতে গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি উদ্যোগ, স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ এবং তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের ফলেই এই সাফল্য এসেছে। এই সাফল্যে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার চন্দ্রশেখরদী গ্রামের হোসনেয়ারা বেগমের মতো নারীদের অবদান কোনোভাবেই কম নয়। ৩৫ বছর ধরে বিনা মূল্যে ১১ হাজারের বেশি প্রসূতির সফল প্রসব করিয়েছেন তিনি, যেখানে একটিও মাতৃমৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। মাতৃস্বাস্থ্যের জন্য এটি নিঃসন্দেহে অনন্য একটি ঘটনা।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ১৯৯০ সালে হোসনেয়ারা অন্তঃসত্ত্বা নারীদের স্বাভাবিক প্রসব করানোর বিষয়ে সরকারি প্রশিক্ষণ শুরু করেন। টানা ৩৬ মাস চলে সেই প্রশিক্ষণ। তখন থেকে উপজেলার নানা গ্রামে গিয়ে কাজ করেন তিনি। এই কাজের উৎসাহ পেয়েছিলেন তাঁর শাশুড়ি জয়বাহার আক্তারের কাছ থেকে। মা ও নবজাতকের হাসির অনুপ্রেরণায় সেই কাজটি কয়েক দশক ধরে করে যাচ্ছেন হোসনেয়ারা।
যখন দুর্যোগে নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে, যখন ঝড়–বৃষ্টির রাতে অসুস্থ শরীর নিয়েও হাসপাতালে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়ে অথবা ঈদের দিনের প্রস্তুতি ফেলে যখন প্রসবব্যথায় কাতর মায়ের পাশে ছুটে যেতে হয়, ঠিক তখনই তাঁরা হয়ে ওঠেন গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা নারীদের বিপদের একমাত্র বন্ধু, আস্থার শেষ ভরসা। ২০০২ সালে দুর্ঘটনার শিকার এক মায়ের যমজ সন্তান প্রসব করানো এবং তাঁদের শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক করার মতো ঘটনা প্রমাণ করে হোসনেয়ারা কেবল একজন ধাত্রী নন, তিনি সংকটের মুহূর্তে জীবন বাঁচানোর দক্ষ কারিগর।
বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস করার ক্ষেত্রে গ্রামের এই নার্সদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। হোসনেয়ারার ৩৫ বছরের কর্মজীবনে একটিও মাতৃমৃত্যু না হওয়াটা তাঁর দক্ষতা, নিষ্ঠা এবং প্রথাগত জ্ঞানের সঙ্গে সরকারি প্রশিক্ষণের সফল মিশ্রণকে তুলে ধরে। প্রত্যন্ত অঞ্চল, যেখানে জরুরি ভিত্তিতে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানো কঠিন, সেখানে হোসনেয়ারা বেগমদের মতো প্রশিক্ষিত ধাত্রীরাই প্রসবকালীন জটিলতা নিরসনে প্রাথমিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। পারিশ্রমিক ছাড়াই হোসনেয়ারা এ কাজ করে যাচ্ছেন, তার মানে মানবসেবা তাঁর কাছে পেশা নয়, বরং একটি ব্রত।
একটি বড় প্রশ্ন, যে মহৎপ্রাণ মানুষটি প্রায় তিন যুগ ধরে হাজার হাজার জীবন বাঁচালেন, অসুস্থ শরীরেও ছুটে গেলেন দুর্যোগে, তিনি কেন এখনো স্বাস্থ্যসেবায় অবদানের জন্য কোনো সরকারি বা বেসরকারি পুরস্কারে ভূষিত হননি? হোসনেয়ারা বেগমের মতো যাঁরা তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার ভিত্তি হিসেবে কাজ করছেন, তাঁদের শুধু সম্মাননা দিলেই হবে না, বরং তাঁদের কাজের পদ্ধতিকে আনুষ্ঠানিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে আরও শক্তিশালীভাবে যুক্ত করতে হবে। তাঁদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন ধাত্রী বা স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষিত করা সময়ের দাবি। হোসনেয়ারা বেগমরা আমাদের অনুপ্রেরণা। তাঁদের প্রতি অভিবাদন।