কিশোরগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ স্কুল শিক্ষার্থী নিহত, সড়ক অবরোধ
Published: 18th, February 2025 GMT
কিশোরগঞ্জে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ স্কুল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় কটিয়াদীতে নিহতের সহপাঠীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে দেয়।
মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ও কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ছনকান্দা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো- দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামের প্রবাসী নজরুল ইসলামের মেয়ে ও প্রাপ্তি আইডিয়াল স্কুলের ছাত্রী নোহা আক্তার ও মধ্যপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র আলী আকবর (১৩) ও জুনায়েদ (১২)। নিহত দুজন চাচাতো ভাই।
জানা যায়, স্কুলে যাওয়ার পথে একটি অটোরিকশা নোহাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে ক্রীড়া অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মোটরসাইকেলে চড়ে স্কুলে যাওয়ার পথে মধ্যপাড়া সড়কে একটি বাস তাদের চাপা দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই আলী আকবর নিহত ও জুনায়েদ আহত হয়। জুনায়েদকে উদ্ধার করে ভাগলপুর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত অটোরিকশা চালক দিদার মিয়া দুর্ঘটনার পর অটোরিকশা ও তার মোবাইল ফোন ফেলে পালিয়ে গেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন ও কটিয়াদী হাইওয়ে থানার ওসি মামুনুর রশিদ।
পাকুন্দিয়া থানার ওসি মারুফ হোসেন জানিয়েছেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। অটোরিকশা জব্দ করে এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কটিয়াদী হাইওয়ে থানার ওসি মামুনুর রশিদ বলেন, নিহতের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ দ র ঘটন ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বসুন্ধরার চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ব্যাংকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে সংস্থার সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১–এ মামলাটি করেন। মামলায় আহমেদ আকবর সোবহান ছাড়াও তাঁর দুই ছেলেসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আহমেদ আকবর সোবহানের দুই ছেলে হলেন বসুন্ধরা ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদাত সোবহান এবং একই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সাফিয়াত সোবহান।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আখতার হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক মনোয়ারা সিকদার, পারভীন হক সিকদার, মোয়াজ্জেম হোসেন, রিক হক সিকদার, রন হক সিকদার, মো. আনোয়ার হোসেন ও এ কে এম এনামুল হক শামীম, ব্যাংকটির ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হাসিনা সুলতানা, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজার আরিফ মো. শহিদুল হক, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ক্রেডিট ইন চার্জ আনিসুল হক, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সুলতানা পারভিন ও সুবল চন্দ্র রায় এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ কামরুল হাসান মিঠু। তাঁদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৯/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলটি করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, আসামিরা ব্যাংকের প্রচলিত বিধিবিধান লঙ্ঘন করে এবং ঋণের শর্ত পূরণ না করেই বসুন্ধরা ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ৬০০ কোটি টাকা ‘ফান্ডেড’ ও ৭৫০ কোটি টাকা নন-ফান্ডেড—মোট ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করেন। পরবর্তী সময়ে বিতরণ করা ফান্ডেড ঋণের ৬০০ কোটি টাকা পরিশোধ না করে পরস্পর যোগসাজশে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন। আত্মসাৎ করা টাকার অবৈধ উৎস, অবস্থান এবং মালিকানা গোপন করার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা থেকে ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়।
এ ছাড়া এই অর্থের আরেকটি অংশ রংধনু বিল্ডার্স নামের প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের হিসাবে স্থানান্তর করে ঋণ সমন্বয় ও নগদ উত্তোলন করে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী বড় বড় ব্যবসায়ীদের দুর্নীতি-অনিয়মের বিষয়েও অনুসন্ধানে নামে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা। তার ধারাবাহিকতায় বসুন্ধরার চেয়ারম্যান এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে ‘সরকারের রাজস্ব ফাঁকি, ভূমি জবরদখল, ঋণের অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ স্থানান্তর ও হস্তান্তর, অর্থ পাচারের’ অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
এর অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের দুদকে তলবও করা হয়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) বসুন্ধরাসহ পাঁচ বড় কোম্পানির মালিকদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। তাঁদের ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠায়।
এরপর গত বছর ২১ অক্টোবর ঢাকার আদালত বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানসহ তাঁর পরিবারের আট সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। তার আগে ৬ অক্টোবর তাঁদের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।