অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে খ্যাতিমান লেখক মোজাফ্‌ফর হোসেনের একটি উপন্যাস এবং একটি প্রবন্ধগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। উপন্যাস ‘কল মি লাইকা’, প্রবন্ধগ্রন্থ  ‘‘ব্রাহ্মসমাজে ইসলাম, সাহিত্যে সক্রিয়তাবাদ ও অন্যান্য”।

উপন্যাস ‘কল মি লাইকা’র প্রেক্ষাপ সম্পর্কে লেখক জানিয়েছেন, উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র প্রকৃতি-অন্তপ্রাণ এক কিশোর। নাম আলেক। সব সময় নিজের চিন্তাজগতে বসবাস করে সে। কিন্তু একটা ‘বিশেষ’ কারণে সমাজে তার আশ্রয় হয় না। প্রথমে স্কুল থেকে এরপর একে একে সব কিছু থেকে বের করে দেওয়া হয় তাকে। এক সময় পরিবারেও জায়গা হয় না তার।

প্রকৃতির মধ্যে মিশে যেতে থাকে পরিত্যক্ত আলেকের আশ্রয়হীন নিঃসঙ্গ জীবন। ওর বেঁচে থাকার স্বপ্ন, বিশ্বাস, ভালোবাসা, বেদনা ও উল্লাস—সবকিছু তলিয়ে যেতে থাকে হতাশার অতল গহ্বরে। আলেক একাকী অন্ধকার আকাশে চোখ তুলে লাইকার কথা ভাবে। তার মনে প্রশ্ন জাগে, পৃথিবীর কক্ষপথে নিক্ষিপ্ত লাইকা কি একবারের জন্যও বুঝেছিল, ওই যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু ওকে অমর করে দেবে? লাইকার মতো সেও কি কোনো এক্সপেরিমেন্টের অংশ? আলেকের সমান্তরালে তার পরিবারের প্রতিটি মানুষ এই উপন্যাসের প্রটাগনিস্ট। ‘অস্পৃশ্য’ ও ‘অনাশ্রিত’ জীবনের এই গল্প পাঠকদের নানাভাবে পীড়িত করবে, প্রশ্নবিদ্ধ করবে সমাজকে।

আরো পড়ুন:

রিয়াজুল হকের ‘দ্য আর্ট অব পিস’ একুশে বইমেলায়

একুশে বইমেলায় ফাল্গুনী তানিয়া`র তিন বই

উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে ক্রিয়েটিভ ঢাকা। অমর একুশে বইমেলায় স্টল নম্বর ৬৩৭-৬৩৮। প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ করেছেন আবিদ-এ-আজাদ। মূল্য ৪৫০ টাকা। 
  
মোজাফ্‌ফর হোসেনের প্রবন্ধগ্রন্থ ‘‘ব্রাহ্মসমাজে ইসলাম, সাহিত্যে সক্রিয়তাবাদ ও অন্যান্য” প্রকাশিত হয়েছে বিদ্যাপ্রকাশ থেকে। 

প্রবন্ধগ্রন্থটির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে লেখক জানিয়েছেন, তখনো বাংলা গদ্যে ইসলামচর্চা শুরু হয়নি, প্রকাশিত হয়নি পবিত্র আল কুরানের পূর্নাঙ্গ বাংলা অনুবাদ। খ্রিস্টধর্ম প্রচারে নিয়োজিত খ্রিস্টান মিশনারিগুলির উদ্যোগে হজরত মুহাম্মদ (সা.

)-এর বিকৃত জীবনী প্রকাশ করে ইসলাম সম্পর্কে অপপ্রচার করা হচ্ছে। সেই সময় হিন্দুসমাজ থেকে কয়েকজন পণ্ডিত ব্রাহ্মসমাজের আদর্শে দীক্ষিত হয়ে নবীজীবনী ও ইসলাম-সম্পর্কিত রচনায় হাত দিলেন। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হলো বাংলা গদ্যে কুরানের প্রথম পূর্নাঙ্গ অনুবাদ, হজরত মুহাম্মদ (সা)-সহ গুরুত্বপূর্ণ চার নবী ও খলিফাদের প্রথম জীবনী, হাদিসগ্রন্থের অনুবাদ। এসব গ্রন্থ রচনার পেছনে ব্রাহ্মসমাজের ভুমিকা কেমন ছিল, নন-মুসলিম হয়েও তাদের ইসলামধর্ম-চর্চার উদ্দেশ্যেই-বা কি ছিল—তা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি এই গ্রন্থে ইসলামধর্ম ও হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দৃষ্টিভঙ্গি ও মুসলমান প্রজাদের সঙ্গে তার সম্পর্কের প্রকৃত চিত্রটা উঠে এসেছে সবিস্তারে।

বইটির প্রচ্ছদ করেছেন আবিদ-এ-আজাদ। এটির মূল্য রাখা হয়েছে ৪০০টাকা। 

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপন য স বইম ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার রানওয়ে প্রশিক্ষণ বিমান ওড়ানোর জন্য কতটা নিরাপদ

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম আকাশপথ। প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রীবাহী বিমান, কার্গো, ভিআইপি ও সামরিক-বেসামরিক বিমান, হেলিকপ্টার ওঠানামা করছে এই একমাত্র আন্তর্জাতিক হাব থেকে।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সলো ফ্লাইট প্রশিক্ষণের জন্য উপযুক্ত বা নিরাপদ নয়, কারণ এখানে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিমানবন্দরটি একটি নিয়ন্ত্রিত ক্লাস সি–ডি এয়ারস্পেসের মধ্যে পড়ে, যেখানে প্রতিটি ফ্লাইটকে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে প্রতি পদক্ষেপে যোগাযোগ রাখতে হয়।

একজন নতুন প্রশিক্ষণার্থী পাইলট, বিশেষ করে একা থাকার সময়, এ ধরনের জটিল রেডিও যোগাযোগ ও সেই নির্দেশ পালন করতে গিয়ে মানসিকভাবে চাপে পড়ে, ককপিট ওয়ার্কলোড বা ককপিটে কাজের চাপ বেড়ে যায়, যা বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি করে। 

এ ছাড়া এই বিমানবন্দরে বোয়িং ৭৭৭ বা এয়ারবাস এ-৩৩০-এর মতো বড় বিমানগুলো ওঠানামা করে, যেগুলোর পেছনে তৈরি হওয়া ওয়েক টারবুলেন্স বা আকাশ ঝাঁকুনি ছোট প্রশিক্ষণ বিমানের জন্য মারাত্মক বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।

আবার কোনো কারণে এই যোগাযোগব্যবস্থা ব্যাহত হলে মাঝ আকাশে সংঘর্ষও হতে পারে। এর ওপর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকা অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ, ফলে কোনো ইমার্জেন্সি বা বিশেষ পরিস্থিতিতে জরুরি অবতরণের উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব।

সবশেষে এই বিমানবন্দরে প্রশিক্ষণের জন্য নির্ধারিত কোনো আলাদা সময়সূচি বা নির্দিষ্ট ট্রেনিং এলাকা নেই, যা অনেক দেশের প্রশিক্ষণবান্ধব বিমানবন্দরগুলোতে থাকে। এসব কারণেই এই বিমানবন্দর ছাত্র পাইলটদের একক ফ্লাইট অনুশীলনের জন্য উপযুক্ত নয়। বিকল্প হিসেবে লালমনিরহাট, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, যশোরের মতো তুলনামূলকভাবে কম ব্যস্ত ও নিরাপদ বিমানবন্দরগুলো প্রশিক্ষণের জন্য বেশি কার্যকর ও নিরাপদ বলে বিবেচিত।

যেদিন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম এফ-৭ যুদ্ধবিমান নিয়ে সলো ফ্লাইটে (একা বিমান নিয়ে)  উড়েছিলেন, সেদিনের আবহাওয়া ছিল একেবারে অনুকূলে—উড়ানের জন্য যথাযথ। তৌকির নিঃসন্দেহে একজন মেধাবী, দক্ষ ও চৌকস বৈমানিক।

আশির দশকে যখন ঢাকা রানওয়ে তৈরি হয়, তা শহর থেকে দূরে নিয়ম মেনেই তৈরি হয়েছিল। রানওয়ে শহরে ঢোকেনি। আমরা আমাদের শহর বানিয়ে রানওয়ে গিলে খেয়েছি। এখন যদি আরও নতুন রানওয়ে বানাই, লাভ হবে কী?

তাঁকে সলো ফ্লাইটের অনুমতি প্রদানকারী প্রশিক্ষকও নিঃসন্দেহে একজন অভিজ্ঞ ও বিচক্ষণ পাইলট। একজন শিক্ষার্থী পাইলটকে ১০০-তে ১০০ বিবেচনা করেই প্রশিক্ষক তাঁর ছাত্র পাইলটকে একা বিমান চালাতে পাঠান। প্রতিটা পদক্ষেপে কোথায় কেমন জরুরি পরিস্থিতি হতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে সেই জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়গুলো বাস্তবিকভাবেই হাতে–কলমে আকাশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এসব শেষ হওয়ার পরই একজন প্রশিক্ষণার্থী পাইলটকে একক ফ্লাইট বা একা বিমান উড়াতে দেওয়া হয়।

একজন বিমানচালক হিসেবে আমার প্রথম প্রশ্ন, ঢাকা রানওয়ের আশপাশে কোথাও কি এই অনুশীলনগুলো করা হয়েছে? ফাঁকা জায়গাটা কোথায়?

ঢাকা টাওয়ার যখন প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানের একক ফ্লাইটের অনুমতি দিল, তখন কি টাওয়ার জানত না, সেই সময় রেগুলার শিডিউল ফ্লাইটের অবতরণ আছে এবং নিয়মিত ট্রাফিক চলাচল বিঘ্নিত হতে পারে এ ধরনের ফ্লাইটের অনুমতি দিলে?

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিআইডি। অন্যদিকে বিধস্ত বিমানের বিভন্ন অংশ সংগ্রহ করেন বিমান বাহিনীর সদস্যরা। ২২ জুলাই

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ
  • কুয়েটে অচলাবস্থার ১৬০ দিন, ক্লাস শুরু মঙ্গলবার
  • রংপুরে হামলার শিকার পরিবারগুলো আতঙ্কে, বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে
  • ঢাকার রানওয়ে প্রশিক্ষণ বিমান ওড়ানোর জন্য কতটা নিরাপদ