বিজ্ঞান ও শিল্প-প্রযুক্তির বিকাশে স্কুল–কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের এবং স্বশিক্ষিত বিজ্ঞানীদের নিয়ে তিন দিনব্যাপী বিসিএসআইআর বিজ্ঞান ও শিল্প প্রযুক্তি মেলা ২০২৫ গতকাল বুধবার পরিষদের ঢাকার ধানমন্ডি ক্যাম্পাসে শেষ হয়েছে।

খুদে বিজ্ঞানীদের এই মিলনমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ী প্রতিযোগীদের মধ্যে পুরস্কার ও সনদ বিতরণ করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো.

দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, প্রতিবছর এই আয়োজন নতুন নতুন বিজ্ঞানী, গবেষক ও উদ্ভাবক সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান সামিনা আহমেদ। তিনি বলেন, সারা দেশে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ থেকে ৭৫টির অধিক প্রকল্প নিয়ে শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে। ফলে সারা দেশে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো আমাদের যে প্রয়াস ছিল, সেটা অনেকটাই সফল হয়েছে। খুদে বিজ্ঞানীদের প্রকল্প তাদের সুপ্ত মনের চিন্তাচেতনা আমাদের বিমোহিত করেছে। শিক্ষার্থীদের তিনটি গ্রুপে আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতায় স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল অভাবনীয়, যা বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি তাদের আকর্ষণ বাড়িয়েছে।

তিন দিনব্যাপী (২৪-২৬ ফেব্রুয়ারি) আয়োজিত এই বিজ্ঞান মেলায় বিভিন্ন গ্রুপে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৬৮টি বিজ্ঞান প্রজেক্ট প্রদর্শিত হয়, যেখানে অংশগ্রহণ করে প্রায় ২৫০ খুদে বিজ্ঞানী। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও মেলায় উপস্থিত দর্শনার্থীদের জন্য তাদের কার্যক্রম তুলে ধরে।

মেলায় ক-গ্রুপে (ষষ্ঠ থেকে আষ্টম শ্রেণি) ২১টি প্রকল্প নিয়ে ১৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭৬ জন অংশ নেয়। এতে মোহাম্মদ হাসিফ আলম, সিফাত উল্লাহ ও মো. মাহির শাহরিয়ার প্রথম স্থান অর্জন করে। দ্বিতীয় হয় আফরা তাসনিম, রায়য়াত মাহমুদ ও মাহমুদুল হাসান এবং তৃতীয় হয় ফাইয়াজ বিন ইকবাল।

খ-গ্রুপে (নবম থেকে দশম শ্রেণি) ১৫টি প্রকল্প নিয়ে ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬০ জন অংশ নেয়। এতে ইকবাল হাসান মাহমুদ, মাহমুদুল হাসান ও রেহনুমা তাসনিম প্রথম স্থান অর্জন করে। দ্বিতীয় হয় তাহসিন আবিদ, সামিউল আলম ও আবিদ হাসান এবং তৃতীয় হয় মো. ইব্রাহীম সাফি।

গ-গ্রুপে (একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) ১৮টি প্রকল্প নিয়ে ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫৮ জন অংশ নেয়। এতে অলোক রায় ও জাবীর জারিফ আখতার প্রথম স্থান অর্জন করে। দ্বিতীয় হয় আবিদ ইহসান, প্রীতম চক্রবর্তী ও মো. রেদুয়ান ইসলাম। তৃতীয় হয় আবিদ হাসান, কাজী অনিক আরমান ও মো. তাহমিদ।

ঘ-গ্রুপে (স্বশিক্ষিত বিজ্ঞানী) ৩টি প্রকল্প নিয়ে ৯ জন অংশ নেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প ন য় জন অ শ ন ত য় হয়

এছাড়াও পড়ুন:

বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট: ‘মৃত’ নন জীবিত এমন ১৫ জনকে হাজির করলে ব্যবস্থা

বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ চিহ্নিত ১৫ জন জীবিতকে হাজির করাতে পারলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ব্যবস্থা নেবেন। বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আইনজীবীদের এ আশ্বাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচী এ আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া দেওয়া হলে তাঁরা অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

আবেদনকারীদের উদ্দেশে দুই বিচারপতি বলেছেন, প্রক্রিয়ায় অনিয়ম বা ত্রুটি পাওয়া গেলে অবশ্যই তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।

মামলাকারীদের আবেদন মেনে সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য খসড়া ভোটার তালিকা পেশ করার ওপর স্থগিতাদেশ দেননি। তবে ইসিকে তাঁরা বলেছেন, তাদের কাজ গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া নয়। তাদের দেখা উচিত যাতে গণহারে ভোটারদের তালিকাভুক্ত করা যায়।

এসআইআর–প্রক্রিয়া অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংশোধনের পর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ আগস্ট। সে লক্ষ্যেই ইসি এগিয়ে চলেছে। ইসি সূত্রে খবর, নিবিড় সংশোধনপ্রক্রিয়ার পর প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে ৬৫ লাখেরও বেশি নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২২ জন ‘মৃত’, ৩৬ লাখ ‘নিখোঁজ’। এ ছাড়া বেশ কয়েক লাখ ভোটারের নাম বিভিন্ন এলাকার তালিকায় রয়েছে। অর্থাৎ একই ভোটার অন্তত দুই জায়গায় নথিভুক্ত। আগের তালিকা অনুযায়ী বিহারে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৮৯ লাখ। ইসির দাবি, এই তালিকায় বহু ভোটার ভুয়া। তাদের বাদ দিতেই এই নিবিড় সংশোধন।

যে প্রক্রিয়ায় এই খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, মামলাকারীদের আপত্তি তা নিয়েই। তাঁদের অভিযোগ, ইসি যেভাবে নাগরিকত্বের যাচাই করছে, সে জন্য যেসব নথি পেশ করতে বলা হচ্ছে, তা বহু ক্ষেত্রে সম্ভবপর নয়। তেমন করা তাদের কাজও নয়। সেই কাজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে বহু দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের ভোটাধিকার ইসি কেড়ে নিচ্ছে।

গত সোমবার ও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। মঙ্গলবারের শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে আশ্বস্ত করে বিচারপতিরা বলেন, কমিশনের ত্রুটি–বিচ্যুতি দেখলে তাঁরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। ভোটার প্রমাণে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডকে নথি হিসেবে গ্রাহ্য করার সুপারিশ বিচারপতিরা জোরের সঙ্গে করেছেন। এই দুই নথি জাল করা সহজ বলে ইসির দাবি নস্যাৎ করে বিচারপতিরা বলেছেন, যে ১১টি নথির ওপর নির্ভর করে তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেগুলোর প্রতিটিই জাল করা সম্ভব। কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে বিচারপতিরা বলেন, খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ অথচ আসলে জীবিত, এমন ১৫ জনকে আপনারা হাজির করুন। আমরা ব্যবস্থা নেব।

আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে ৮ আগস্টের মধ্যে মামলাকারীদের বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে পেশ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট: ‘মৃত’ নন জীবিত এমন ১৫ জনকে হাজির করলে ব্যবস্থা