টেবিলে থরে থরে সাজানো বই। কেউ জমা দিচ্ছেন, কেউ নিচ্ছেন। পড়া শেষে বাসার সেলফে পড়ে থাকা বই দিয়েও নিচ্ছেন আরেকটি পছন্দের বই। সংগ্রহ করা যাচ্ছে প্রিয় লেখকের প্রিয় বইটি। সঙ্গে আছে একাডেমিক ও ম্যাগাজিন সেকশন থেকে অফুরন্ত বই বিনিময়ের সুযোগ। কেবল বই দিয়েই বই বিনিময়, পুরো দিনটিই ছিল বই বিনিময়ের।

টাঙ্গাইলে প্রথমবারের মতো ‘বই বিনিময়’ উৎসবের আয়োজন করে ’বাতিঘর আদর্শ পাঠাগার’ নামের একটি সংগঠন। 

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে টাঙ্গাইল শহরের প্রাণকেন্দ্র কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে শুরু হয় এ উৎসব। শেষ হবে বিকাল ৫টায়। উৎসব শুরুর পর থেকেই ব্যতিক্রমী এ বই বিনিময়ে বইপ্রেমী তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের ব্যাপক সমাগম লক্ষ্য করা যায়। 

অনুষ্ঠান উদ্বোধনের শুরুতেই কুরআন তেলাওয়াত এবং গীতা পাঠ ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন লেখক ও গবেষক অধ্যাপক বাদল মাহমুদ, লেখক ও গবেষক ড.

আলী রেজা, অধ্যাপক আলীম আল রাজী ও প্রাবন্ধিক জহুরুল হক বুলবুল প্রমুখ।

‘বই হোক বিনিময়, বই জীবনের কথা কয়’ স্লোগানে বইকে মানুষের কাছে আরও সহজলভ্য করে তোলা ও বই পড়ার অভ্যাস বাড়াতে অনুষ্ঠিত হয়েছে বই বিনিময় উৎসবটি। 

উৎসবে ছিল বইয়ের ছয়টি স্টল এবং দুটি রেজিস্ট্রেশন বুথ। ছয়টি স্টলে বিভিন্ন ক্যাটাগরির বই বিনামূল্যে বিনিময় করা হয়েছে। উৎসবের পক্ষ থেকে সংগ্রহ করে রাখা হয় এক হাজারের বেশি বই। সারা দিন প্রায় তিন হাজার বই বিনিময় হয়। 

উৎসবে উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, গল্পগ্রন্থসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রায় সহস্রাধিক বই টেবিলে সাজিয়ে রেখেছিলেন স্বেচ্ছাসেবকরা। বইগুলোর পরিবর্তে পাঠকরা তাদের ঘরে পড়ে থাকা বা সাজিয়ে রাখা বইটি বদলে অপঠিত বই নিয়েছেন, এটাই হচ্ছে বই বিনিময়। 

শিক্ষা ক্ষেত্রে সহায়ক হবে এমন বইয়ের খোঁজও করেছেন অনেকে। হাজারো বইয়ের ভিড়ে পছন্দের বইটি খুঁজে পেতে একজন বইপ্রেমীর দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, লেখকসহ সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে উৎসবটি পরিণত হয়েছিল মিলনমেলায়।

বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আদিবা রহমান বই বিনিময় করতে এসে বলেন, ‘‘ছোট থেকেই বই পড়তে ভালো লাগে। তাই আমার কাছে থাকা বই পড়া শেষে নতুন বই পড়ার আগ্রহ থেকে বই বিনিময় করতে এসেছি। এই উদ্যোগটা অবশ্যই প্রশংসনীয় এবং আমাদের মতো পাঠকেরা খুব উপকৃত হয়।’’

সরকারি সাদত কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘আমার বন্ধু ফেসবুকের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বই বিনিময় উৎসবে। তাই ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি অনুষ্ঠান দেখতে। এটা ব্যতিক্রম আয়োজন, খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে।”

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল-আমিন বলেন, ‘‘পড়া বই ঘরে না রেখে নতুন কিছু জানার আশায় বই বিনিময় করতে পেরে ভালো লাগছে। কারণ এতে নতুন বই পড়তে টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে না। এরকম আয়োজন আরো হওয়া প্রয়োজন।”

বাতিঘর আদর্শ পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা ও বই বিনিময় উৎসবের আয়োজক মো. কামরুজ্জামান বলেন, “বইকে পাঠকের কাছে সহজ করতে আমাদের এই উদ্যোগ যা থেকে নতুন প্রজন্মের পাঠক তৈরি হবে। এতে তরুণ ও কিশোররা স্মার্টফোন বিমুখ হয়ে বই পড়ার দিকে ধাবিত হবে।”

অর্থ ব্যয় করে নতুন বই কেনার চেয়ে পুরোনো বই বিনিময়ের এই উৎসব পাঠের অভ্যাস বাড়াবে। তাই এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন টাঙ্গাইলবাসী।

ঢাকা/কাওছার/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বই ব ন ম অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক

স্বয়ংক্রিয় সড়কবাতি, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, সোলার সিস্টেম—সব মিলিয়ে একটি স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে চায় আরাফাত বিন আজম। চট্টগ্রামের নেভি অ্যাঙ্কোরেজ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির এই খুদে শিক্ষার্থী ছোট থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী। বিজ্ঞান উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য নিজেই শিক্ষকের কাছে গিয়ে নিজের পরিকল্পনা জানায়। পরিবারের পাশাপাশি স্কুলও তাকে সমর্থন দিয়েছে। এরপর নিজের শিক্ষকের সঙ্গেই সে বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা বিজ্ঞান উৎসবের জাতীয় পর্বে অংশ নেয়।

আজ শুক্রবার তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত হলো বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা বিজ্ঞান উৎসবের জাতীয় পর্ব। রাজধানীর সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে দিনব্যাপী চলে এ উৎসব।

চট্টগ্রাম থেকে আরাফাতকে ঢাকার উৎসবে নিয়ে এসেছেন তার স্কুলের শিক্ষক তৌহিদুজ্জামান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্কুল থেকে এ ধরনের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে উৎসাহিত করা হয়। এসব উৎসব শিক্ষার্থীদের চোখ ও মন খুলে দেয়। সবাই বিজয়ী হবে না ঠিকই; কিন্তু তাদের যে প্রচেষ্টা, এটাই অনেক।

বিজ্ঞান উৎসবকে শুভকামনা জানিয়ে সকালে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করে রোবট নাও। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে আয়োজনের সূচনা করেন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার লিও জেমস পেরেরা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লাফিফা জামাল, বিকাশ লিমিটেডের ইভিপি এবং রেগুলেটরি অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের প্রধান হুমায়ুন কবির, অ্যাসোসিয়েশন ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ফারজানা আলম, কথাসাহিত্যিক ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক এবং বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।

বিজ্ঞান উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল প্রজেক্ট প্রদর্শনী। খুদে বিজ্ঞানীরা হাজির হয় নিজেদের উদ্ভাবন নিয়ে। বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) যে জোয়ার চলছে, তার কিছু নমুনা দেখা গেল এবারের বিজ্ঞান উৎসবে।

বিজ্ঞান উৎসবের জাতীয় পর্বে অতিথিদের সঙ্গে প্রজেক্ট ও কুইজ বিজয়ীরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • কে হবে নারী বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন
  • ভারত নাকি দক্ষিণ আফ্রিকা, কে হবে নতুন নারী বিশ্বকাপ চ‌্যাম্পিয়ন
  • বিশ্বকাপ ফাইনালের প্রতি টিকিটের দাম দেড় লাখ টাকার বেশি
  • গোল্ডেন বুট হাতে এমবাপ্পে বললেন, রিয়ালে আরও বহু বছর থাকতে চাই
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক
  • সব মাধ্যমে কাজ করতে চান জৌপারী