ব্যালন ডি’অর বয়কটের কারণ জানালেন ভিনি
Published: 4th, March 2025 GMT
ব্যালন ডি’অর বিতর্ক এখনো পিছু ছাড়েনি। গতবার এই পুরস্কার নিয়ে ফুটবলবিশ্বে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে অনেকে ব্যালন ডি’অরের অন্যতম দাবিদার মনে করলেও শেষ পর্যন্ত পুরস্কার উঠেছিল ম্যানচেস্টার সিটির মিডফিল্ডার রদ্রির হাতে। রিয়াল মাদ্রিদ এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং ফ্রান্স ফুটবলের আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠান বয়কট করে। এবার ব্যক্তিগতভাবে এই বিষয়ে মুখ খুললেন ভিনিসিয়ুস। জানালেন, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত তার একার ছিল না, বরং ক্লাবের নির্দেশেই তিনি প্যারিসে যাননি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যালন ডি’অর বিতর্ক নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন ব্রাজিলিয়ান তারকা। অনুষ্ঠানে না যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ক্লাব আমাকে যা করতে বলেছে, আমি তাই করেছি। তারা মাদ্রিদে থাকতে বলেছে, তাই আমি সেটাই করেছি। এতে কোনো সমস্যা নেই। এখন আমরা ভবিষ্যতের দিকে তাকাচ্ছি।’
ব্যালন ডি’অরের দৌড়ে শেষ পর্যন্ত ছিলেন ভিনিসিয়ুস, তবে পুরস্কার না পাওয়ায় কোনো আক্ষেপ নেই বলে জানান তিনি। ‘আমি কখনো ব্যালন ডি’অর জেতার স্বপ্ন দেখিনি। তবে যখন এতটা কাছে চলে আসেন, তখন সেটা জেতার ইচ্ছা থাকেই। কিন্তু আমার সামনে আরও অনেক সুযোগ আছে। এই ক্লাবের হয়ে আমি আরও বেশি ট্রফি জিততে চাই, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছি, আরও জেতার জন্য এখানে আছি’, বলেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
শুধু ট্রফি জয় নয়, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যের কথাও জানান তিনি। ‘আমি এখানে ইতিহাস গড়তে এসেছি। ক্লাব ও প্রেসিডেন্ট আমাকে যা দিয়েছে, সেটার প্রতিদান দিতে চাই। আরও গোল করতে চাই, আরও বেশি ম্যাচ খেলতে চাই। জয়ের স্বাদ পেয়েছি, এখন আমার ইতিহাস লেখা শুরু হয়েছে। আমি আরও চাই’, বলেন ভিনিসিয়ুস।
এখন তার নজর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের দিকে। ডার্বি ম্যাচ নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এটা দারুণ এক ম্যাচ হতে যাচ্ছে। আমরা চাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ডার্বি হোক। মৌসুমজুড়ে এই বড় ম্যাচগুলোর জন্য অপেক্ষা করি, বিশেষ করে চ্যাম্পিয়নস লিগে। তাই ম্যাচটি নিয়ে আমি রোমাঞ্চিত।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।