নির্বাচনের জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মানসিক প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আগের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব নয়– এভাবে কথাটি বলিনি। নির্বাচন রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করবে। যদি রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারি, কাঙ্ক্ষিত সময়েই গণপরিষদ ও সংসদ নির্বাচন সম্ভব। নির্বাচনে যাওয়ার আগে দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম এবং সংস্কারে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চাই। 

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাংলামটরে দলীয় কার্যালয়ে এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সভার পর এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সরকারের উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দলের দায়িত্ব নেওয়া নাহিদ ইসলাম। 
বিভিন্ন স্থানে সমন্বয়ক পরিচয়ে অপকর্ম হচ্ছে– এই অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, সমন্বয়ক পদ এখন কার্যকর নয়। এ পরিচয় কেউ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
সূত্র জানিয়েছে, নারী নেতারা সভায় জানান, তারা বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামায়াতসহ সব পক্ষের সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। শীর্ষ নেতারা জানান, এ ইস্যুতে নারী নেতাদের পাশে থাকবে দল। রোজার পর দেশজুড়ে সংগঠনের বিস্তারের কাজ শুরু হবে।

রয়টার্স আগের দিন জানিয়েছিল, ডিসেম্বরে নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মনে করেন নাহিদ ইসলাম। নাহিদ গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘এভাবে কথাটা বলিনি। বলেছিলাম, আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি, এমন নাজুক অবস্থায় নির্বাচন করা কঠিন হবে। পুলিশ প্রশাসনের সুষ্ঠু নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিন নেই। অবশ্যই নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি করতে হবে।’ 
শেখ হাসিনার পতন ঘটনানো ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে এক দফার ঘোষণা করা নাহিদ বলেন, রাজনৈতিক ঐকমত্যে সংস্কারের জুলাই সনদ সই হওয়ার কথা। জনগণ দেখতে পাবে কোন রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে বা বিপক্ষে। ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। তার আগে কীভাবে নির্বাচনের দিকে যাব? 
নারীর প্রতি নিপীড়নের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং এনসিপির নারী সদস্যদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, বুলিং চলছে। ফ্যাসিবাদীর কর্মীরা অনেক বেশি যুক্ত হচ্ছেন এর সঙ্গে। সরকারের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এনসিপির কার্যক্রম বিষয়ে নাহিদ বলেন, নিবন্ধনের শর্ত পূরণে মনোযোগী হচ্ছি। তৃণমূলে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছি। রোজার পর পুরোদমে শুরু করব। 

দাতারা ক্ষতির শিকার হবে না, তার নিশ্চয়তা দিতে হবে
ধনীদের কাছ থেকে টাকা পাচ্ছে এনসিপি– নাহিদের সাক্ষাৎকারের এ তথ্য জানিয়েছিল রয়টার্স। নাহিদ ইসলাম এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, সচ্ছল ব্যক্তি, শুভাকাঙ্ক্ষীরা সহযোগিতা করে। আমরা ক্রাউড ফান্ডিংয়ের দিকে যাচ্ছি। এর মাধ্যমে দলের কার্যালয় এবং ইলেকশন তহবিল তৈরি করা হবে। আর্থিক সহায়তার জন্য রিকশাওয়ালা থেকে সমাজের সব শ্রেণির মানুষের কাছে যাব। এনসিপি জনগণের দল, জনগণের টাকায় পরিচালিত হবে। ফিন্যান্সিয়াল পলিসি টিম গঠন হয়েছে। ডায়াসপোরা টিম এবং দেশীয় বিভিন্ন অর্থনীতিবিদের সঙ্গে কথা বলছি।
রাজনৈতিক দলের আর্থিক সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, কারা সহযোগিতা করছে, নাম প্রকাশ করলে তারা ক্ষতির শিকার হবে না– এ নিশ্চয়তা সরকার থেকে দিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে কারা আর্থিক সহায়তা করছে, কোন খাতে ব্যয় হচ্ছে, তা প্রকাশের সংস্কৃতি আসুক। এককভাবে এই সংস্কৃতি তৈরি এনসিপির পক্ষে সম্ভব নয়। 

নির্বাচন পেছানোর ভয় কেন করে: সারজিস আলম 
‘শেখ হাসিনার বিচারের আগে নির্বাচনের কথা কেউ যেন ভুলেও না তোলে’– এ বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, এখনও মা-বাবারা লাশ খুঁজে বেড়াচ্ছে। জানি না, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনকেন্দ্রিক কথা এলেই, কেন তারা নির্বাচন পেছানোর ভয় করে! একটা নির্বাচন হবে, আমরা দ্রুত ক্ষমতায় যাব– এই চিন্তা কেন কাজ করে। 
সারজিস বলেন, নির্বাচনে সবাইকে শহীদ পরিবার, আহত আন্দোলনের যোদ্ধাদের কাছে যেতে হবে। তখন যেন বলতে পারি, ঐক্যবদ্ধভাবে খুনি হাসিনার বিচার নিশ্চিত করে এসেছি। বাকিদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। এর সঙ্গে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার যে সম্পর্ক দেখানো হচ্ছে, তা সেভাবে সম্পর্কিত নয়। 

দুটি কর্মসূচি ঘোষণা 
সংবাদ সম্মেলনে সদস্য আখতার হোসেন বলেন, প্রথম কর্মসূচি হিসেবে অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার এবং আহতদের সম্মানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী সোমবার ইফতার মাহফিল হবে। পরদিন মঙ্গলবার এনসিপির ইফতার মাহফিল হবে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে। 
সংবাদ সম্মেলনে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প ন হ দ ইসল ম এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে ৩৫ পুলিশ সদস্যের পোশাকে থাকবে ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’

কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩৫ জন পুলিশ সদস্যের পোশাকের সঙ্গে ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’ সংযুক্ত করা হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির এই ক্যামেরার মাধ্যমে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের অডিও ও ভিডিও কার্যক্রম রেকর্ড করা যাবে।

আজ বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিভিন্ন থানা ও ইউনিটের ৩৫ জন পুলিশ সদস্যের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব ক্যামেরা হস্তান্তর করা হয়। বডি ওর্ন ক্যামেরা বিতরণ করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দিন শাহীন।

এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা জনগণের পুলিশ হতে চাই। বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা, জনগণের আস্থা অর্জন এবং পুলিশের পেশাগত আচরণ পর্যবেক্ষণ সহজ হবে। পর্যটননির্ভর শহর কক্সবাজারে প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপত্তাব্যবস্থার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।’

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে থানা ও ফাঁড়ির টহল দল, ট্রাফিক ইউনিট, ডিবি এবং বিশেষ অভিযানে অংশ নেওয়া সদস্যদের মধ্যে এই ক্যামেরা বিতরণ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ইউনিটেও এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করা হবে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বডি ওর্ন ক্যামেরার রেকর্ড সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় সার্ভার ও সফটওয়্যার সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ক্যামেরা ব্যবহারে পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এই উদ্যোগ পুলিশের পেশাদারত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি মিথ্যা অভিযোগ থেকে সুরক্ষা, তদন্তে স্বচ্ছতা এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভবিষ্যতে কেউ স্বৈরাচার হলে পরিণতি শেখ হাসিনার মতো হবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
  • প্রতিনিধিত্ব করার ‘প্রতীকহীন’ সুযোগ 
  • ১০ হাজার বছর আগের এক নারীর প্রতিকৃতি বানালেন গবেষকেরা
  • সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে: তারেক রহমান
  • বিএনপি নেতাকর্মীদের জনবান্ধব হতে হবে : সাখাওয়াত
  • সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
  • ট্রাম্পের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন ৪০ শতাংশে ঠেকেছে
  • কক্সবাজারে ৩৫ পুলিশ সদস্যের পোশাকে থাকবে ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’
  • জাতিসংঘে সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক, ফিলিস্তিন ইস্যুতে উদ্বেগ
  • মনোনয়ন নিয়ে চিন্তা করবেন না, জনগণের পাশে থাকুন : আজাদ