ধর্ষণের অভিযোগে গণধোলাই: অভিযুক্ত বললেন ‘মাথা ঠিক ছিল না’
Published: 9th, March 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে আট বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ ও সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণের অভিযোগ উঠেছে আরমান মিয়া (৩৫) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা আরমান মিয়াকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
শনিবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলার বরমী ইউনিয়নের দরগারচালা গ্রামের গভীর শালবনের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত আরমান ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের শামসুল হকের ছেলে। তিনি দরগারচালা গ্রামের মাঝেরটেক এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরের পর থেকে শিশুটির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বনের ভেতর কান্নার আওয়াজ শুনতে পায় স্থানীয়রা। পরে বনের ভেতর গিয়ে শিশুসহ আরমানকে দেখতে পায় তারা। এ সময় শিশুটি বিস্তারিত বললে আরমানের মোবাইল চেক করে আপত্তিকর ভিডিও পাওয়া যায়। পরে এলাকাবাসী আরমানকে গণধোলাই দিয়ে থানায় খবর দেয়।
আরমান ক্ষুব্ধ জনতাকে বলেন, ‘‘ধর্ষণের পর আমি নিজেই ভিডিও ধারণ করেছি। আমাকে কয়েকজন মিলে ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করিয়েছে। এজন্য আমার মাথা ঠিক ছিল না।’’
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম আকতার বলেন, ‘‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে অভিযুক্ত ধর্ষককে। মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও উদ্ধার ও ফোনটি জব্দ করা হয়েছে।’’
ঢাকা/রফিক/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক
ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।
চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।
স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।
সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।
সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।